Virtual RAM: ২ জিবি র‌্যাম বেড়ে হবে ৬ জিবি, খুঁজে দেখুন আপনার ফোনে এই অপশন আছে কিনা

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল র‌্যাম (Virtual RAM) বা এক্সটেন্ডেড র‌্যাম (Extended RAM) নামক ফিচারটি আজকাল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটি হল একটি সফ্টওয়্যার-ভিত্তিক সলিউশন, যার মাধ্যমে অনবোর্ড সিস্টেম মেমরিকে সম্প্রসারিত করা যায়। মূলত ইউজারদের চাহিদার ভিত্তিকে, গত কয়েক বছর যাবৎ অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলিতে অধিক সিস্টেম মেমরি বা র‌্যাম অফার করা হচ্ছে। দেখতে গেলে, এক দশক আগেও অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলি মাত্র ৫১২ এমবি র‌্যাম সহযোগে লঞ্চ হত। কিন্তু বর্তমান সময়ে ফোনে ব্যবহৃত টেকনোলজি তথা ফিচারসমূহ এতটাই উন্নত হয়ে গিয়েছে যে, ‘স্মুথ’ ও ‘হ্যাং-ফ্রি’ পারফরম্যান্স প্রদান করার জন্য ডিভাইসে বেশি মেমরির প্রয়োজন পড়ছে।

২০২২ সালে আগত বেশিরভাগ মিড-রেঞ্জ অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলিতে ৮ জিবি র‌্যাম থাকতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, ফ্ল্যাগশিপ ক্যাটাগরির অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলি এমন স্টোরেজ অপশনের সাথে আসছে যে, তা কম্পিউটারের স্টোরেজ ক্যাপাসিটিকেও হার মানাবে। উদাহরণস্বরূপ, Samsung ব্র্যান্ডের লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ সিরিজ অধীনস্ত Galaxy S22 Ultra মডেলটি সর্বোচ্চ ১২ জিবি র‌্যাম এবং ১ টেরাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ সহ এসেছিল। আবার, OnePlus 10 Pro ফোনে ১২ জিবি পর্যন্ত র‌্যাম উপলব্ধ। যদিও, অ্যান্ড্রয়েড হ্যান্ডসেটগুলি তুলনায় Apple ডিভাইসে, তুলনায় কম র‌্যাম অফার করা হয়ে থাকে। ফলে ভার্চুয়াল র‌্যাম ফিচারটিও এখনো আইফোনে ফিচার-তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি।

ভার্চুয়াল RAM কী ?

হালফিলে, প্রায় অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন নির্মাতারা তাদের ডিভাইসে ‘ভার্চুয়াল র‌্যাম’ নামের ফিচারটি অন্তর্ভুক্ত করছে। এই সফ্টওয়্যার-ভিত্তিক সলিউশনটির সম্পর্কে জানার আগে, র‌্যাম কী তা আমাদের জানা দরকার। ফোনে বিদ্যমান অ্যাপগুলি যাতে ব্যাকগ্রাউন্ডে অনায়াসে রান করতে পারে তার জন্য, ডেটা সেভ করার একটি সাময়িক মেমোরি হল র‌্যাম বা ‘র‌্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরি’। আর ভার্চুয়াল র‌্যাম হল ডিভাইসে র‌্যাম বাড়ানোর একটি পদ্ধতি। বিশদে বললে, ভার্চুয়াল র‌্যামের মাধ্যমে ফোনের অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ বা রমের কিছুটা অংশকে র‌্যামে পরিবর্তিত করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, একটি ডিভাইসে ৮ জিবি র‌্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ বিদ্যমান আছে। এই ফোনটিতে যদি ৬ জিবি পর্যন্ত ভার্চুয়াল র‌্যামের সাপোর্ট উপলব্ধ থাকে, তবে উক্ত ফিচারটি সক্রিয় করার পর ফোনে মোট ১৩ জিবি র‌্যাম ও ১২২ জিবি স্টোরেজ পাওয়া যাবে। প্রসঙ্গত, ভিভো ব্র্যান্ডটি প্রথম তাদের স্মার্টফোনে ভার্চুয়াল র‌্যাম ফিচার চালু করেছিল।

ভার্চুয়াল RAM ফিচারকে কীভাবে সক্রিয় করবেন?

