Smartphone: মোবাইল ফোনে ফিরছে রিমুভেবল ব্যাটারি, নয়া নিয়মে চাপে স্মার্টফোন নির্মাতারা

একটা সময় ছিল যখন মোবাইল ফোনের সমস্ত পার্টসের পাশাপাশি সেটির ব্যাটারিও অতি অনায়াসে খুলে ফেলা যেত। অর্থাৎ এককথায় বলতে গেলে, সে সময় ফোনের ব্যাটারি ছিল…

একটা সময় ছিল যখন মোবাইল ফোনের সমস্ত পার্টসের পাশাপাশি সেটির ব্যাটারিও অতি অনায়াসে খুলে ফেলা যেত। অর্থাৎ এককথায় বলতে গেলে, সে সময় ফোনের ব্যাটারি ছিল রিমুভেবল। ফলে ব্যাটারি খারাপ হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী সারাইয়ের দোকানে বা সার্ভিস সেন্টারে না দৌড়ে ইউজাররা নিজেরাই আর-একটা ব্যাটারি কিনে খুব সহজে ঘরে বসেই সেটি ফোনে লাগিয়ে নিতে পারতেন। শুধু ফিচার ফোনের ক্ষেত্রেই নয়, এরকম ঘটনা বহুদিন ধরে স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। কিন্তু এই ছবিটা এখন পুরোপুরিভাবে পাল্টে গিয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হালফিলে সম্পূর্ণভাবে বদলে গেছে স্মার্টফোনের ডিজাইন।

বর্তমানে বাজারে যে সমস্ত স্মার্টফোন আসছে, সেগুলির ভিতরে ব্যাটারি ফিক্স করা থাকে। অর্থাৎ সোজা কথায় বললে, ইদানীংকালে বাজারে উপলব্ধ স্মার্টফোনের ব্যাটারিগুলি হল নন-রিমুভেবল। ফলে চাইলেই এখন ফোন থেকে ব্যাটারি খুলে ফেলা যায় না। আর শুধু হ্যান্ডসেটেই নয়, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট সহ আরও নানাবিধ ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে এখন এই ধরনের ব্যাটারি দেখা যায়। অর্থাৎ মোদ্দা কথা হল, চলতি সময়ে রিমুভেবল ব্যাটারিকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে দিয়ে মার্কেটে জাঁকিয়ে বসেছে শক্তিশালী নন-রিমুভেবল ব্যাটারি। তবে সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে যে, খুব শীঘ্রই এই ছবিটা পাল্টে যেতে পারে। স্মার্টফোনে আবার ফিরে আসতে পারে রিমুভেবল ব্যাটারি। কিন্তু কারা আনছে এই নয়া নিয়ম, এবং কবে থেকে এই ঘটনা ঘটতে চলেছে? আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

স্মার্টফোনে ফের দেখা যেতে পারে রিমুভেবল ব্যাটারি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনছে নয়া নিয়ম

SamMobile-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ (EU) এখন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যাটারিগুলিকে আরও টেকসই এবং পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করার কথা চিন্তাভাবনা করছে। এর সুবাদে স্মার্টফোন নির্মাতারা বিভিন্ন হ্যান্ডসেটে আবার রিমুভেবল ব্যাটারি ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই নয়া নিয়মের দৌলতে ইউজাররা যে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন, সেকথা বলাই বাহুল্য।

পরিবেশবান্ধব ব্যাটারি তৈরি করাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল লক্ষ্য

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ইইউ-এর এই নতুন আইনটি আগামী দিনে ইইউতে বিক্রি হওয়া সব ধরনের ব্যাটারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, যার মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাটারি, অটোমোটিভ ব্যাটারি এবং দুই চাকার গাড়ি ও বৈদ্যুতিক যানবাহনে (EV) ব্যবহৃত ব্যাটারিও শামিল রয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই নয়া আইন প্রণয়ন করার পিছনে ইউরোপের মূল লক্ষ্য হল ব্যাটারিগুলিকে পরিবেশবান্ধব করে তোলা।

এই উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে ২০২৪ সালের একদম গোড়া থেকে ইইউ-এর ব্যাটারি প্রস্তুতকারকদের তাদের ব্যাটারির মোট কার্বন ফুটপ্রিন্ট সম্পর্কে সরকারের কাছে বিশদে রিপোর্ট করতে হবে। এর মধ্যে নিষ্কাশন থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রক্রিয়া পর্যন্ত সবকটি ধাপ শামিল থাকবে। এই রিপোর্ট থেকে সংগৃহীত তথ্য পরবর্তীকালে একটি সর্বোচ্চ কার্বনডাই-অক্সাইড লিমিট সেট করতে ব্যবহার করা হবে। আপাতত অনুমান করা হচ্ছে যে, পাকাপাকিভাবে এই নিয়ম ২০২৭ সালের জুলাই থেকে কার্যকর হতে পারে। সত্যি সত্যিই যদি ইউরোপে এই নিয়মটি চালু হয়, তাহলে জনসাধারণের সুবিধার্থে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও ইউরোপের দেখাদেখি আগামী দিনে এই ধরনের একটি নিয়ম কার্যকর করতে আগ্রহী হবে বলে আশা করা যায়।