ছোট গাড়ির ব্যবসা মার খাবে, কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল Maruti

দেশের বৃহত্তম যাত্রীবাহী গাড়ি নির্মাতা হওয়া সত্ত্বেও মারুতি সুজুকি (Maruti Suzuki)-র বেশিরভাগ মডেলের কম সুরক্ষার নিদর্শন বারবার সামনে এসেছে। গ্লোবাল NCAP-র ক্র্যাশ টেস্টে মুখ থুবড়ে পড়েছে সংস্থার একাধিক মডেল। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রের নির্দেশ মতো গাড়িতে ৬টি এয়ারব্যাগ দিতে বেঁকে বসেছে তারা। আইন তৈরি হওয়ার আগে ফের একবার কেন্দ্রের কাছে ৬টি এয়ারব্যাগের সিদ্ধান্ত বদলের আর্জি জানিয়েছে মারুতি সুজুকি। সংস্থার ধারণা ছোট যাত্রী গাড়িতে ছ’টি এয়ারব্যাগ মোটেই কার্যকর নয়।

এর আগেও মারুতি সুজুকির মুখে ৬টি এয়ারব্যাগ নিয়ে ভিন্ন মত শোনা গিয়েছিল। এর মুখ্য কারণস্বরূপ বলা হয়েছিল, ছ’টি এয়ারব্যাগ যুক্ত হলে গাড়ির দাম বৃদ্ধি পাবে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির এই চাপ মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের পক্ষে সামলানো কষ্টকর। আর তাই গাড়ির বিক্রি কমার আশঙ্কা থেকেই ৬টি এয়ারব্যাগ দেওয়ার নিয়মের বিরোধীতা করেছিল সংস্থাটি।

যদিও এই ঘটনার কিছুদিন পর কেন্দ্রীয় এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, “সুরক্ষার সাথে আপোষ নয়। মন্ত্রণালয় এই নিয়মটি কার্যকর করতে চলেছে, যার নির্দেশ আসতে কিছু সময় লাগবে।” আসলে Alto, WagonR, Swift, Baleno, Celerio ও SPresso – ছোট গাড়ির মধ্যে এই মডেলগুলির বিক্রি সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে WagonR, Swift দেশের সর্বাধিক বিক্রিত যাত্রী গাড়ি। ৬টি এয়ারব্যাগ যোগ হলে এগুলির দাম বাড়বে। ফলে বিক্রি কমার কারণে বাজারে নিজেদের স্থান হারানোর আশঙ্কা থেকেই সংস্থাটি বার বার কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাচ্ছি বলেই ধারণা।

এই প্রসঙ্গে সংস্থার চেয়ারম্যান আরসি ভার্গভ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, “ছোট গাড়ির দাম এক ধাক্কায় ২০,০০০-২৫,০০০ টাকা বাড়তে পারে। ছোট গাড়ির ক্রেতাদের জন্য যা অনেকটাই।” তিনি যোগ করেন, “আমার মনে হয় আমরা বিশ্বের মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে এটি করতে চলেছি… তাই একটি শিল্প সংস্থা হিসেবে আমাদের মনে হয় না ৬টি এয়ারব্যাগের নিয়ম জারির এটি উপযুক্ত সময়। আমরা সরকারের কাছে এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য আর্জি জানাচ্ছি।”

ভার্গভ বলেন গত কয়েক বছরে বিভিন্ন বিধি যেমন BS6-এর কারণে ছোট গাড়ির দাম বাড়াতে হয়েছিল। আবার সম্প্রতি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ২০২২-এ পরপর দুইবার গাড়ির দাম বাড়ানো হয়েছে। বারবার দাম বৃদ্ধি পেলে যে সমস্ত গ্রাহক দু’চাকার থেকে চার চাকার গাড়ি কেনার কথা ভাবছেন তাঁরা পিছপা হবেন। তিনি বলেন, “তাই ভয় ৬টি এয়ারব্যাগ দিলে ছোট গাড়ির বাজার ক্রমশ ছোট হয়ে আসবে।” প্রসঙ্গত, বর্তমানে এদেশে হ্যাচব্যাক গাড়ির সেগমেন্টে ৭০ শতাংশের অংশীদার মারুতি সুজুকি। এদের প্রতিপক্ষ সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে Hyundai Motor, Tata Motors, Honda, Renault।