Xiaomi-র পতন শুরু, দুই থেকে নেমে গেল তিনে, Samsung নাকি Apple স্মার্টফোন মার্কেটে এগিয়ে?

একথা আমাদের সকলেরই জানা যে, স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম প্রধান মার্কেট এশিয়া। এর মূল কারণ হল ভারত এবং চীন, কারণ উভয় দেশেই প্রায় ৩ বিলিয়ন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। তাই উক্ত মহাদেশের শীর্ষস্থানটি নিজেদের দখলে রাখতে Xiaomi, Realme, OnePlus, Samsung, Tecno এবং Infinix-এর মতো নামজাদা হ্যান্ডসেট নির্মাতা কোম্পানিগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা হামেশাই চলতে থাকে। সম্প্রতি স্ট্যাটকাউন্টার গ্লোবাল স্ট্যাটস (StatCounter Global Stats) চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির জন্য এশিয়ার মোবাইল ভেন্ডর মার্কেট শেয়ারের উপর তাদের সংগৃহীত ডেটা প্রকাশ করেছে, এবং সেখানে দেখা গিয়েছে যে, Xiaomi-কে টেক্কা দিয়ে এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের শিরোপাটি দখল করেছে বিশ্বখ্যাত টেক জায়েন্ট Apple; অন্যদিকে, শীর্ষস্থানে রয়েছে Samsung।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ায় Xiaomi-র স্মার্টফোন মার্কেট শেয়ারকে টপকে গেল Apple

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২২.২৫ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে স্যামসাং শীর্ষে, অ্যাপল ১৭.১৫ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয়, শাওমি ১৬.১৯ শতাংশ হাসিল করে তৃতীয়, ওপ্পো (Oppo) ১০.৮২ শতাংশ নিয়ে চতুর্থ এবং ভিভো (Vivo) ৯.৭৬ শতাংশ দখল করে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। উল্লেখ্য যে, যেহেতু অ্যাপল এখন এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে, তাই আগামী দিনে শীর্ষস্থানটি দখল করার জন্য সংস্থাটি আরও অনেক কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে নিশ্চিতভাবে আশা করা যেতে পারে। আবার, বহুল জনপ্রিয় টেক কোম্পানি হুয়াওয়ে (Huawei) বর্তমানে এশিয়াতে খুব বেশি একটা স্মার্টফোন লঞ্চ করছে না। তাই এই কোম্পানির স্মার্টফোন প্রেমীরা হালফিলে অ্যান্ড্রয়েড (Android)-এর চেয়ে আইওএস (iOS)-কে বেশি পছন্দ করতে শুরু করেছেন, কারণ হুয়াওয়ের পূর্ববর্তী ইএমইউআই (EMUI) অপারেটিং সিস্টেমের সাথে আইওএসের বেশ খানিকটা মিল রয়েছে। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এর দৌলতে আগামী দিনে এশিয়ায় অ্যাপলের ব্যবসা আরও অধিক পরিমাণে ফুলেফেঁপে উঠবে।

ঠিক কী কারণে এশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান স্মার্টফোন মার্কেট হয়ে উঠতে পেরেছে?

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, একাধিক যুক্তিসংগত কারণের সৌজন্যে এশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান স্মার্টফোন মার্কেট হয়ে উঠতে পেরেছে। প্রথমত, বাজার দখলের লড়াইয়ে প্রখ্যাত স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি প্রায়শই বিভিন্ন রেঞ্জের একাধিক চমকপ্রদ মডেল এশিয়ার বিভিন্ন দেশে লঞ্চ করে। শুধু তাই নয়, সেগুলির প্রমোশনের জন্যও সংস্থাগুলি অহরহ পরিশ্রম করে, এবং এর পাশাপাশি অফলাইন এবং অনলাইন উভয় স্টোর মারফতই হ্যান্ডসেটগুলি খুব সহজে কেনার সুযোগ পান ইউজাররা। উপরন্তু, লঞ্চ হওয়ার পরমুহূর্তেই ডিভাইসগুলিতে আকর্ষণীয় ছাড় দেওয়া হয়, যা গ্রাহকদেরকে ফোনগুলির প্রতি আরও অধিক পরিমাণে আকৃষ্ট করে। উল্লেখ্য যে, বাম্পার ডিসকাউন্টের জন্য স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২০ এফই (Samsung Galaxy S20 FE) এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ (Samsung Galaxy S23) সিরিজের মতো দামি তথা ধামাকাদার স্মার্টফোনগুলিও কিনতে ব্যবহারকারীরা অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে ওঠেন, যার জেরে এশিয়ায় হ্যান্ডসেট নির্মাতা কোম্পানিগুলির ব্যবসা ক্রমশই ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, Xiaomi, Oppo এবং Vivo গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্লোবাল মার্কেটে কোনো ডিভাইস লঞ্চ করেনি। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, দুনিয়ার এক নম্বর স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হয়ে উঠতে গেলে উক্ত কোম্পানিগুলিকে চীনের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের বাজারের দিকেও বেশ ভালোরকমভাবে মনোনিবেশ করতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, চলতি সপ্তাহেই শাওমি বিশ্বব্যাপী বাজারে শাওমি ১৩ সিরিজ (Xiaomi 13 Series) লঞ্চ করেছে। বিনামূল্যে ৬ মাসের গুগল ওয়ান (Google One) সাবস্ক্রিপশন সহ আসা এই ডিভাইসগুলিতে গুগল পিক্সেল ম্যাজিক ইরেজার (Google Pixel Magic Eraser)-এর মতো আরও একাধিক কার্যকর ফিচার মজুত রয়েছে।