চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডদের দিন শেষ, ফের স্মার্টফোন বাজার Samsung ও‌ Apple এর দখলে

চীনা কোম্পানিগুলিকে টেক্কা দিয়ে স্মার্টফোন থেকে অধিক রাজস্ব আয় করল Samsung এবং Apple

২০২২ সালে ভারতে Samsung এবং Apple-এর স্মার্টফোন থেকে আয় যথাক্রমে ১৪% এবং ২৭% বৃদ্ধি পেয়ে মোট ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশির গন্ডি অতিক্রম করেছে। সম্প্রতি কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ (Counterpoint Research)-এর এক রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রধানত সংস্থা দুটির প্রিমিয়াম সেগমেন্ট পোর্টফোলিওই এই চমকপ্রদ সাফল্যের মূল কারণ বলে জানা গিয়েছে। আবার মার্কেট ট্র্যাকারদের মতে, Xiaomi ও Vivo-র মতো প্রখ্যাত চীনা হ্যান্ডসেট ব্র্যান্ডগুলির পতনের কারণেই এই বিপুল সাফল্য হাসিল করতে সক্ষম হয়েছে Samsung এবং Apple।

চীনা কোম্পানিগুলিকে টেক্কা দিয়ে স্মার্টফোন থেকে অধিক রাজস্ব আয় করল Samsung এবং Apple

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর স্মার্টফোন থেকে স্যামসাং ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রাজস্ব আয় করেছে। এর ফলে দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্টটি ২২ শতাংশ মার্কেট শেয়ার দখল করতে পেয়েছে, যা পূর্বের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য যে, বিশ্ববাজারে সংস্থাটির বিভিন্ন রেঞ্জের স্মার্টফোন উপলব্ধ রয়েছে। ফলে সকল শ্রেণির ক্রেতারা অতি অনায়াসে কোম্পানিটির স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারেন। তবে স্যামসাংয়ের প্রিমিয়াম সেগমেন্টের হ্যান্ডসেটগুলি ইউজারমহলে বহুল জনপ্রিয় হওয়ায় সংস্থাটি অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, বিভিন্ন রেঞ্জের পাশাপাশি বর্তমানে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় মাধ্যমেই স্যামসাংয়ের অজস্র ফোন উপলব্ধ রয়েছে। ফলে বিশ্বের যে-কোনো প্রান্তের মানুষ ঘরে বসেই অতি অনায়াসে সংস্থার ফোনগুলি হাতের মুঠোয় পেতে সক্ষম হচ্ছেন। আবার, ইউজারদের সুবিধার্থে প্রায়শই একাধিক আকর্ষণীয় সেলের আয়োজন করে থাকে দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্টটি, যেখানে অগ্রিম ছাড়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্দান্ত ডিল এবং অফারের সুবিধা উপলব্ধ থাকে। তদুপরি, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিও এই ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সেক্ষেত্রে এই বিষয়গুলিও সংস্থার ব্যবসায়িক মুনাফায় বিশেষ সহায়তা করেছে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।

iPhone-কে হাতিয়ার করে গোটা বিশ্বে একচ্ছত্র আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হচ্ছে Apple

অন্যদিকে কাউন্টারপয়েন্টের তথ্য অনুযায়ী, প্রচুর সংখ্যক আইফোন বিক্রির সৌজন্যে গত বছর অ্যাপলের আয় ৬ বিলিয়নের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। এর ফলে সংস্থাটি ১৮ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার দখল করেছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে কোম্পানির সর্বাধিক বিক্রিত স্মার্টফোন ছিল আইফোন ১৩ (iPhone 13)। প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্বে অ্যাপলের এই ধামাকাদার হ্যান্ডসেটগুলির জনপ্রিয়তা যে কতখানি, সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই আর আলাদা করে কিছু বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আর ডিভাইসগুলির প্রতি অনুরাগীদের এই চরম আকর্ষণই অ্যাপলের ব্যবসায়িক সাফল্যের অন্যতম মূল কারণ।

তদুপরি, নানাবিধ রিটেইল স্টোরের পাশাপাশি প্রখ্যাত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিতে আজকাল বছরের বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত একাধিক সেল মারফত আইফোনে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়। এর ফলে বর্তমানে মূল দামের তুলনায় অনেকটাই সস্তায় ক্রেতারা এই ডিভাইসগুলি কিনতে সক্ষম হচ্ছেন। ই-কমার্স সাইটগুলি কর্তৃক প্রদত্ত অগ্রিম ছাড় এবং সেইসাথে ব্যাংক অফার ও এক্সচেঞ্জ অফারকে একজোট করলে হালফিলে অধিকাংশ আইফোনের দামই অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়৷ আর এর সুবাদেই অ্যাপলের ব্যবসায়িক মুনাফা যে দিন-কে-দিন ফুলেফেঁপে উঠছে, সেকথা বলাই বাহুল্য।

এই প্রসঙ্গে আইডিসি ইন্ডিয়া (IDC India) জানিয়েছে যে, ২০২২ সালে Apple-এর আয় ৮.৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, যার মধ্যে ৭৫ শতাংশ iPhone, ২২ শতাংশ পার্সোনাল কম্পিউটার এবং ৩ শতাংশ ওয়্যারেবেলসের অবদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালে শীর্ষস্থানীয় চীনা ব্র্যান্ড Xiaomi, Vivo এবং Oppo-র আয় গত বছরের তুলনায় যথাক্রমে ৫ বিলিয়ন ডলার, ৫.৫ বিলিয়ন ডলার এবং ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি কমে গিয়েছে।