প্রতি সেকেন্ডে ৩১৯ টেরাবাইট স্পিড, বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরীক্ষায় সফল জাপান

নির্ভরতা বৃদ্ধির সাথে সাথেই সাম্প্রতিককালে আমাদের ব্যবহারযোগ্য ইন্টারনেট পরিষেবার গতি অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া ফাইবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের কল্যাণে আজ দেশের সমস্ত প্রান্তের মানুষ দ্রুতগতির অন্তর্জাল পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। যদিও একথা সবসময় মনে রাখতে হবে যে উপভোক্তাদের ব্যবহারযোগ্য ইন্টারনেট পরিষেবার গতি যত বেশীই হোক না কেন, ইন্টারনেটের প্রকৃত গতির তুলনায় তা সামান্য মাত্র! সাধারণের ব্যবহার-উপযোগী ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ গতিবেগ কখনোই তার আসল দ্রুততাকে স্পর্শ করতে পারে না। তাই আমাদের পক্ষে কখনোই সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার সম্ভব নয়।

আসলে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি’র (সংক্ষেপে- NICT) কয়েকজন গবেষক সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের আস্বাদ পেয়েছেন। অনেকদিন ধরে টানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবশেষে তারা সাফল্য লাভ করেন। নয়া ফাইবার অপটিক ব্রডব্যান্ড কেবল এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা ৩১৯ টেরাবাইট প্রতি সেকেন্ডের (Tbps) অভূতপূর্ব গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহারের নজির গড়েছেন! খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ফলাফল নতুন বিশ্বরেকর্ডের জন্ম দিয়েছে। এর আগে বিশ্বের সর্বাধিক দ্রুততার ইন্টারনেট গতিবেগ ছিল ১৭৮ টিবিপিএস (Tbps)। অর্থাৎ সাম্প্রতিক গবেষণাকারীরা পূর্বের রেকর্ডের প্রায় দ্বিগুণ গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সকলকে চমকে দিয়েছেন!

যে নয়া ফাইবার ব্রডব্যান্ড কেবল তৈরী করে গবেষকেরা সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন, আগামীদিনে তা ব্যবহার করে আরো অনেক রেকর্ড ভাঙা-গড়া সম্ভব বলে তাদের দাবী। তাদের দ্বারা ব্যবহৃত বিশেষ কেবলে মোট চারটি কোর রয়েছে। অথচ সাধারণভাবে কেবলগুলি একটি কোর-সম্পন্ন হয়ে থাকে। কোরসংখ্যা বেশী হওয়ায় তাদের কেবলে উৎপন্ন ডেটার গতিবেগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে গবেষকদের অভিমত।

শুধু নতুন কেবল নয়, পরীক্ষামূলক অবস্থায় ইন্টারনেট গতি বেড়ে যাওয়ার পেছনে আরো কিছু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির হাত রয়েছে। ডেটা পরিবহনের দ্রুততা বৃদ্ধির জন্য গবেষকেরা বিশেষ লেজার বিম প্রযুক্তি ও দ্রুততা পরিবর্ধক পরিষেবার ব্যবহার করেছেন যা তাদের নজিরবিহীন সাফল্যের মুখোমুখি করেছে।

যদিও ইন্টারনেট গতির এই ব্যাপক উন্নয়নের কথা শুনে আমাদের বিশেষ কোন লাভ নেই। কারণ উপভোক্তা নির্ভর পরিষেবার ক্ষেত্রে কখনোই এত দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ সম্ভব নয়। যে কোন সংস্থার পক্ষেই এই অসাধ্য সাধন করা অসম্ভব। তবে শিল্পক্ষেত্র সহ মহাকাশ গবেষণা এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ক নির্দিষ্ট কিছু কর্মকান্ডে এরকম দ্রুতগতির ইন্টারনেটের ব্যবহার দেখা যেতে পারে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন