কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত, ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে ব্যবসা করবে Xiaomi? উত্তরে যা জানাল সংস্থা…

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED), শাওমি (Xiaomi) টেকনোলজি ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। আর দীর্ঘ তদন্তের পর উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ভারত সরকার আলোচ্য চীনা সংস্থাটির সম্পত্তি ফ্রিজ করে এবং স্থানীয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করে। যারপর গুজব উঠেছিল যে, Xiaomi হয়তো ভারত ছেড়ে এবার পাকিস্তানে ব্যবসা সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছে। যদিও Xiaomi, ‘সাউথ এশিয়া ইনডেক্স’ দ্বারা প্রকাশিত এই খবর অস্বীকার করেছে। শুধু তাই নয়, রিপোর্টটিকে ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলেও অভিহিত করেছে।

ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে গিয়ে ব্যবসা শুরু করার গুজব সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে জানালো Xiaomi

প্রকৃতপক্ষে, ‘সাউথ এশিয়া ইনডেক্স’ সম্প্রতি মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিল। যেখানে লেখা ছিল বিশেষ সূত্র মারফত তারা জানতে পেরেছে যে – “ভারত সরকার দ্বারা চীনা মোবাইল নির্মাতা শাওমির ৬৭৬ মিলিয়ন ডলার সম্পদ বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর, এদেশের ব্যবসা গুটিয়ে তা হয়তো পাকিস্তানে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি৷”

যদিও গতকাল ‘সাউথ এশিয়া ইনডেক্স’ এর এই টুইটের জবাবে শাওমি সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে – “এই টুইটটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। শাওমি, ২০১৪ সালে ভারতে ব্যবসা শুরু করেছিল। আর ভারতে আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আমরা মেক ইন ইন্ডিয়া ভাবনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে যাত্রা শুরু করি। যার দরুন এখন আমাদের ৯৯% স্মার্টফোন এবং ১০০% স্মার্ট টিভি ভারতে ও ভারতবাসীর দ্বারাই তৈরি হয়।” একই সাথে, “আমরা মিথ্যা খবর এবং দাবি প্রচার করতে দেব না, আর আমাদের সুনাম রক্ষা করার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেব” এমন মন্তব্যও শোনা যায় সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মুখে।

অন্যদিকে, কর্ণাটকের হাইকোর্ট শাওমি কর্পোরেশনের ৬৭৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদের উপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা সংস্থাটি মন্তব্য করেছে যে, হাইকোর্টের এই পদক্ষেপ ভারতীয় বাজারে তাদের অপারেশন বা কার্যক্রমকে “থামিয়ে দিয়েছে”।

প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) দাবি করেছিল যে, শাওমি রয়্যালটি মূল্যের নামে কোটি কোটি টাকা বিদেশে চালান করেছিল। শুধু তাই নয়, মোট তিনটি বিদেশি সংস্থার তহবিলে অবৈধভাবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল বলেও তদন্তে উঠে এসেছিল। যারপর, যাবতীয় প্রমাণের ভিত্তিতে আলোচ্য টেক ব্র্যান্ডটির সম্পদ এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি সিল করে দেওয়া হয়৷

যদিও উল্লেখিত প্রত্যেকটি অভিযোগই অস্বীকার করেছে শাওমি এবং কর্ণাটক হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছে যে ঘোষিত শাস্তিটি অভিযোগের সাথে “সম্পূর্ণভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ”। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, আদালত উক্ত সংস্থাটিকে সম্প্রতি তাদের মোট সম্পত্তির থেকে ৬৭৬ মিলিয়ন ডলার কভার করছে এমন একটি ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি প্রদান করতে বলেছিল। যার প্রত্যুত্তরে শাওমি, “এই ধরনের ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি জমা দেওয়া হলে সংস্থার জন্য কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা, দীপাবলির আগে ইনভেন্টরি ক্রয় করা সম্ভব হবে না” বলে জানিয়েছিল। বিশেষত এদেশে যখন আলোচ্য টেক ব্র্যান্ডটির বিক্রি দিনকেদিন বাড়ছে, তখন এই বিপুল পরিমান অর্থ ভারত সরকারের কাছে গ্যারান্টি স্বরূপ জমা দেওয়ার মানে ব্যবসা সচল রাখার পথে বাঁধা পরা। আর তাই চলতি বছরের প্রথম থেকেই শাওমি নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে আদালতের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার। এখন দেখার শাওমি নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারি কিনা।