হোয়াটসঅ্যাপে দৈনিক ৫০০০ টাকা উপার্জনের মেসেজ পাচ্ছেন? ভুলেও ফাঁদে পা দেবেন না

‘করোনার সময় চাকরি হারিয়েছেন?’ ‘দিনে ৫০০০ টাকা রোজগার করতে চান?’ বা ‘খুব অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ টাকা উপার্জনের উপায় জানতে চান’ – ঠিক এই ধরনের কোন মেসেজ কি আপনার হোয়াটসঅ্যাপে ফরওয়ার্ড করা হয়েছে? যদি হয়ে থাকে তবে খবরদার, ফাঁদে পা দেবেন না। কেননা সেক্ষেত্রে বড়সড় প্রতারণার শিকার হতে পারেন। গায়েব হয়ে যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাঙ্ক ডিটেলস এমনকি অ্যাকাউন্টের সমস্ত সঞ্চয়! আজ্ঞে হ্যাঁ, WhatsApp এর মাধ্যমে লোক ঠকানোর জন্য অপরাধী ও প্রতারকেরা সম্প্রতি এরকম পদ্ধতির সাহায্য নিচ্ছে। প্রথমে চাকরি এবং মোটা মাইনের লোভ দেখিয়ে তারা বিপন্ন মানুষকে প্রলুব্ধ করছে এবং তারপর তার আর্থিক ক্ষতি করছে। তাই এই ধরনের কোন মেসেজ আপনার কাছে এলে দয়া করে তার লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।

হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা কোনো নতুন ঘটনা নয়। ফেসবুকের মালিকানাধীন এই মেসেজিং অ্যাপটি যতই নিজেদের সিকিউরিটি মজবুত করুক না কেন, প্রতারকেরা কোন না কোন ফাঁক খুঁজে ঠিক নিজেদের কাজ হাসিল করে নেয়। কোভিড-পর্বে তারা মানুষের দুর্গতির সুযোগ নিয়ে আবার মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে তারা ব্যাপকভাবে ফেক মেসেজছড়িয়ে দিচ্ছে। এই মেসেজগুলির মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেকার ছেলে-মেয়েদের চাকরির টোপ দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ইউজারের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার জন্য মেসেজগুলিতে থাকছে ‘You are Lucky’ বা ‘ Earn Money in the Fastest Way’ জাতীয় মন্তব্য। এরপর তাকে বিশেষ একটি লিঙ্কে ক্লিক করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যা আদতে তার ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতিয়ে নেওয়ার একটি কৌশল।

আসলে যুক্তিবাদী মানুষ মাত্রেই জানা প্রয়োজন যে অর্থ উপার্জনের কোন শর্টকাট পদ্ধতি নেই। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ পরিশ্রম। কিন্তু বর্তমানে চাকরির বাজারের বেহাল দশার কারণে খুব সহজেই মানুষ প্রতারকদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন। তাদের জন্য আমাদের পরামর্শ, এগুলি এক ধরণের মনস্তাত্ত্বিক টোপ যা এখন অপরাধীদের বহুল ব্যবহৃত হাতিয়ার।

শুধু মেসেজ নয়, WhatsApp-এ ভয়েস কলের মাধ্যমে প্রতারণার ঘটনা বেড়েছে। এর মাধ্যমে অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যবহারকারীর কাছে একটি অডিও রেকর্ডিং প্রেরণ করে, যেখানে দাবী করা হয় যে ইউজার ২৫ লক্ষ টাকা বা তারও বেশী অঙ্কের লটারি জিতেছেন। এর সাথে অনেক ক্ষেত্রে র‌্যান্ডম কেবিসি লটারির ইমেজ জুড়ে দেওয়া হয়। প্রাইজের অর্থ পাওয়ার জন্য বিজেতাকে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়। এক্ষেত্রে তারা তথাকথিত ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের একটি নম্বর পর্যন্ত প্রদান করে। এরপর প্রতারক হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সেই নম্বরটিতে ফোন করার জন্য ব্যবহারকারীকে চাপ দিতে থাকে। আর কল করলেই জেতা টাকা পাওয়ার জন্য প্রথমে কিছু টাকা পাঠানোর অনুরোধ করা হয়।