৫০ হাজারের বেশি ফটো দিয়ে চাঁদের সবচেয়ে সুন্দর ছবি বানিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি ১৬ বছরের কিশোরের

আর মাত্র ৬ দিন পরেই বিশ্ববাসী সাক্ষী হবে ‘রক্তিম’ চন্দ্রগ্রহণের মত চমকপ্রদ মহাজাগতিক দৃশ্যের। কিন্তু তার আগেই চাঁদ প্রেমীদের জন্য বিস্ময় সৃষ্টি করল এক ১৬ বছর বয়েসী কিশোর। কথায় আছে আত্মশক্তির বলে কেউ কিছু করতে চাইলে, সমস্ত ধরণের বাধা অতিক্রম করা যায়। সেক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের পুনে নিবাসী প্রমথেশ জাজু ইচ্ছাশক্তির জোরে খুব কম বয়েসেই এমন অকল্পনীয় কিছু করে দেখিয়েছে, যার ফলে নেটদুনিয়ায় ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছে। আসলে এই কিশোর, চাঁদের সবচেয়ে সুন্দর এবং বিস্তারিত ছবি তৈরি করেছে যা সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই 3D বা ত্রিমাত্রিক ছবিটি বানাতে জাজু ৫০ হাজারেরও বেশি সংখ্যক চাঁদের ছবি ব্যবহার করেছে বলে জানা গিয়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথমেশ, আলোচ্য আশ্চর্য সুন্দর 3D ছবিটি তৈরি করে সেটিকে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে। এরপর সেটি রাতারাতি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে প্রথমেশ নিজেকে জ্যোতির্বিদ ফটোগ্রাফার হিসাবে পরিচয় দিয়ে দাবি করে যে, এটি খনিজ সম্পন্ন চাঁদের তৃতীয় কোয়ার্টারের সর্বাধিক তথ্যপূর্ণ এবং স্পষ্ট ছবি। তাছাড়া এই ছবিটি তৈরি করতে ১৮৬টিরও বেশি ডেটা এবং ৫০ হাজারেরও বেশি ফটো ব্যবহৃত হয়েছে বলে সে জানায়। তার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে এও জানা যায় যে ছবিটির জন্য সে ১.২ মেগাপিক্সেল ZWO ASI120MC-S-এর মাধ্যমে ১৫০০ এবং ৩০০০ মিলিমিটার ফোকাল লেন্থের প্রায় ৩৮টি প্যানেল ক্যাপচার করেছে।

একই সাথে, সংবাদমাধ্যম ANI-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই স্বল্প বয়েসী কিশোর এই ছবি তৈরির পদ্ধতিও প্রকাশ করে। তার মতে, চাঁদের সর্বাধিক স্পষ্ট ছবি বানানোর উদ্দেশ্যে তৈরি এই ফটোটি দুটি পৃথক ফটোর একটি এইচডিআর (HDR) কম্পোসিট বা সংমিশ্রণ; মূলত ছবিটিতে ত্রি-মাত্রিক প্রভাব দেওয়ার জন্যই এমনটা করা হয়েছে। আবার এই প্রক্রিয়া চলাকালীন উপাদান হিসেবে প্রায় ১০০ জিবি ডেটা থাকলেও, প্রক্রিয়া শেষে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৮৬ জিবি আকারে পৌঁছে যায়। যদিও প্রথমেশ কর্তৃক সমস্ত ডেটা মিশ্রণের পর এটির আকার দাঁড়ায় ৬০০ এমবি-তে। এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ার জন্য অর্থাৎ ছবিটি তৈরি করতে মোট ৩৮-৪০ ঘন্টা সময় লেগেছে বলে তার অভিমত।

এছাড়া এই প্রক্রিয়া নিয়ে কাটাছেঁড়া করার আগে, প্রথমেশ বহু গল্প পড়েছে বা অনেক ভিডিও দেখেছে বলে জানা গিয়েছে। তার বাসনা ভবিষ্যতে জ্যোতির্বিজ্ঞানী হওয়া বা পেশাদারী ভিত্তিতে জ্যোতির্বিজ্ঞান অধ্যয়ন করা। সেক্ষেত্রে এই কিশোরের ভবিষ্যত সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকলেও, সে যে বর্তমান প্রজন্মের সাধারণ জীবনশৈলী থেকে বেরিয়ে নেটদুনিয়া তথা সাধারণ মানুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে – তাতে কোনো সন্দেহ নেই!

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন