বাজারে এল Earth Energy-র নতুন ইলেকট্রিক স্কুটার ও মোটরসাইকেল, হাজার টাকায় করুন বুকিং

পরিসংখ্যা বলছে, ভারতে যতগুলি যানবাহন বিক্রি হয় তার মাত্র এক শতাংশ বৈদ্যুতিন শক্তি দ্বারা চালিত। হতাশাজনক এই চিত্রটি অবশ্য ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকেল) নির্মাতাদের দমাতে পারে নি। সমীক্ষা জানিয়েছে, যথাযথ অবকাঠামো থাকলে দেশের ৯০ শতাংশ গাড়ি মালিক বৈদ্যুতিক যানবাহন চালাতে ইচ্ছুক। তাদের হাতে বিকল্পের সন্ধান দিতে আজ মুম্বাইয়ের স্টার্টআপ সংস্থা আর্থ এনার্জি (Earth Energy) Glyde+ (স্কুটার), Evolve Z (মোটরসাইকেল) এবং Evolve R (মোটরসাইকেল) নামে তিনটি বৈদ্যুতিন টু-হুইলার লঞ্চের ঘোষণা করেছে। এদের মধ্যে Evolve R হল ভারতের প্রথম ইলেকট্রিক ক্রুজার মোটরসাইকেল।

নতুন ইলেকট্রিক বাইকগুলির লঞ্চ প্রসঙ্গে সংস্থাটি বলছে, তাদের নতুন রেঞ্জের ইলেকট্রিক টু-হুইলার ব্যবহারেও সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক, বিভিন্ন স্মার্ট ফিচার, এবং কুইক চার্জিং অফার করবে। Glyde+ ই-স্কুটারের দাম হচ্ছে ৯২,০০০ টাকা (এক্স-শোরুম) এবং অগামী মাস থেকে এর বিক্রি শুরু হবে। Evolve Z এবং Evolve R মোটরসাইকেল এক্স-শোরুম মূল্য যথাক্রমে ১.৩০ লক্ষ ও ১.৪২ লক্ষ টাকা এবং এপ্রিল মাস থেকে এদেরকে বাজারে পাওয়া যাবে। তিনটি মডেল মার্শাল গ্রে, জেট ব্ল্যাক, এবং হোয়াট কালার অপশনে পাওয়া যাবে। ১,০০০ টাকা দিয়ে তিনটি মডেল এখন অনলাইনে বুক করা যাচ্ছে।

Glyde+ ই-স্কুটারকে শক্তি যোগাবে এর অভ্যন্তরে থাকা ২.৪ KW মোটর। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬০ কিমি/ঘন্টা, পাওয়ার ৩.২৬ এইচপি এবং টর্ক ২৬ এনএম। Evolve Z ইলেকট্রিক ন্যাকেড মোটরবাইকে ৯৬ Ah লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। ৫.৩ kW মোটরের সাহায্যে এটি সর্বোচ্চ ৯৫ কিমি/ঘন্টা গতিবেগ ছুঁতে পারবে। এর পাওয়ার টর্ক ও আউটপুট যথাক্রমে ৭.২ এইচপি এবং ৫৬ এনএম৷ Evolve R ভারতের প্রথম ইলেকট্রিক ক্রুজার মোটরসাইকেল এবং তিনটি মডেলের মধ্যে শক্তির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে। এর ১২.৫ kW মোটর সর্বাধিক ১৭ পিএস পাওয়ার এবং ৫৪ এনএম টর্ক দেয়। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ১১০ কিমি/ঘন্টা।

ফুলচার্জে Glyde+ ই-স্কুটার এবং Evolve Z ই-বাইক ১০০ কিমি এবং Evolve R ই-ক্রুজার ১১০ কিমি ড্রাইভিং রেঞ্জ দেবে। তিনটি টু-হুইলার সম্পূর্ণ চার্জ হতে ৪ ঘন্টা সময় নেবে আবার ফাস্ট চার্জিং হলে ৪০ মিনিটের মধ্যে ব্যাটারি ৮০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ হয়ে যাবে। এদের ব্যাটারিগুলি রিমুভেবল নয় কিন্তু কোম্পানির দাবি, তাদের প্রোডাক্ট যে কোনো পাবলিক চার্জিং স্টেশনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আর্থ এনার্জির তিনটি মডেলই রয়েছে ৫-ইঞ্চি ডিজিটাল এলসিডি (LCD) ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার যা স্মার্ট ইন ট্রু সেন্স (Smart in true sense) নামে অত্যাধুনিক ফিচার সহ এসছে। এটি মূলত স্মার্টফোন কানেক্টিভিটি অফার করবে। যা রাইডারকে বিভিন্ন অ্যাপ বেসড ফিচার – নেভিগেশন স্ট্যাটাস, ইনকামিং কল/মেসেজ এলার্ট, লাইভ লোকেশন, ব্যাটারি ইনফরমেশন, রিয়েলটাইম রেঞ্জ, রাইড স্ট্যাটিটিক্স, থেফ্ট প্রোটেকশান, প্রভৃতির উপযোগিতা নেওয়ার সুযোগ দেবে।
      
আর্থ এনার্জির তিনটি ইলেকট্রিক টু-হুইলারেরই অগ্রভাগে টেলিস্কোপিক ফোর্ক এবং পিছনে টুইন শক অ্যাবজর্ভার রয়েছে৷ প্রত্যেকটি মডেলের সামনের ও পিছনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক বর্তমান। Glyde+ ই-স্কুটারে সিবিএস এবং আরও বেশী নিরাপত্তার জন্য অন্য ই-বাইকদুটিতে এবিএস দেওয়া হয়েছে। আর্থ এনার্জি তিনটি মডেলের ওপর সাড়ে তিন বছরের স্টার্ন্ডার্ড ওয়্যারেন্টি অফার করছে। তবে একটু বেশী অর্থ প্রদান করে আরও দু’বছর ওয়্যারেন্টি বাড়ানোর সুযোগ আছে।

সংস্থার দাবি, ইলেকট্রিক টু-হুইলারগুলি মেন ইন ইন্ডিয়া এবং তারা সেগুলির ৯৬ শতাংশ লোকালাইজেশন করতে সমর্থ হয়েছেন। সেগুলি মুম্বাইয়ের উপকন্ঠে অবস্থিত সংস্থার কারখানাতে ম্যান্যুফ্যাকচারিং করা হচ্ছে। আর্থ এনার্জির বর্তমান প্রোডাকশান ক্যাপাসিটি বছরে ১২,০০০ ইউনিট। তবে ভবিষ্যতে আরও একটি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে তারা বছরে ৬৫,০০০ ইউনিট স্পর্শ করার ব্যাপারে আশাবাদী।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন