Laser Internet: এয়ারটেল ও গুগল আনছে লেজার ইন্টারনেট, কড়া টক্কর হবে স্টারলিংকের সাথে

Google-এর প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেট (Alphabet ) দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গ্রামাঞ্চলে হাই স্পীড ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। গুগলের বেলুন ইন্টারনেটও এই পরিকল্পনার একটি অংশ ছিল,…

Google-এর প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেট (Alphabet ) দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গ্রামাঞ্চলে হাই স্পীড ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। গুগলের বেলুন ইন্টারনেটও এই পরিকল্পনার একটি অংশ ছিল, কিন্তু সেটি সফল হয়নি। তবে এখন গুগল লেজার ইন্টারনেটের (Laser Internet) মাধ্যমে কাজ বাস্তবায়িত করতে চায়। আর এর জন্য গুগল ভারতী এয়ারটেলের (Bharti Airtel) সাথে অংশীদারিত্বও করে ফেলেছে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘তারা’ (Taara)। তবে প্রজেক্টটি গুগলের ইনোভেশন ল্যাব “X” এর অংশ হওয়ায় এটি “Moonshot Factory” নামেও পরিচিত।

এয়ারটেল এবং “তারা”র আধিকারিকরা সংবাদ মাধ্যম রাইটার্সকে জানিয়েছে যে, তারা ভারতে নতুন লেজার ইন্টারনেট প্রযুক্তির আনতে চলেছে। তবে এই প্রজেক্টে কত টাকা খরচা হতে পারে এই প্রসঙ্গে তারা কিছু জানাননি। “তারা” প্রজেক্টের মাধ্যমে এখনই ১৩টি দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কেনিয়া ও ফিজির মতো দেশগুলিও আছে। সংস্থা দাবি করছে যে, এই প্রজেক্টের লেজার ইন্টারনেট টেকনোলজি অনেক কম খরচে হাই স্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে। উল্লেখ্য, গুগলের এই ল্যাব এক্স ২০১৬ সালে শুরু করা হয়েছিল।

Laser Internet কি

লেজার ইন্টারনেট হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেটির পরিষেবা বিম লাইটের মাধ্যমে দেওয়া হয়ে থাকে। এর জন্য আলাদা আলাদা জায়গায় একটি মেশিন লাগানো হয়। যার আকার ট্রাফিক লাইটের মতন হয়ে থাকে। আর এই মেশিন গুলির দ্বারাই কোনো তার ছাড়া ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে মেশিন গুলি ইন্সটল করতে হয়, তবেই এই পরিষেবা পাওয়া যায়। আর এই প্রযুক্তির সবথেকে বড় বিশেষত্ব হলো দুটো মেশিনের মধ্যবর্তী স্থানে কোনো তারের প্রয়োজন পড়ে না এবং অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করার পরেও লেজার ইন্টারনেটের স্পীড কম হয় না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লেজার ইন্টারনেটের ল্যাটেন্সি প্রায় শূন্যের সমান হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আপনি যখন গেম খেলেন বা ভিডিও দেখেন, মাঝে মাঝে ইন্টারনেট স্পীড কিছুটা স্লো হয়ে যায়। এমতাবস্থায় প্রথমে গুলি চলে এবং অনেকক্ষণ পর গুলির আওয়াজ শোনা যায়। আবার অনলাইনে সিনেমা দেখার সময় দৃশ্য শেষ হওয়ার পর সংলাপ শোনা যায়। আর এই সব ঘটে ল্যান্টেসির কারণে। সার্ভার থেকে একটি ওয়েবপেজে আসতে যতটা সময় লাগে, সেই সময়টিকেই ল্যাটেন্সি বলা হয়। আর এই ল‌্যাটেন্সি যত কম হবে, ইন্টারনেটের স্পীড তত বেশি পাওয়া যাবে। ভিডিও বা গেম আটকে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। লেজার ইন্টারনেট স্যাটেলাইট, ফাইবার এবং মোবাইল ডেটার চেয়ে অনেক দ্রুত। লেজার ইন্টারনেটের গতি ২০ জিবিপিএস, আর এই গতি ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত একই থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই গতি আবার বাইডাইরেকশনাল ভাবেও কাজ করে থাকে।

লেজার ইন্টারনেট স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেটের থেকে কতটা আলাদা

Google এবং Airtel এর লেজার ইন্টারনেট সরাসরি ইলন মাস্কের কোম্পানি স্টারলিঙ্কের (Starlink) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেমেছে। তবে স্টারলিঙ্কের (Starlink) ইন্টারনেট কাজ করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এবং গুগলের Taara প্রজেক্টের ইন্টারনেট কাজ করে বিম লাইটের মাধ্যমে। কিন্তু উভয় প্রযুক্তিতেই মেশিন ইনস্টল করতে হয়। লেজার ইন্টারনেটে দুই জায়গায় দুটি লেজার মেশিন বসানো হয়, যার মধ্যে মানুষ ইন্টারনেট পরিষেবা পায়। আর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আপনার বাড়িতে ইনস্টল করা ডিটিএইচের মতো কাজ করে। স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের জন্যও, ডিটিএইচের ছাতার মতো একটি মেশিন ইনস্টল করতে হয়, যার মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়। স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল ও গ্রামে দ্রুত ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।