Samsung Galaxy S22 Ultra, OnePlus 10 Pro সহ অন্যান্য যে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলি ভার্চুয়াল র‌্যাম ফিচার সমর্থন করে, সেগুলিতে এই বৈশিষ্ট্যটি সক্রিয় করতে আপনাকে প্রথমেই ফোনের সেটিংস অপশনে গিয়ে ভার্চুয়াল র‌্যাম বিকল্পটি অনুসন্ধান করতে হবে। তারপর, বিকল্পটি খুঁজে পেলে তাতে ট্যাপ করে উক্ত ফিচার এনাবল করে দিন। আর জানিয়ে রাখি, এই ভার্চুয়াল র‌্যাম ফিচারের জন্য সাধারণত কোনো ডেডিকেটেড অপশন বাটন ‘মেনু-বারে’ দেওয়া থাকে না, তাই ফিচারটি এনাবল বা ডিজেবল করার জন্য প্রত্যেকবার আপনাকে সেটিংস অপশন ওপেন করতে হবে। আর জানিয়ে রাখি, ভার্চুয়াল র‌্যাম সক্রিয় করার পর, ফোনটি অবশ্যই রি-স্টার্ট করবেন। তবে আগেই বলে দিই যে, ইন্টারনাল স্টোরেজকে র‌্যামে রূপান্তর করার জন্য ডিভাইসটিতে পর্যাপ্ত স্টোরেজ স্পেস থাকা প্রয়োজন।

ভার্চুয়াল RAM ফিচারের সুবিধা কী?

ফোনের জন্য র‍্যাম একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি মূলত অ্যাপ কোড এবং ডেটার সমন্বয়ে নির্মিত। যেকোনো অ্যাপকে মেমরিতে লোড করা হয়ে থাকে এবং র‌্যাম একটি নির্দিষ্ট মেমরি অ্যাড্রেসে গিয়ে এই লোডিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। যাইহোক, যখন প্রচুর সংখ্যক অ্যাপ একসাথে ওপেন করা হয়, তখন ডিভাইসটি মেমরি সংরক্ষণের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড প্রোগ্রামগুলি বন্ধ করা শুরু করে দেয়। এক্ষেত্রে, ভার্চুয়াল র‌্যাম সিস্টেম, ফোনের ইন্টারনাল মেমরি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। যা ব্যাকগ্রাউন্ডে অধিক সংখ্যক অ্যাপ খোলার অনুমতি দেয়। একই সাথে, র‌্যাম সম্প্রসারণের কারণে ফোনে থাকা অ্যাপগুলি ‘স্মুথলি’ রানও করতে পারে।

প্রসঙ্গত, স্মার্টফোন নির্মাতা সংস্থাগুলি বিভিন্ন নামে ভার্চুয়াল র‌্যাম ফিচার অফার করে থাকে। যেমন, ওপ্পো (Oppo) এই ফিচারটিকে ‘মেমরি এক্সপেনশন টেকনোলজি’ (Memory Expansion Technology) নাম দিয়েছে। স্যামসাং (Samsung) আবার ‘র‌্যাম প্লাস’ (RAM Plus) নামে আখ্যায়িত করে এই বৈশিষ্ট্যকে। রিয়েলমি (Realme) সংস্থার ভাষায় এটি ‘ডায়নামিক র‌্যাম এক্সপেনশন’ (Dynamic RAM expansion) ফিচার। আর, ওয়ানপ্লাস (OnePlus) ‘র‌্যাম বুস্ট’ (RAM Boost) ও ‘টার্বো বুস্ট ৩.০’ (Turbo Boost 3.0) ট্যাগের সাথে ভার্চুয়াল র‌্যাম ফিচার অফার করে থাকে তাদের স্মার্টফোনে৷