ভারতের মহাকাশ গবেষণা গড়বে ইতিহাস! সামনে এল ISRO-র আগামী বছরের পরিকল্পনা

প্রযুক্তি-বিজ্ঞানের সাধনা ও বিকাশে এখন গোটা বিশ্বের সাথেই পাল্লা দিচ্ছে আমাদের ভারতবর্ষ। একদিকে যেমন স্মার্টফোন ম্যানুফ্যাকচারিং, 5G নেটওয়ার্ক প্রভৃতি বিষয় নিয়ে দেশ এগোচ্ছে – তেমনই আবার করোনার মত ভাইরাসের টীকা আবিষ্কার বা মহাকাশ গবেষণায় সাফল্যের কারণে ভারতকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন খবর।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে রাত পেরোলেই যে নতুন বছর, সেই আগামীতে বিজ্ঞান নিয়ে ভাবছে ভারত? অর্থাৎ নতুন ক্যালেন্ডারে ভারতীয় বিজ্ঞান কী কী করতে চলেছে? সেক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যত সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা না মিললেও, চলতি ২০২২ সালের শেষ লগ্নে পৌঁছে সামনে এল ISRO মানে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের নতুন বছরের পরিকল্পনা। আসলে অতিসম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি ২০২৩-এর জন্য মেগা সায়েন্স মিশনগুলিকে লাইনআপ করছে; আর এর থেকেই ISRO আসন্ন এক বছরে ঠিক কী পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তার তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়াও মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে দেশের বেসরকারি মানে প্রাইভেট স্টার্টআপগুলি কী করতে চায়, তাও এই মুহূর্তে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ISRO-র নিউ ইয়ার রেজোলিউশন

১. জানা গিয়েছে যে, ২০২৩ সালে সূর্য ও চাঁদ সংক্রান্ত বিজ্ঞানের পরীক্ষাগুলির জন্য ইসরো তার ‘আদিত্য’ (Aditya) বা চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) মিশনগুলিতে ফোকাস ঘুরিয়ে দেবে। এর জন্য সংস্থার স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেগমেন্টে নতুন স্টার্ট-আপ সেক্টর সেট করা হয়েছে।

২. আসন্ন বছরটি ভারতের প্রথম হিউম্যান স্পেস ফ্লাইট তথা ইসরো (ISRO)-র গগনযান (Gaganyaan) প্রকল্পের সাক্ষী থাকবে, যেখানে ২০২৩ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে সংস্থার প্রথম অপরিশোধিত (uncrewed) মিশনসহ হিউম্যান-রেটেড লঞ্চ ভেহিকল, অরবিটাল মডিউল প্রপালশন সিস্টেম এবং অরবিটাল মডিউল প্রোপালশন সিস্টেমের কার্যকারিতা যাচাই করার লক্ষ্যে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৩. কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এই মাসে সংসদে বলেছেন যে, ইসরো, পরবর্তী বছরের মানে ২০২৩ সালের শুরুতে কর্ণাটকের চিত্রদুর্গার অ্যারোনটিক্যাল টেস্ট রেঞ্জ থেকে রিইউজেবল (পুনর্ব্যবহারযোগ্য) লঞ্চ ভেহিকল সংক্রান্ত প্রথম রানওয়ে ল্যান্ডিং এক্সপেরিমেন্ট (RLV-LEX) পরিচালনা করার পরিকল্পনা করছে।

মহাকাশ বিজ্ঞানে নজর দিচ্ছে দেশের প্রাইভেট স্টার্টআপগুলি

শুধু ইসরো নয়, বরঞ্চ আগামীদিনে এই ঐতিহ্যবাহী সংস্থাকে টেক্কা দিয়ে ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে কিছু বেসরকারি কোম্পানিও। যেমন, স্কাইরুট অ্যারোস্পেস (Skyroot Aerospace) নামের স্টার্টআপ (যা নভেম্বরে ভারতের প্রথম প্রাইভেট রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল) আগামী বছরের কোনো এক সময়ে একটি ক্লায়েন্ট স্যাটেলাইট কক্ষপথে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে আইআইটি (IIT) মাদ্রাজ ক্যাম্পাসে বিকশিত স্টার্ট-আপ অগ্নিকুল কসমোস (Agnikul Cosmos) তার কাস্টমাইজযোগ্য অগ্নিবান (Agnibaan) রকেটকে পরীক্ষামূলক ফ্লাইটের জন্য লাইনআপ করেছে। এদিকে ধ্রুবস্পেস (DhruvaSpace)-এর মত কোম্পানি ইতিমধ্যেই স্যাটেলাইট তৈরির জন্য ২০ কোটি টাকার বাণিজ্যিক চুক্তি পেয়েছে বলে তাদের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে যেখানে আগে ইসরো একচেটিয়াভাবে কাজ করত সেখানে স্পেস স্টার্টআপের সংখ্যা এখন ১০০ ছাড়িয়েছে। এই স্টার্টআপগুলি ২৪৫.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে বলে ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যাসোসিয়েশন (ISpA)-এর ডিরেক্টর জেনারেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন৷