ভারতে ইলেকট্রিক স্কুটার নিয়ে আসায় জাপানি টু-হুইলার ব্র্যান্ড ইয়ামাহা (Yamaha)-র মধ্যে যথেষ্ট গড়িমসি লক্ষ্যণীয়। প্রতিপক্ষ সংস্থাগুলি এ ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে গেলেও ইয়ামাহার যেন কোনো হেলদোল নেই। তবে ২০২২-এর প্রারম্ভে এদেশে আগামী তিন বছরে কোন কোন ইলেকট্রিক স্কুটার ও বাইক লঞ্চ হবে তার একটি রূপরেখা প্রস্তুত করেছিল তারা। আন্তর্জাতিক বাজারে অতি জনপ্রিয় Yamaha Neo’s ভারতে ইলেকট্রিক স্কুটারের সর্বপ্রথম মডেল হিসেবে হাজির করা হতে পারে বলে জল্পনা দানা বেঁধেছে। ইতিমধ্যেই ভারতে সংস্থার ডিলারদের একটি অনুষ্ঠানে স্কুটারটি উন্মোচিত করা হয়েছিল। যেই প্রসঙ্গে সংস্থার ভারতীয় শাখার চেয়ারম্যান ইশিন চিহানা জানিয়েছেন, লঞ্চের আগে স্কুটারটির কার্যক্ষমতা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে বর্তমানে। আগামী তিন বছরের মধ্যেই সেটি বাজারে লঞ্চ করা হবে।
সূত্রের খবর, বিদেশে তৈরি হওয়া স্কুটার এদেশে আমদানি করা হবে, নাকি, বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে ভারতে তা জুড়ে বিক্রি করা হবে, নাকি, ভারতের মাটিতেই স্কুটারটি তৈরি হবে সেই নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত সংস্থা। তবে সংস্থা জানিয়েছে তারা একটি ভরসাযোগ্য ইলেকট্রিক স্কুটার এদেশে নিয়ে আসবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে এদেশে সংস্থার ৩টি কারখানায় ৯০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে স্কুটার ও মোটরসাইকেল তৈরি করা হয়। যেগুলি হরিয়ানার ফরিদাবাদ, উত্তর প্রদেশের সুরজপুর এবং তামিলনাড়ুর কাঞ্জিপুরামে অবস্থিত। ভারত থেকে আবার ৩০টি দেশে টু-হুইলার রপ্তানি করে ইয়ামাহা।
বর্তমানে Neo’s ইউরোপের বাজারে এবং EC-05 ও EMF বৈদিক ই-স্কুটার দুটি তাইওয়ানে বিক্রি করে ইয়ামাহা। ইকো মোডে Neo’s-র রেঞ্জ ৩৮.৫ কিমি, স্ট্যান্ডার্ড মোডে সর্বোচ্চ গতিবেগ ৪০ কিমি/ঘন্টা। তবে একটি অতিরিক্ত ব্যাটারি প্যাকের মাধ্যমে এর রেঞ্জ ৬৮ কিমি পর্যন্ত বাড়ানো যায়। ইউরোপের বাজারে স্কুটারটি যে দামে বিক্রি হয় তা ভারতীয় মূল্যে দাঁড়ায় প্রায় ২.৯৮ লাখ টাকা। যা দেখে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে ফিচারের অনুযায়ী দাম অনেকটাই বেশি। এমনকি যদি এর স্থানীয়করণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোও হয়, তাহলেও প্রতিপক্ষদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে এটি আদৌ পেরে উঠবে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
Neo’s-এর সমান ফিচারের ই-স্কুটার Hero Optima CX এখন ৭৭,৪৯০ টাকায় বিকোয়। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ৪৫ কিমি/ঘন্টা এবং সর্বোচ্চ রেঞ্জ ১৪০ কিমি। দুদিক থেকেই Neo’s-কে চ্যালেঞ্জ জানায় Optima CX। আবার, ৭৩,৯৯৯ টাকা মূল্যের Ampere Magnus EX-এর রেঞ্জ ও সর্বোচ্চ গতিবেগ যথাক্রমে ১২১ কিমি ও ৫০ কিমি/ঘন্টা। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এক্ষেত্রে ইয়ামাহার সবচেয়ে উচিত হবে যদি তারা কেবলমাত্র ভারতের জন্য নতুন একটি স্কুটার নির্মাণ করে। এর ফলে দাম ও রেঞ্জের দিক থেকে সেটি Ola S1, Ather 450X ও TVS iQube-এর সাথে টক্কর নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে ইয়ামাহা কোন পথ বেছে নেবে, তা সময়ই জবাব দেবে।