AT&T: ১২ বছরের জেল, ২ মিলিয়ন ফোন আনলক করে কঠোর শাস্তির মুখে পাকিস্তানি ফাহাদ

হালফিল সময়ে, আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে প্রায়শই নানা ধরণের গর্হিত এবং জালিয়াতির ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বিভিন্নভাবে এই জাতীয় ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এবার, এই উদ্ভাবনগত জালিয়াতির দায়েই পড়শি দেশের নাগরিকের কপালে জুটল ১২ বছরের হাজতবাসের সাজা! দ্য ভার্জের রিপোর্ট অনুযায়ী, মুহাম্মদ ফাহাদ নামের পাকিস্তান তথা গ্রেনাডা নিবাসী এক ব্যক্তিকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি, জনপ্রিয় আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এটি-অ্যান্ড-টি (AT&T)-এর কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার ইন্সটল করে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন গ্রাহকদের ফোন আনলক করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কিভাবে লক্ষাধিক ফোন আনলকের কান্ড ঘটায় ফাহাদ?

রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ফাহাদ ফেসবুকে এক এটি-অ্যান্ড-টি কর্মচারীর সাথে যোগাযোগ করে এবং মোটা টাকার বিনিময়ে তার থেকে কোম্পানির ফোন আনলকের প্রতিশ্রুতি আদায় করে। এরপর ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সে একটি স্কিম শুরু করে যেখানে কোম্পানির ফোনগুলি গ্রাহকরা কম দামে কিনতে সক্ষম হন এবং এটি-অ্যান্ড-টি ছাড়াও অন্য কোম্পানির সিম ওই ফোনে ব্যবহার করা যাবে। ভুয়ো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, চালান ইত্যাদি সেট করে গোটা বিষয়টিকে বৈধ আকারে সবার সামনে রাখে ফাহাদ। এমনকি সে বেশ কিছু অনলাইন রিটেলারদের সাথেও এই স্ক্যাম পরিচালনার জন্য হাত মেলায়।

এরপর বিগত বছরগুলিতে জালিয়াতির ব্যবসা আরো এগিয়ে নিয়ে যায় ওই যুবক। পরবর্তী সময়ে ফ্রাঙ্ক ঝাংকে বোথেল নাম নিয়ে সে ওয়াশিংটনের বাজারেও নিজের জাল বিস্তার করে এবং একটি নতুন আনলকিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করে। আবার ইন্সটল করা ম্যালওয়্যারের সময়ের সাথে বিকাশ বা পরিবর্তন সাধন করার ক্ষেত্রেও কোনো কসুর রাখে না ফাহাদ।

সেক্ষেত্রে ৭ বছরের কাছাকাছি সময় ধরে প্রায় ২ মিলিয়ন সংখ্যক ফোন (যার দাম ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি) আনলক করার পর ২০১৮ সালে হংকংয়ে ধরা পড়ে ফাহাদ; ২০১৯-এ তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হয়। এর প্রায় দু বছর কেটে যাওয়ার পর এখন বিচারে তার অপরাধকে সাইবার জালিয়াতির আওতায় আনা হয়েছে এবং আদালতের বিচারে তাকে দীর্ঘ কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় কোনো গ্রাহকের ডেটা লঙ্ঘন বা অন্যান্য জালিয়াতির কোনো ব্যাপার ঘটেছে কিনা, তা জানা যায়নি।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন