Damon HyperFighter: ইলেকট্রিক বাইকের জগতে নতুন নক্ষত্র, 273 কিমি টপ স্পিড, 233 কিমি রেঞ্জ, দুর্দান্ত ডিজাইন

বৈদ্যুতিক যানবাহন হল ভবিষ্যত এবং শেষপর্যন্ত সকলকেই প্রথাগত জ্বালানির পরিবর্তে বিদ্যুতে চলা গাড়ি ব্যবহার করতে হবে৷ বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রযুক্তি, কার্যক্ষমতা, এবং নকশার ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি এসেছে, তা সত্যিই অবাক করার মতো৷ কিন্তু তার ঠিক বীপরিত প্রান্তে দাঁড়িয়ে বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেলের দুনিয়া৷ শক্তি বলুন কিংবা সর্বোচ্চ গতিসীমা, পেট্রোলচালিত মোটরসাইকেলের ধারেকাছে আসে না তারা৷ একইসাথে ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল এক চার্জে কতদূর দৌড়বে, সেই নিয়ে উদ্বেগ তো রয়েইছে৷ তবে ড্যামন হাইপারফাইটার (Damon HyperFighter)-এর ক্ষেত্রে এগুলি প্রযোজ্য নয়৷

লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শো (CES)-এর  ২০২২ সংস্করণে Damon HyperFighter লঞ্চ হয়েছে। যা কানাডার ইভি মেকার ড্যামন’র লেটেস্ট ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল। বাজারচলতি সাধারণ ব্যাটারিচালিত বাইকের সঙ্গে Damon HyperFighter-এর তুলনাই হয় না। নেকেড/স্ট্রিটফাইটার স্টাইল, পাওয়ার-প্যাকড পারফরম্যান্স, আধুনিক ফিচার এবং চোখধাঁধানো ডিজাইন যে কোনও প্রিমিয়াম পেট্রোল বাইককে লজ্জায় ফেলে দেবে।

ড্যামন ইলেকট্রিক বাইকের দুনিয়ায় যে সাড়া জাগাতে এসেছে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল ২০২২ সালের CES ইভেন্টে। দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের খতিয়ান দিয়ে সংস্থাটি সেখানে চোখ ফেরানো যাবে না এমন ডিজাইনের সঙ্গে হাইপারস্পোর্ট সুপারস্পোর্ট (Hypersport Supersport) ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল প্রদর্শন করেছিল। CES-এর তরফে বাইকটিকে ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। দু’বছর পর হাইপারস্পোর্ট যখন উৎপাদনের দোরগোড়ায়, তখনই তার উপর ভিত্তি করে তৈরি হাইপারফাইটার লঞ্চ করে চমকে দিল ড্যামন।

পরিবেশে একবিন্দু ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন না করেই যারা বাইক জোরে ছুটিয়ে অ্যাড্রিনালিন রাশ উপভোগ করতে চান, তাদের জন্যই Damon HyperFighter-এর আত্মপ্রকাশ। পরিবেশবান্ধব হাই-পারফরম্যান্স  ইলেকট্রিক স্পোর্টস বাইকটি তিনটি ভার্সনে লঞ্চ হয়েছে। যাদের সম্পর্কে নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল

ড্যামন হাইপারফাইটার স্পেসিফিকেশনস ও ফিচার্স (Damon HyperFighter Specs and Featues)

ড্যামন হাইপারফাইটার-এর তিনটি অবতার রয়েছে – আনলিমিটেড ১৫ (Unlimited 15), আনলিমিটেড ২০ (Unlimited 20), এবং কলোসাস (Colossus)।

ড্যামন হাইপারফাইটার আনলিমিটেড ১৫ ভার্সনে ১৫ কিলোওয়াট ক্ষমতার ব্যাটারি রয়েছে৷ ইলেকট্রিক মোটরের আউটপুট ১৫০ বিএইচপি। ব্যাটারি ফুল চার্জে ১৯৩ কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে৷ এবং সর্বোচ্চ গতি ঘন্টা প্রতি ২৪১ কিলোমিটার। আনলিমিটেড ২০ ভার্সনে আরও বড় ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে৷ এর ২০ কিলোওয়াট ব্যাটারি একটানা ২৩৩ কিলোমিটার পথ চলতে সক্ষম। টপ স্পিড ২৭৩.৫ কিমি/ঘন্টার আশেপাশে। ৩ সেকেন্ডে ০ থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ওঠে। কলোসাস ভার্সনেও ওই একই ড্রাইভট্রেন রয়েছে৷ বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেলের স্পিড ও পারফরম্যান্স সম্পর্কে ইতিমধ্যেই নতুন ধারনা পেয়েছেন নিশ্চয়? 

সবচেয়ে হাই-এন্ড ভার্সন হওয়ার সুবাদে কলোসাস-এ বাজারের সেরা সরঞ্জামগুলি ব্যবহার হয়েছে। এটি স্পোর্টি হুইল, সিঙ্গেল-সাইডেড সুইংআর্ম, ব্রেম্বো ব্রেক, এবং ওহলিন্স সাসপেনশন-সহ এসেছে। দুরন্ত গতিতে বাইক চালালে আরোহীর নিজের নিরাপত্তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়, যাতে দূর্ঘটনা না ঘটে। সে জন্য ড্যামন হাইপারফাইটার কলোসাল বিভিন্ন রাডার, সেন্সর, এবং ক্যামেরা দিয়ে সজ্জিত। যেগুলি বিপদ বুঝলে আগেভাগেই রাইডারকে সতর্ক করবে।

ড্যামন হাইপারফাইটার দাম ও লভ্যতা (Damon HyperFighter Price and Availability)

ড্যামন হাইপারফাইটার’র আনলিমিটেড ১৫ ও আনলিমিটেড ২০ ভার্সনের মূল্য যথাক্রমে ১৯,০০০ ডলার (প্রায় ১৪.১২ লক্ষ) এবং ২৫,০০০ ডলার (১৮.৫৭ লক্ষ)। অন্য দিকে, কলোসাল’র দাম ৩৫,০০০ ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২৬ লক্ষ টাকার বেশি। এখন আমেরিকায় গ্রাহকদের কাছ থেকে বাইকটির অর্ডার নেওয়া চলছে।

ড্যামন তাদের বিদ্যুৎচালিত মোটরসাইকেল নিয়ে কী ভারতে হাজির হবে? উত্তরটা হল ‘না’। কারণ ভারতে এই ধরনের বাইকের কোনও বাজার এখনও সৃষ্টি হয়নি। তবে সুদূর ভবিষ্যতের কথা বললে, সম্ভাবনা অবশ্যই উজ্জ্বল।