রেকর্ড গড়লো Jio 5G, কলকাতায় প্রতি সেকেন্ডে ডাউনলোড স্পিড প্রায় ৫০০ এমবি

চলতি মাসের গোড়ার দিকেই দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা এবং বারাণসী – দেশের এই চারটি শহরে 5G পরিষেবা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে Reliance Jio। দেশের শীর্ষস্থানীয়…

চলতি মাসের গোড়ার দিকেই দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা এবং বারাণসী – দেশের এই চারটি শহরে 5G পরিষেবা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে Reliance Jio। দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম কোম্পানিটির এই স্ট্যান্ডঅ্যালোন (SA) 5G প্রযুক্তির নাম ‘ট্রু ৫জি’ (True 5G)। সংস্থাটি উক্ত শহরগুলির বাসিন্দাদের জন্য জিও ৫জি ওয়েলকাম অফার (Jio 5G Welcome Offer) নিয়ে এসেছে, যার অধীনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো 5G প্ল্যান লঞ্চ না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহারকারীরা ১ জিবিপিএসের চাইতেও বেশি স্পিডে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আনলিমিটেড 5G ডেটা পাবেন বলে দাবি করেছে Jio। তবে সত্যি সত্যিই কি পাওয়া যাচ্ছে এই ‘রকেটের’ গতির নেট স্পিড? আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্পিড টেস্টার ওকলা (Ookla)-র তরফ থেকে প্রাপ্ত সাম্প্রতিক রিপোর্টে মিলল এর সাথে সম্পর্কিত বিশদ তথ্য।

দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই ও বারাণসীতে Jio-র 5G স্পিডের হালহকিকত জানালো Ookla

ওকলার রিপোর্ট অনুসারে, কলকাতায় জিও ৪৮২.০২ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড সরবরাহ করেছে, যাকে মাঝারি মানের বলা চলে। আবার, মুম্বাই এবং বারাণসীতে যথাক্রমে ৫১৫.৩৮ এমবিপিএস এবং ৪৮৫.২২ এমবিপিএস স্পিড প্রত্যক্ষ করা গেছে। তবে এই তিনটি শহরের চাইতে বেশি ডাউনলোড স্পিড পেয়েছেন দিল্লির বাসিন্দারা, কারণ সেখানে কোম্পানিটি ৫৯৮.৫৮ এমবিপিএস স্পিড অফার করেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে বলে রাখি যে, বর্তমানে উপরিউক্ত শহরগুলিতে বিটা ট্রায়াল লঞ্চ করেছে রিলায়েন্স জিও, যার ফলে উক্ত চারটি শহরের সকল বাসিন্দারা এই মুহূর্তে সংস্থার ৫জি পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন না। তাই সময়ের সাথে সাথে ব্যবহারকারীদের সংখ্যা যখন বাড়তে থাকবে, তখন এই স্পিড পাওয়া যাবে কিনা সেটা সময় বলবে।

4G সিমেই পাওয়া যাবে Jio-র 5G সার্ভিস

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, রিলায়েন্স জিও স্ট্যান্ডঅ্যালোন (স্বতন্ত্র) ৫জি প্রযুক্তি স্থাপন করছে; অর্থাৎ সংস্থার নেটওয়ার্কটি একটি ৫জি কোরে চলবে, এবং এটি বিদ্যমান এলটিই (LTE) কোরের উপর নির্ভর করবে না। সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে যে, উক্ত চারটি শহরে বসবাসকারী যে সমস্ত জিও ব্যবহারকারীদের কাছে ৫জি হ্যান্ডসেট রয়েছে, তারা জিও ৫জি ওয়েলকাম অফারে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপগ্রেড হয়ে যাবেন, এবং সম্পূর্ণ নিখরচায় নিজেদের ৪জি (4G) সিম এবং বিদ্যমান রিচার্জ প্ল্যান মারফতই সংস্থার ঝড়ের গতির নেট পরিষেবা ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন। তবে এই মুহূর্তে এন২৮ (n28), এন৭৮ (n78) এবং এন২৫৮ (n258) ব্যান্ডে 5G পরিষেবা পাচ্ছেন জিও ব্যবহারকারীরা। সেক্ষেত্রে সমস্ত ৫জি ফোনেই যাতে জিও ট্রু ৫জি সার্ভিস ব্যবহার করা যায়, তার জন্য সংস্থাটি ইতিমধ্যেই হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে।

অদূর ভবিষ্যতে ১ জিবিপিএসের চাইতেও বেশি স্পিড পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল

উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালে 4G নেটওয়ার্ক এনে সারা দেশে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন Jio। তাই এবার গোটা দেশজুড়ে সংস্থার 5G পরিষেবা উপলব্ধ হওয়ার আগেই Jio যে অবশ্যই সমস্ত দেশবাসীকে ঝড়ের গতির স্পিড অফার করবে, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই অনেক গ্রাহকই ১০০% নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন। আর সত্যি সত্যিই দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অপারেটরটি যে ১জিবিপিএসের চাইতেও বেশি স্পিড প্রদান করতে সক্ষম, তার এক ঝলকও তারা দেখিয়েছিল চলতি মাসের শুরুতে আয়োজিত হওয়া ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস ২০২২ ইভেন্টে। এই ইভেন্টে ৩.৫ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ৫জি নেটওয়ার্কের স্পিড টেস্ট করে সংস্থার এক কর্মী জানিয়েছিলেন যে, Jio-র 5G নেটওয়ার্ক প্রতিবারই ১.৪ জিবিপিএস থেকে ১.৭ জিবিপিএসের মধ্যে স্পিড প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। আর ওই কর্মীর এই বক্তব্যটি যে প্রকৃতপক্ষেই খাঁটি সত্যি, তা আপনারা নীচের ভিডিওটি দেখলেই অতি অনায়াসে বুঝতে পারবেন –

তাই, সারাদেশে পুরোদমে তথা সাবলীলভাবে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু হয়ে গেলে সংস্থাটি আপামর দেশবাসীকে ১ জিবিপিএসের চাইতেও বেশি স্পিড নিশ্চিতভাবে প্রদান করতে পারবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও আমরা বিশেষজ্ঞদের সাথে একমত নই।