Sim Swap: সিম কার্ডের মাধ্যমে অভিনব প্রতারণা, ৪০ জন কে ঠকিয়ে হাজতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া

অন্যের সিম কার্ড নিজের নামে পোর্ট করে লোক ঠকানোর ধান্দাটা বেশ ভালোই চলছিলো! কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হলো না। ৪০ জনের বেশী মানুষকে প্রতারণার পর অবশেষে আইনের হাতে ধরা পড়লো মার্কিন মুলুকের বাসিন্দা রিচার্ড ইউয়ান লি। অভিযুক্তের বয়স অবশ্য বেশী নয়। তার আপাত পরিচয় সে মার্কিন মুলুকের এক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিন্তু গত ২৬শে আগস্ট গ্রেপ্তারির পরে মুহূর্তের মধ্যে তার পুরনো পরিচয় অপরাধীর তকমায় বদলে গেলো। আগামীদিনে সে বড়োসড়ো শাস্তির মুখে পড়তে চলেছে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।

SIM Swap scam: প্রতারণার এক নতুন কায়দা

রিচার্ড ইউয়ান লি’র অপরাধ সম্পর্কে বিস্তারিত বলার শুরুতেই জানিয়ে রাখি যে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হলেও তার প্রতারণার কায়দা বেশ অভিনব। অনেকদিন ধরেই সে অপরাধের ব্যাপারে নিজেকে পোক্ত করেছে। প্রথমে অন্যের সিম কার্ড পোর্ট করে নিজের আয়ত্তে এনে সে আক্রান্তের পরিচয় সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাসিল করতো। আক্রান্ত ব্যক্তির ফোন নম্বরের উপরে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকার ফলে তার পক্ষে যে কোন ধরনের ডিজিটাল যাচাই পদ্ধতি অতিক্রম করা ছিলো মামুলি ব্যাপার। গোপন ব্যক্তিগত তথ্য ও পরিচয় কবজার পরে রিচার্ড আক্রান্তকে ব্ল্যাকমেল করা শুরু করতো। এরপর সমস্ত তথ্য সহ ফোন নম্বরের নিয়ন্ত্রণ সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আক্রান্তের কাছে মোটা টাকা পাঠানোর নির্দেশ পৌঁছে দেওয়া ছিলো তার শেষ কাজ। এভাবেই সে একের পর এক মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করেছে বলে জানা গেছে।

অন্যের নম্বর পোর্ট করার ক্ষেত্রে টেলিকম অপারেটর সংস্থাকে বোকা বানাতে রিচার্ড ছিলো সিদ্ধহস্ত! অত্যন্ত অনায়াসে সে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নতুন নম্বর হাসিল করতো। এরপরেই শুরু হতো তার আসল খেলা! নিজের পরিচয়কে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে ক্রমাগত রিচার্ডের ব্ল্যাকমেলিংয়ের চাপে শেষ পর্যন্ত আক্রান্তেরা ভেঙে পড়তেন। এভাবে ৪০ জনের বেশী মানুষের কাছ থেকে রিচার্ড গায়ের জোরে টাকা আদায় করেছে যারা তার সহনাগরিক। শুধু নগদ অর্থ নয়, একইসাথে সে আক্রান্তের ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট ফাঁকা করতো বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রেও হুমকি ও ভয় দেখানোর পন্থা ছিলো তার প্রধান হাতিয়ার।

২০১৮ সাল থেকে রিচার্ডের প্রতারণার ধান্দা দারুণ জমে ওঠে। সেই বছর অ্যাপলের (Apple) কাস্টোমার সার্ভিস থেকে প্রাপ্ত একটি iPhone 8 ডিভাইস ব্যবহার করে সে এতসব কাণ্ড ঘটিয়েছে! তবে শেষ পর্যন্ত তার জারিজুরি টিকলোনা। আপাতত মার্কিন মুলুকের পুলিশ তাকে হাজতে পুরেছে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জোর করে টাকা আদায়, কম্পিউটার জালিয়াতি ও অপব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে তার ২০ বছরের কারাদন্ড ও ২৫০,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন