সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচাতে এই কাজগুলি অবশ্যই করুন

প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে হ্যাকাররাও তাদের কাজের কৌশল বদলাচ্ছে। ফলে দিন দিন বাড়ছে অনলাইন জালিয়াতি বা অ্যাকাউন্ট হ্যাকের মত ঘটনা। সেক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিকে একাধিক সুরক্ষার ঘেরাটোপে রাখার পরেও দেখা যাচ্ছে সেগুলিকে হ্যাক করে নেওয়া হয়েছে। মাইক্রো ব্লগিং সাইট Twitter -এর সিইও Jack Dorsey -এর মতো ব্যক্তিত্বও রেহাই পাননি হ্যাকারদের দুরভিসন্ধির থেকে। কয়েক মাস আগে তার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টটিকে হ্যাক করে সেখান থেকে কিছু বর্ণবাদমূলক টুইট করা হয়। ফলে স্বভাবতই এই খবরটি শোনার পর প্রত্যেকটি আমজনতাই তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আপনিও যদি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে, আজ আমরা আপনাদের এমন কয়েকটি কৌশল জানাবো যেগুলিকে অনুসরণ করলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি অনেকটাই নিরাপদে থাকবে। আসুন এবার এই কৌশলগুলির সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষিত রাখার উপায়

১. টু-স্টেপ ভ্যারিফিকেশন : টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (Two-factor authentication) বা টু-স্টেপ ভ্যারিফিকেশন বিকল্পটি আপনার অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই বিকল্পটিকে এনাবেল বা অন করে দিলে, যে কোনো সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার সময়ে আপনাকে টেক্সট ম্যাসেজ, মেইল বা ফোন কলের মাধ্যমে ওটিপি পাঠানো হবে। ফলে অন্যকোনো ব্যক্তি আপনার অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার চেষ্টা করলে তার খবর আপনি তৎক্ষণাৎ পেয়ে যাবেন। তাই সুরক্ষার খাতিরে এই বিকল্পটিকে অন করে রাখা আবশ্যক।

২. মোবাইল অ্যাপগুলিকে আপ-টু-ডেট রাখুন : মোবাইলে থাকা অ্যাপগুলিকে সর্বদা আপডেট করে রাখা উচিত। এর ফলে আপনার ফোন অধিক সুরক্ষিত থাকবে। কারণ, অ্যাপ ডেভলপাররা অ্যাপকে সুরক্ষিত রাখতে প্রায়শই কোনো না কোনো আপডেট নিয়ে আসে। তাই আপনি যদি অ্যাপগুলির লেটেস্ট ভার্সন ব্যবহার করেন তবে, আপনার অ্যাকাউন্টহ্যাক হওয়া সম্ভাবনা কম থাকবে।

৩. সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে সতর্ক হোন : নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে, আপনার অ্যাকাউন্টে যা কিছু ঘটছে তার দিকে নজর রাখুন। আপনি যত তাড়াতাড়ি কোনো সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপ সনাক্ত করবেন, তত তাড়াতাড়িই আপনি নিজের অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষিত করতে পারবেন। অর্থাৎ, একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট এবং ব্যক্তিগত তথ্যকে হ্যাকারের হাত থেকে নিরাপদ রাখতে পারবেন। এছাড়া, যেসকল অ্যাকাউন্ট আপনি ব্যবহার করেন না, সেগুলির প্রতিও নজর রাখবেন। কারণ, সেগুলি যেহেতু আপনার ইমেইলের সাথে লিঙ্ক করা, সেহেতু সেখানেও কিন্তু আপনার সব তথ্য মজুদ থাকছে।

৪. পাবলিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন : আমরা অনেকেই ক্যাফে বা শপিং মলে গিয়ে সেখানকার ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু, আপনাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই জানেন না যে, ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সহ ফোনে থাকা তথ্যাদিগুলিও হ্যাক হয়ে যেতে পারে। কারণ, একই নেটওয়ার্ক একসাথে অনেকেই ব্যবহার করছে। ফলে কেউ যদি সেই পাবলিক নেটওয়ার্ক সিস্টেমে ম্যালিসিয়াস কোড ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়ে যায়, তাহলে সেই ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের ডিভাইস হ্যাক হতে পারে। তাই চেষ্টা করুন পাবলিক নেটওয়ার্কগুলি ব্যবহার না করার। আর যদি একান্তই উপায় না থাকে, তাহলে ওই সময়টুকু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে লগ-ইন একদমই করবেন না।

৫. অ্যাকাউন্টের অ্যাক্টিভিটি মনিটর করুন : অনেকে সময়ে দেখা যায় যে, সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সংযুক্ত কোনো থার্ড-পার্টি অ্যাপ আমাদের ডেটা চুরি করে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে, বৈধ অ্যাপগুলিকেই শুধুমাত্র ব্যবহার করা উচিত। এরই সাথে, অন্য অ্যাপ দ্বারা আপনার অ্যাকাউন্টে কি কি শেয়ার হচ্ছে, সেই দিকেও বিশেষ নজর রাখুন।

৬. সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য পৃথক ইমেইল আইডি ব্যবহার করুন : সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টের জন্য পৃথক ইমেইল আইডি ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ, আমাদের ব্যক্তিগত মেইল আইডি -এর সাথে যাবতীয় ডকুমেন্ট, পরিচয়পত্র এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করা থাকে। আর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাওয়া মানে, আপনার ইমেইলের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তিগত তথ্যও ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা। তাই পৃথক মেইল আইডি ব্যবহার করা হলে হ্যাকাররা আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের অ্যাক্সেস কোনোভাবেই পাবে না।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন