আঁটোসাটো সুরক্ষা সহ ফাস্ট পারফরম্যান্স, বিশ্বের প্রথম 64 বিট Android ফোনের গুণ শুনলে চমকে উঠবেন

চলতি মাসের শুরুতে Google ভারত সহ বিশ্ববাজারে তাদের লেটেস্ট Google Pixel 7 সিরিজটি উন্মোচন করেছে। এই সিরিজের অধীনে Pixel 7 এবং Pixel 7 Pro মডেল দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে এসেছে। কোম্পানির সিইও সুন্দর পিচাইয়ের মতে, লঞ্চ হওয়া মাত্রই উক্ত স্মার্টফোনগুলি ইউজারমহলে দুর্দান্ত সাড়া ফেলে দিয়েছে। দুটি 5G ফোনেই Pixel 6 সিরিজ়ের মতো একই ডিজ়াইন চোখে পড়ে, তবে ফিচার ও স্পেসিফিকেশনে অনেক ফারাক রয়েছে, বিশেষ করে চিপসেট তো সম্পূর্ণই আলাদা। Google Pixel 7 সিরিজের ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে টেন্সর জি২ চিপ। এছাড়া, ফোনগুলির ক্যামেরাতেও বিশেষ কিছু পরিবর্তন চোখে পড়বে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, সদ্য লঞ্চ হওয়া এই ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলিই হল প্রথম Android স্মার্টফোন, যা কেবল ৬৪-বিট অ্যাপ্লিকেশন (64-bit apps) সাপোর্ট করবে। এখন নিশ্চয়ই আপনাদের মনে প্রশ্ন আসছে যে, এর ফলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে? আসুন জেনে নিই।

উল্লেখ্য যে, গুগল ২০১৪ সালে ৬৪-বিট সাপোর্ট প্রবর্তন করেছিল, তবে পরবর্তীকালে ২০১৭ সালে সংস্থাটি এই সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি নীতিতে পরিবর্তন করে। টেক জায়েন্টটি গুগল প্লে (Google Play) অ্যাপগুলির জন্য ২০১৯ সাল থেকে ৬৪-বিট সাপোর্ট বাধ্যতামূলক করেছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, এর সুবাদে স্ট্যান্ডার্ড মেমোরির ব্যবহার হ্রাসপ্রাপ্ত হয় এবং সেইসাথে ডিভাইসের কর্মক্ষমতা এবং সিকিউরিটি ফিচার আরও উন্নত হয়। এবং সময়ের সাথে সাথে এর ফলে যে ইউজাররা আরও দারুণভাবে উপকৃত হবেন, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে গুগল। আসুন, ৬৪-বিট অ্যাপ্লিকেশনের সাপোর্ট থাকলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অত্যাধিক ফাস্ট অপারেশন

সমস্ত ৬৪-বিট অ্যাপ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলে, কারণ এগুলির এক্সট্রা রেজিস্টার এবং ইন্সট্রাকশনে অ্যাক্সেস রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ৩২-বিট অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা উপলব্ধ নয়। গুগলের মতে, পিক্সেল ৭ সিরিজের নতুন সিপিইউ ৬৪-বিট কোড চালানোর সময় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ভালো পারফরম্যান্স দেবে।

আরও উন্নত নিরাপত্তা

সমস্ত ৬৪-বিট অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে বড়ো অ্যাড্রেস স্পেস রয়েছে, যা এএসএলআর (ASLR)-এর মতো ডিফেন্সগুলিকে আরও কার্যকর করে তোলে। এর ফলে ইউজারদের অজান্তে অন্য কেউ তাদের ডিভাইসের অ্যাক্সেস পেতে পারে না। ফলে চলতি সময়ে হ্যাকারদের রমরমার যুগে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার ক্ষেত্রে এই ফিচারটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত কার্যকর।

মেমোরির ব্যবহার কম হয়

সাধারণভাবে যে-কোনো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহার করার সময়ই ব্যাকগ্রাউন্ডে বিভিন্ন অ্যাপ চলতে থাকে। গুগলের মতে, ফোনে ৬৪-বিট অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট থাকলে ১৫০ জিবি পর্যন্ত র‍্যাম সাশ্রয় হবে। বলে রাখি, ৩২-বিট অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ডে কোনো অ্যাপ না চললেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিভাইস বেশ কিছুটা র‍্যাম দখল করে নেয়; তবে এবার ৬৪-বিট অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্টে এই মুশকিল আসান হবে।

স্মার্টফোন নির্মাতা সংস্থাগুলি দ্রুত ওএস আপডেট অফার করতে পারবে

গুগলের মতে, ৬৪-বিট-ওনলি ডিভাইস কনফিগারেশনগুলি কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট স্যুট বা সিটিএস (CTS) টেস্টিং টাইমকে অর্ধেক করে দেয়। এর ফলে স্যামসাং (Samsung), শাওমি (Xiaomi), ওয়ানপ্লাস (OnePlus)-এর মতো ওইএম (OEM বা অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার) তাদের ডিভাইসগুলির জন্য আপডেট আরও সহজে এবং খুব দ্রুত রোলআউট করতে পারবে।

ডেভেলপাররা বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক টুলের অ্যাক্সেস পাবেন

ফোনে ৬৪-বিট অ্যাপ সাপোর্ট থাকলে ডেভেলপাররা বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক টুলের অ্যাক্সেস পাবেন, যার সুবাদে তারা কোনো অ্যাপ্লিকেশনের গুণমানকে আরও উন্নত করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, ইউজারদেরকে আরও ভালো অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট অফার করতেও এটি ডেভেলপারদেরকে সহায়তা করবে। গুগল ইতিমধ্যেই ডেভেলপারদেরকে ৬৪-বিট-ওনলি ডিভাইসগুলির জন্য তাদের অ্যাপ্লিকেশন এবং আপডেটগুলির টেস্টিংয়ের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।