ফোন উৎপাদন ও ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট রপ্তানিতে শক্তি বাড়াচ্ছে ভারত, কার্যকরী সরকারের PLI স্কিম?

কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মোদী সরকার ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ নামক একটি মিশন গ্রহণ করেছে, যার প্রেক্ষিতে বিগত কয়েক বছরে একাধিক উন্নয়নশীল পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে এবং এদেশের নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িয়ে চলেছে আধুনিক প্রযুক্তি। তবে শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার নয়, বরঞ্চ এর বিকাশেও সরকার তৎপর। সেই কারণে ভারতকে ডিজিটাল হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এমনকি এর জন্য ইলেকট্রনিক আইটেম, বিশেষ করে মোবাইল বা স্মার্টফোনের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে; কোম্পানিগুলিকে উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়া ও সাহায্য করার জন্য সরকার কর্তৃক চালু হয়েছে প্রোডাকশন লিঙ্কড ইন্সেন্টিভ বা PLI (পিএলআই) স্কিমও। সেক্ষেত্রে এই স্কিম চালু হওয়ার দু বছর পর এখন, এর ব্যাপক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। একদিকে যেমন PLI স্কিমের সাহায্যে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলি নতুন উদ্যমে ব্যবসায় জোর দিয়েছে, ঠিক তেমনি এর সাহায্যে মোবাইল ফোনের উৎপাদন বেড়েছে।

মোবাইল ফোন উৎপাদনে শক্তি বেড়েছে ভারতের

সম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষে বিশ্বব্যাপীমোবাইল ফোনের উৎপাদন ২৭.১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতের মোবাইল ফোন প্রোডাকশন বেড়েছে ১২৬.১১% যা ২০২০-২১ অর্থবর্ষের চেয়ে রেকর্ড বৃদ্ধি। তবে শুধু উৎপাদন নয়, একইসাথে ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট রপ্তানির ক্ষেত্রেও ভারত বেশ লাভবান হচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের কথা বললে, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ এপ্রিল-জুন মাসে (মার্চে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হওয়ার পরের সময় সময় থেকে অর্থবর্ষের হিসেব হয়) মোট প্রোডাক্ট এক্সপোর্ট ২৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও, ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রথম প্রান্তিকে গড় বৃদ্ধির হার ছিল ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে গত মে মাসে ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট রপ্তানি হয়েছে ৪৭.৩৭ শতাংশ এবং জুনে রপ্তানির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০.৭০ শতাংশে।

আবার, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে রপ্তানি মে মাসে ১২ শতাংশ এবং জুনে ৩.০২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রকের মতে, গত অর্থবর্ষে ১,১৬,৮৯৪ কোটি টাকার ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট রপ্তানি হয়েছিল, যা ২০২০-২১ আর্থিক বছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি। বলতে গেলে প্রতি মাসেই ইলেকট্রনিক পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ক্রমশ কার্যকরী হচ্ছে PLI স্কিম

যারা জানেন না তাদের বলে রাখি, গত ২০২০ সালের মার্চ মাসে ভারত সরকার পিএলআই স্কিম চালু করেছিল। বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স আইটেম প্রস্তুতকারীরা এই স্কিম থেকে ইন্সেন্টিভ পাচ্ছে এবং এখনও পর্যন্ত এই ধরণের নির্মাতাদের ১৭৮১.০২ কোটি টাকার ইন্সেন্টিভ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য ৩১৪টি ইউনিট স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ২৭১ ইউনিটের জন্য বিনিয়োগ হয়েছে ৩১,৪১৬ কোটি টাকা।