NASA: শুধু পার্ক স্ট্রিট নয়, বড়দিনের খুশিতে সামিল প্রকৃতিও! মহাকাশে দেখা গেল তারার ক্রিসমাস ট্রি

সম্ভবত ২০২৩ সালের শেষ চমক! বড়দিনের আগে মহাকাশের নক্ষত্রমন্ডল রূপ নিল ক্রিসমাস ট্রির, আশ্চর্য ছবি শেয়ার করল NASA।

২০২৩ সাল শেষ হতে আর বেশিদিন বাকি নেই, বছরের শেষ বড় উৎসব বড়দিন বা ক্রিস্টমাসও আর মাত্র তিনদিন পর উদযাপিত হবে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এর প্রস্তুতি – এদেশের মানুষও খুশির জন্য নানারকম লাইট, ক্রিসমাস ট্রি, সান্টা টুপি ইত্যাদি কিনছেন। এমতাবস্থায়, আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা NASA এবার মহাকাশের এমন একটি বিশেষ ছবি শেয়ার করেছে, যা দেখে মনে হচ্ছে খোদ প্রকৃতিও এই উৎসবে সামিল হয়েছে। আসলে প্রায় প্রতিটি উৎসবেই ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পৃথিবীর সেলিব্রেশনের ছবি প্রকাশ্যে আনে, অনেক সময় এই ধরনের ভুয়ো ছবিও NASA-র নামে ভাইরাল হয়। সেক্ষেত্রে এবার সংস্থাটি অফিসিয়াল যে ছবি শেয়ার করেছে, তাতে মহাকাশে কিছু নক্ষত্রপুঞ্জের বর্ণ-আকৃতি দেখে এক ঝলকে ক্রিসমাস ট্রি (Xmas tree) মনে হতে পারে। আর এই দেখেই আশ্চর্য হচ্ছেন বিজ্ঞানীমহল থেকে শুরু করে নেটিজেনরা।

মহাকাশে তারার ঝাঁক যেন ক্রিসমাস ট্রি, তাজ্জব ছবি সামনে আনল NASA

অনন্ত মহাকাশ সবসময়ই মোহময় এবং রহস্যের ভাণ্ডার! সেক্ষেত্রে নাসার সাম্প্রতিক শেয়ার করা ছবিতে ‘NGC 2264’ নামে ছোট ছোট তারার একটি ক্লাস্টার বা গুচ্ছ দেখা গেছে, যা পৃথিবী থেকে ২.৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত কিন্তু তাদের উজ্জ্বলতা কার্যত ক্রিসমাস ট্রিয়ের মতো প্রতিকৃতি তৈরি করেছে। ছবিটি দেখলেই মনে হচ্ছে সবুজ পটভূমিতে সাদা এবং নীল তারাগুলি আদতে ক্রিসমাস ট্রির সজ্জা, এজন্য নাসা এই নক্ষত্রপুঞ্জটিকে ‘ক্রিসমাস ট্রি ক্লাস্টার’ নামও দিয়েছে।

এভাবে তারার অনন্য ছবি ক্লিক করেছে NASA

নাসা, তার চন্দ্র এক্স-রে (Chandra X-ray) অবজারভেটরির সাহায্যে নীল ও সাদা নক্ষত্রের ওই ঝাঁক থেকে নির্গত এক্স-রের ছবি ক্লিক করেছে। এক্ষেত্রে ছবিতে সবুজ রঙের গ্যাস নেবুলা বা নীহারিকাও দৃশ্যমান হয়েছে, যা এই ক্লাস্টারের একটি প্রধান অংশ। জানিয়ে রাখি, এই গ্যাসটি অবজারভেটরির ডব্লিউআইওয়াইএন (WIYN) ০.৯-মিটার টেলিস্কোপ ক্যাপচার যা ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন থেকে ফান্ড পায়। এদিকে, ফটোতে দৃশ্যমান বাকি সাদা তারাগুলি ‘টু মাইক্রন অল স্কাই’ সার্ভের অংশ, যা লোকেশন ম্যাপিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।

পেছনে আছে আরও গল্প

তবে তারামন্ডলকে তাদের আবেগ ক্রিসমাস ট্রির মতো দেখাতে স্পেস এজেন্সি, ছবিটিকে ঘড়ির কাঁটার দিকে প্রায় ১৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ ক্লাস্টারটি, স্বাভাবিক ফটোগ্রাফ থেকে ভিন্ন – ক্রিসমাস ট্রির অবিকল রং বহন করলেও বাস্তবে এটি আনুভূমিক আকৃতিতে মহাকাশে অবস্থান করে। ফলে এটি রোটেট করলে তবেই অবিকল ক্রিসমাস ট্রির মতো দেখতে লাগে এবং গাছের উপরের সদৃশ অংশও দৃশ্যমান হয়।

আশ্চর্যের ব্যাপার আরও আছে। জানা গিয়েছে যে, ওই তারাগুলি ছবিতে ক্ষুদ্র মনে হলেও সূর্যের আকারের চেয়েও বড় এবং তাদের বয়স ১০ লাখ থেকে ৫০ লাখ বছরের মধ্যে। যদিও কিছু নক্ষত্র খুব ছোট, সূর্যের আয়তনের এক দশমাংশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যেহেতু নক্ষত্রের আয়ুষ্কাল সীমা বিলিয়ন বছর, তাই এই কাল্পনিক ক্রিসমাস ট্রি ক্লাস্টারটি দীর্ঘ সময়ের জন্য মহাকাশে দেখা যাবে।