এই সাইন দেখলেই বুঝবেন ফোন হ্যাক হয়েছে, কীভাবে বাঁচবেন

ফোন বা কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের খবর আমরা আকছার শুনে থাকি, এই ধরণের অযাচিত ঘটনা থেকে বারবার সবাইকে সাবধান থাকতেও বলা হয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানিনা যে কীভাবে এক শ্রেণীর মানুষ ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট কীভাবে হ্যাক করে, আর কীভাবেই বা হ্যাকিংয়ের ঘটনার থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন। সেক্ষেত্রে বলি, এই ডিজিটাল জীবনে আপনার স্মার্টফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট কোনো সম্পদের চেয়ে কম নয়। তাই হ্যাকাররা এগুলি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে। এর মধ্যে হ্যাকাররা হয় আপনার ফোনে ট্রোজান (Trojan) বা কী-লগিং (keylogging) জাতীয় সফ্টওয়্যার ইনস্টল করে নতুবা কোনো ফিশিং মেইল ​​ব্যবহার করে। এই পরিস্থিতিতে চোখ কান খোলা না রাখলেই দুরাভিসন্ধীদের ফাঁদে পড়েন স্মার্টফোন তথা ইন্টারনেট ইউজাররা।

Keylogging জিনিসটি আসলে কী?

কী-লগিং হল একধরণের স্পাইওয়্যার, এটি স্টকারের (নজরদারির) কাজ করে। আপনার ফোনে উপস্থিত এই ধরনের সফ্টওয়্যারের সাহায্যে হ্যাকাররা জানতে পারে আপনি কী টাইপ করছেন, ফোনের স্ক্রিনে কোথায় ট্যাপ করছেন কিংবা কার সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন। অন্যদিকে ট্রোজান হল এক শ্রেণীর ক্ষতিকারক ম্যালওয়্যার যাকে হাতিয়ার করে হ্যাকাররা আপনার ফোন থেকে ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ, ব্যক্তিগত তথ্য এবং আরও অনেক তথ্য চুরি করতে পারে। 

এইভাবেও করা হয় হ্যাকিং

সবচেয়ে সহজ এবং পরিচিত হ্যাকিংয়ের উপায় হল ফিশিং আক্রমণ। মাছ যেমন টোপ দিয়ে ফাঁদে ফেলে, ঠিক তেমনই হ্যাকাররা ফিশিং মেইল, অফার বা এসএমএসের নামে মানুষকে ফাঁদে ফেলে। এক্ষেত্রে তারা একটি মেইল ​​বা মেসেজে অজানা লিঙ্ক পাঠায় এবং কেউ এটিতে ক্লিক করার সাথে সাথে তার ফোনে ম্যালওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায়। বিপদের আরেকটি নাম ব্লুটুথ হ্যাকিং। এতে, পেশাদার হ্যাকাররা বিশেষ ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করে, দুর্বল ডিভাইস খুঁজতে থাকে। এমত পরিস্থিতিতে যদি আপনার ফোনের ব্লুটুথ সবসময় চালু থাকে, তাহলে হ্যাকাররা ৩০ ফুট দূর থেকেও ফোনটি হ্যাক করতে পারে। এছাড়া সিম কার্ড সোয়াপিংও হ্যাকিংয়ের একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি, যেখানে হ্যাকাররা আপনার নামে সিম অপারেটরকে কল করে এবং সিম প্রতিস্থাপনের দাবি করে আপনার তথ্য অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করে।

ফোন হ্যাক হওয়ার কিছু লক্ষণ

আপনি যদি মনে করেন যে কেউ আপনার ফোন হ্যাক করেছে, তাহলে কয়েকটি পদ্ধতিতে তা সহজেই যাচাই করা যাবে। কারণ এক্ষেত্রে কিছু সংকেত আপনার ফোনে দৃশ্যমান হবে। যেমন –

১. হ্যাক হলে আপনার ফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। 

২. আপনার স্মার্টফোন ধীর গতিতে (স্লো) কাজ করবে এবং শীঘ্রই গরম হয়ে যাবে। 

৩. হ্যান্ডসেটের অনেক অ্যাপ চলতে চলতে থেমে যাবে বা ফোন বন্ধ হয়ে নিজেই চালু হয়ে যাবে (পড়ুন রিবুট হবে)। 

৪. স্মার্টফোনে আপনার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডেটা খরচ হবে। এমনকি আপনি অতিরিক্ত এসএমএস এবং অন্যান্য চার্জ দেখতে পাবেন।

কীভাবে হ্যাকিংয়ের হাত থেকে বাঁচবেন?

আপনি যদি ইন্টারনেট বা স্মার্টফোনের জগতে নিজেকে নিরাপদ রাখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। এক্ষেত্রে হ্যাকিং থেকে বাঁচতে আপনার ফোনের সফ্টওয়্যার সবসময় লেটেস্ট ভার্সনে আপডেট করুন, আর শুধু ফোন নয় এতে ব্যবহৃত অ্যাপগুলিও আপডেট করতে থাকুন যাতে হ্যাকাররা কোনো ফাঁক-ফোকর না পায়। এছাড়া সর্বদা শক্তিশালী এবং অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। বিপদ এড়াতে চট করে পাবলিক ওয়াইফাই, চার্জিং স্টেশন ব্যবহার করবেননা। ক্লিক করবেন না কোনো অজানা লিঙ্কে (এমনকি যদি আপনার পরিচিত কেউ সেটি পাঠিয়ে থাকেন তাও)। তদুপরি, ব্যবহার না করলে ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই অপশন বন্ধ রাখুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *