দিনে এক ঘন্টার বেশি টিভি দেখলে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা, দাবি কেমব্রিজের গবেষকদের

ঘন্টার পর ঘন্টা টেলিভিশনের সামনে বসে থাকলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়তে পারে কয়েকগুণ! আজ্ঞে হ্যাঁ, সম্প্রতি কেমব্রিজ ও হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় এমনই এক তথ্য সামনে এসেছে। গবেষণা বলছে, বিরতিহীনভাবে একটানা টিভি দেখার অভ্যেস থাকলে সেজন্য চোকাতে হতে পারে বড় মাশুল। দর্শকের জন্য এমন প্রবণতা করোনারি হার্ট ডিজিজের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে গবেষকেরা জানিয়েছেন। ফলে তাদের অভিমত, নিয়ম মেনে রোজ টিভি দেখার সময় একটু একটু করে কমিয়ে আনা উচিত। শুধু এটুকুই নয়, দিনে এক ঘন্টা বা তার চেয়েও কম সময় টিভি দেখার ফলে করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১১ শতাংশ কমতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

আসলে একই স্থানে দীর্ঘক্ষণ অলসভাবে বসে থাকার অভ্যেস এমনিতেই খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। এমনকি বিশেষজ্ঞেরা একে কারোনারি হার্টের অসুখের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করে থাকেন। এ থেকে রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় কায়িক পরিশ্রম। অথচ তেমনটা না করে কেউ যদি দিনের অধিকাংশ সময় বসে বসে টিভি দেখার পেছনে ব্যয় করেন, তবে সে ব্যক্তির হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যে আরও বৃদ্ধি পায়, তা পরিসংখ্যান থেকে গবেষকেরা প্রমাণ করেছেন। এক্ষেত্রে তারা ইউকে (UK) বায়োব্যাঙ্কের ডেটা ব্যবহার করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।

বিএমসি মেডিসিন জার্নালে সদ্য প্রকাশিত নিজেদের কাজের কথা বলতে গিয়ে হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-অধ্যাপক ও প্রকল্পের অন্যতম এক গবেষণাকারী ড.ইয়ংউয়োন কিম জানিয়েছেন যে, টিভি দেখা কমানোর ফলে করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি ঠিক কতটা কমতে পারে, গবেষণাকালে সেটি তারা প্রত্যক্ষ করেছেন। তাদের গবেষণাটি এ ব্যাপারে পূর্ণ আলোকপাত করেছে বলে কিমের বক্তব্য।

তাছাড়া গবেষণা অনুযায়ী, দিনে চার ঘন্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় টিভি দেখার ফলে হার্টের অসুখে পড়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এর থেকে এক ঘন্টা কম অর্থাৎ দিনে তিন ঘন্টা টিভির সামনে কাটালে বিপদের সম্ভাবনা কমে প্রায় ৬ শতাংশ। এর বাইরে যারা দৈনিক এক ঘন্টা বা তার থেকেও কম সময় টিভির সামনে অতিবাহিত করেন তাদের করোনারি হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ অন্তত ১৬ শতাংশ হ্রাস পায় বলে গবেষকেরা লক্ষ্য করেছেন।

সুতরাং, মন-মেজাজের পাশাপাশি নিজের হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে মাত্রাতিরিক্ত টেলিভিশন আসক্তি ত্যাগ করাই যে যথার্থ বুদ্ধিমানের কাজ হবে তা বোধ করি আর আলাদাভাবে উল্লেখের কোনও প্রয়োজন নেই।