ISRO: গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট তৈরি করছে ভারতের ইসরো
দীর্ঘদিন ধরে বহু নজিরবিহীন কান্ডকারখানা ঘটিয়ে মহাকাশ গবেষণায় একের পর এক মাইলস্টোন তৈরি করছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা...দীর্ঘদিন ধরে বহু নজিরবিহীন কান্ডকারখানা ঘটিয়ে মহাকাশ গবেষণায় একের পর এক মাইলস্টোন তৈরি করছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (Indian Space Research Organisation) বা ISRO (ইসরো)। সম্প্রতি পাওয়া আবার জানা গেছে, গ্লোবাল মার্কেটের জন্য ভারতের এই সংস্থাটি একটি নতুন পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট ডিজাইন এবং নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এর ফলে উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন মহাকাশ সচিব এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান এস সোমনাথ (S Somanath)। ফলে মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে ভারত যে আগামী দিনে এক নতুন নজির গড়তে চলেছে, সেকথা বলাই বাহুল্য।
উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ব্যয় অনেকটাই কমাতে সাহায্য করবে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেট
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, সপ্তম 'বেঙ্গালুরু স্পেস এক্সপো ২০২২' (Bengaluru Space Expo 2022) ইভেন্টে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় সোমনাথ উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে কক্ষপথে এক কেজি পেলোড স্থাপন করতে প্রায় ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ মার্কিন ডলার খরচ হয়। তবে ইসরো এই খরচের পরিমাণকে প্রায় ১,০০০ থেকে ৫,০০০ মার্কিন ডলারে নামিয়ে আনতে চাইছে। আর এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নের একমাত্র উপায় হল, উৎক্ষেপিত রকেটগুলিকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, রকেটকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার মতো প্রযুক্তি এই মুহূর্তে ভারতে উপলব্ধ নয়। তাই তারা GSLV Mk III নামক রকেটটিকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য বর্তমানে জোরকদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
কাজটি কিন্তু মোটেই সহজ নয়, তাই আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব করেছে ISRO
সোমনাথ আরও জানিয়েছেন যে, ইসরো বর্তমানে বিভিন্ন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছে, যার মধ্যে রয়েছে গত সপ্তাহে ইনফ্লেটেবল এরোডাইনামিক ডিসেলেরেটর (IAD)-এর মাধ্যমে প্রদর্শিত প্রযুক্তি। তার কথায়, রকেট যাতে সফলভাবে পৃথিবীতে অবতরণ করতে পারে, তার জন্য যথাযথ রেট্রো-প্রপালশন থাকতে হবে। আর খুব স্বাভাবিকভাবেই রকেটকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা মোটেই চাট্টিখানি ব্যাপার নয়, ফলে ইসরো কখনোই একা সেই কাজ করে উঠতে পারবে না। এর জন্য একাধিক উন্নত প্রযুক্তিকে একত্রিত করতে হবে; সেইসাথে সংস্থাটি নতুন কিছু ইন্ডাস্ট্রি, স্টার্টআপস এবং এর বাণিজ্যিক শাখা, নিউস্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড (NSIL)-এর সাথে অংশীদারিত্বের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর সুবাদে মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে ভারত হয়ে উঠবে এক জ্বলন্ত নক্ষত্র
সোমনাথের মতে, রকেটকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার মাধ্যমে ISRO উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ব্যয় অনেকটাই কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশে নির্মিত প্রযুক্তিকে ভারতের এই রকেট যে জোর টক্কর দেবে, সে বিষয়েও চরম আশাবাদী তিনি। তার কথায়, একটি উন্নত মানের পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট তৈরি করতে হলে শুধুমাত্র সেটির ডিজাইনই নয়, বরঞ্চ সেটিকে যথাযথভাবে প্রকৌশল করার পাশাপাশি সেটি তৈরি এবং লঞ্চের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন কমার্শিয়াল প্রোডাক্টের ওপরও নিখুঁত নজর রাখতে একবারহবে। যদিও কাজটি বেশ সময়সাপেক্ষ, তবে সফলভাবে করে ফেলতে পারলেই ভবিষ্যতে যথাসময়ে রকেট উৎক্ষেপণ করা সম্ভবপর হবে। এবং এর ফলে পৃথিবীর বুকে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ভারত যে সেরার সেরা হয়ে উঠবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।