World Photography Day: এই দশটি স্মার্টফোন বদলে দিয়েছে মোবাইল ফটোগ্রাফির সংজ্ঞা

আজকালকার দিনে স্মার্টফোন যেমন মানব জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে গেছে, তেমনই মোবাইল ফটোগ্রাফি এখন অধিকাংশের শখ বা নেশায় পরিণত হয়েছে। এখন ভালো ছবি তোলার জন্য DSLR (ডিএসএলআর) বা দামী ক্যামেরা সাথে বয়ে বেড়াতে হয় না, পকেটে থাকা একটু বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল থেকেই দুর্দান্ত ছবি তোলা এবং ভিডিও রেকর্ড করা যায়। তারপর ইচ্ছামত সেটি একটু এডিট করে নিলেই ব্যস! বর্তমানে বেশির ভাগ স্মার্টফোনেই নূন্যতম ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা দেখা যায়, যদিও ‘ফটোগ্রাফার’ ইউজারদের কথা ভেবে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ১০৮ মেগাপিক্সেল বা আরো উচ্চ রেজোলিউশনের ক্যামেরা ফোনে অ্যাটাচ করে চলেছে। তবে জানেন কি, মোবাইল ক্যামেরা থেকে ভালো ছবি তোলার ক্ষেত্রে শুধু বেশি মেগাপিক্সেলই শেষ কথা নয়! আসলে এখনকার স্মার্টফোন ক্যামেরায় বিশেষ কিছু অপশন ইনবিল্ট অবস্থায় থাকে; আর এই ফিচারগুলিই স্মার্টফোনের ক্যামেরার হাল বদলে দিয়েছে।

এখন আপনি নিশ্চয় ভাবছেন যে ঠিক কী কী ফিচার রয়েছে মোবাইল ক্যামেরার ভালো ছবির পেছনে? আর কীভাবেই কী-প্যাড মোবাইলের সেই অস্পষ্ট ক্যামেরা থেকে আদর্শ ছবি তোলার বিকল্প হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন ক্যামেরা? তাহলে আসুন, আজ বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস উপলক্ষে জেনে নিই মোবাইল ক্যামেরায় চমক আনা ১০টি বিষয়ের খুঁটিনাটি।

এই ফিচারগুলিই মোবাইল ক্যামেরাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে

১. ইমেজ স্টেবিলাইজেশন (Image stabilization): এই আধুনিক প্রযুক্তিটি মোবাইল ক্যামেরার ভালো আউটপুটের অন্যতম কারণ। ২০০৭ সালে লঞ্চ হওয়া LG Viewty (এলজি ভিউটি) ফোনে প্রথমবার ইমেজ স্টেবিলাইজেশন ব্যবহার করে এলজি।

২. নাইট মোড (Night Mode): আপনারা প্রায় সবাই জানেন যে, এই ফিচারটি ইউজারদের অন্ধকার পরিস্থিতিতেও ভালো ছবি ক্লিক করতে দেয়। বর্তমানে, প্রায় সমস্ত স্মার্টফোনে উন্নত ছবি তুলতে সাহায্যকারী এই ফিচারটি পাওয়া যায়, কিন্তু Huawei P30 (হুয়াওয়ে পি৩০) ছিল এই ফিচার অফার করা প্রথম স্মার্টফোন। পরবর্তীতে গুগল (Google) এবং অ্যাপল (Apple) যথাক্রমে নাইট সাইট এবং নাইট মোড চালু করে।

৩. পোর্ট্রেট মোড (Potrait Mode): ডিএসএলআরের মত ছবির এফেক্ট দেওয়ার জন্য (পড়ুন, ছবিতে অবাঞ্ছিত জিনিসগুলিকে ঝাপসা করে মূল জিনিসে ফোকাস করার জন্য) HTC One M8 স্মার্টফোনে প্রথমবার এই ফিচার চালু হয়। আর এখন তো অধিকাংশ স্মার্টফোন ইউজারদের কাছেই পোর্ট্রেট মোড একটি জনপ্রিয় ফিচার।

৪. হাইব্রিড জুম (Hybrid Zoom): জনপ্রিয় চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা ওপ্পো (Oppo) প্রথম ব্র্যান্ড যারা দূরবর্তী বিষয়গুলি জুম করে ছবি তোলার জন্য ১০এক্স (10x) হাইব্রিড জুম চালু করে। তবে, Samsung Galaxy S20-এর সাথে এই ফিচার প্রথমবার ব্যবহার করা সম্ভব হয়।

৫. পিক্সেল বিনিং (Pixel binning): পিক্সেল বিনিং প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ক্যামেরার হাই রেজোলিউশন সেন্সর কম সুপারপিক্সেলে ছবি তুলতে, একাধিক পিক্সেল ক্যাপচার করে। এতে আকর্ষণীয় ছবি ওঠে। সেক্ষেত্রে বলি, Nokia 808 PureView নামক কিংবদন্তী ফোনে প্রথম পিক্সেল বিনিংয়ের ধারণা প্রবর্তিত হয়েছিল।

৬. এইচডিআর (HDR): এই প্রযুক্তিটি বিগত কয়েক বছর ধরে মোবাইল ফটোগ্রাফির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্তু, স্মার্টফোন ক্যামেরায় এই অপশনের ব্যবহার বেড়ে যায় যখন গুগল প্রথমবার Pixel XL-এর সাথে এইচডিআর+ চালু করে।

৭. সুপার-স্লো মোশন (Super-slow motion): এখন প্রত্যেকেই হাতের ফোন ব্যবহার করে, তাদের পোষা প্রাণী বা কোনো মুহূর্তের স্লো-মোশন ভিডিও ক্যাপচার করেন এবং সেটি উপভোগ করেন। তবে এই ফিচারটি সোনি (Sony) প্রথম তার Xperia XZ স্মার্টফোনে চালু করে।

৮. র (RAW) ইমেজ: ফোনে সাধারণত জেপিইজি (JPEG) ফরম্যাটে ছবি ক্লিক হয়। তবে নোকিয়া (Nokia)-র Lumia 1520 স্মার্টফোন প্রথমবার ‘র’ বা অপরিশোধিত ছবি তোলার এবং তা পরে এডিট করার সুযোগ দেয়।

৯. ডলবি ভিশন (Dolby Vision): এই ফিচার ছবিতে আসল রং এবং উচ্চ গুণমান দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে মোবাইলে ডলবি ভিশন ছবি ক্যাপচার করার এবং সেই কন্টেন্ট প্রদর্শন করার সুবিধা প্রথমবার Apple iPhone 12 সিরিজে উপলব্ধ হয়েছিল।

১০. ম্যাজিক ইরেজার (Magic Eraser): Google Pixel 6 সিরিজে প্রথমবার প্রবর্তিত এই ফিচারটি মোবাইলের কোনো ছবি এডিটের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইউজারদের কোনো ছবি থেকে বস্তু, মানুষ ইত্যাদি মুছে ফেলতে সাহায্য করে।