ইসরোতে বসে Chandrayaan 3 উৎক্ষেপণের ঐতিহাসিক মুহূর্ত লাইভ দেখার সুযোগ, রইল আবেদনের লিঙ্ক

দেশবাসীদের জন্য আবারো একটা গর্বের মুহূর্ত তৈরী হতে চলেছে। কেননা ভারতের চন্দ্র-অভিযানের অন্যতম অংশ ‘চন্দ্রযান ৩’ প্রায় প্রস্তুত। এক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন’ (ISRO) ঘোষণা করেছে যে, এই মহাকাশ যানটির বহনকারী হেভিলিফ্ট লঞ্চ ভেহিক্যাল LVM-3 -এর সমস্ত বৈদ্যুতিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং চলতি মাসেই তৃতীয় চন্দ্র অভিযান স্থান নিতে চলেছে। তবে সবথেকে উল্লেখযোগ্য খবর হল, স্পেস এজেন্সিটি দেশবাসীকে ‘চন্দ্রযান ৩’ মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ সরাসরি প্রত্যক্ষ করার সুবর্ণ সুযোগ হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। আমজনতা ওয়ান-ট্যাপ / ক্লিক রেজিস্ট্রেশন করে এই বিরল মুহূর্তের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার জন্য শ্রীহরিকোটার লঞ্চ ভিউ গ্যালারিতে নিজেদের জন্য সিট বুক করতে পারবেন বলে জানা যাচ্ছে।

চন্দ্রযান ৩ -এর উৎক্ষেপণ কবে কখন কিভাবে দেখা যাবে?

অবগতের জন্য জানিয়ে রাখি, চন্দ্রযান ৩ হল চন্দ্রযান ২-এর একটি ফলো-আপ মিশন। তবে চন্দ্রযান ২ চাঁদে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশে রওনা হলেও, সফ্ট ল্যান্ডিং ইস্যুর জন্য এই মিশন ব্যর্থ হয়ে যায়। তাই এবার যাতে চন্দ্রযান ৩ -এর হাত ধরে চন্দ্রাভিযান সফলতা পায়, এই আশায় বুক বেঁধে রয়েছে ১৪০ কোটি ভারতীয়।

এই মহাকাশ যানটির উৎক্ষেপণ সময় আগামী ১৪ই জুলাই দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে নির্ধারিত হয়েছে। এই মিশনের লক্ষ্য হল – চাঁদের কিছু বিশেষ জায়গায় থার্মোফিজিক্যাল পদার্থ অনুসন্ধান, ল্যান্ডিং সাইটের আশেপাশে চন্দ্রের ভূমি-কম্পন রেট, চন্দ্র পৃষ্ঠের প্লাজমা পরিবেশ এবং মৌলিক এলিমেন্টের বৈশিষ্ট্য সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও অধ্যয়ন করা।

এই বিষয়ে ISRO তাদের একটি সাম্প্রতিক টুইটে মন্তব্য করেছে যে – “ভারতীয় নাগরিকদের SDSC-SHAR, শ্রীহরিকোটার লঞ্চ ভিউ গ্যালারি থেকে উৎক্ষেপণটি সরাসরি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।” এক্ষেত্রে আপনিও যদি এই সুবর্ণ সুযোগের লাভ ওঠাতে চান, তবে এখুনি নিচে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলুন।

লিঙ্ক : https://lvg.shar.gov.in/VSCREGISTRATION

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ISRO -এর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছিলেন যে – ১৩ই জুলাই থেকে ১৯শে জুলাইয়ের মধ্যে একটি দিন নির্ধারিত করে চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণ করা হবে। আর আজ খবর এলো, ১৪ই জুলাই অর্থাৎ আগামী সপ্তাহের শুক্রবার নিশ্চিতভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ‘চন্দ্রযান ৩’ মহাকাশযান সম্বলিত LVM3 এনক্যাপসুলেটেড হেভিলিফ্ট লঞ্চ ভেহিক্যালকে উৎক্ষেপণ করা হবে।

চন্দ্রযান ৩ -এর অবকাঠামো কীভাবে তৈরি করা হয়েছে?

চন্দ্রযান ৩ -এর ফাইনাল ইন্টিগ্রেশন ও টেস্টিংয়ের কাজ শেষের পথে। যদিও সামান্য কয়েকটি ‘শেষ মুহূর্তের’ টেস্টিং বাকি, যা নিয়ে ISRO বর্তমানে কর্মরত। বিশেষত, মহাকাশযানটি যাতে উৎক্ষেপণের সময় তীব্র কম্পন সহ্য করে পারে এবং বিমুখী পরিবেশের মুখোমুখি হতে সমর্থ হয় তার জন্য এই টেস্টিংগুলি সম্পন্ন করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মহাকাশযানে মোট তিনটি মডিউল সমন্বিত করা হয়েছে – প্রপোলশন (propulsion), ল্যান্ডার (lander) এবং রোভার (rover)। এক্ষেত্রে, প্রপোলশন মডিউল – ল্যান্ডার এবং রোভারকে বৃত্তাকার পোলার অরবিট বা চন্দ্র কক্ষপথের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে নিয়ে আসবে এবং তারপরে মূল ক্রাফ্ট বডি থেকে আলাদা হয়ে যাবে। এরপর, ল্যান্ডারটি রোভারকে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে ল্যান্ড করতে সাহায্য করবে।

ISRO -এর টুইট অনুসারে, রোভারের টাচডাউন বেগ ২ m/s উলম্ব এবং ০.৫ m/s অনুভূমিক হওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রপোলশন মডিউল, যা কিনা কমিউনিকেশন রিলে স্যাটেলাইট হিসাবেও কাজ করবে, তা ভূ-পৃষ্ঠে স্পেস এজেন্সির সাথে যোগাযোগ সক্ষম করতে চাঁদের কক্ষপথে ঘূর্ণমান অবস্থায় থাকবে বলে জানা যাচ্ছে। আর এই মিশনের জন্য ল্যান্ডার এবং রোভারটিকে এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে এগুলি একটি লুনার ডেলাইট পিরিয়ড (পৃথিবীর দিনসংখ্যা অনুসারে প্রায় ১৪ দিন) সম্পূর্ণ করতে পারে।