Free Fire অনলাইন গেমে ৪০,০০০ টাকা অপচয় করে আত্মহত্যা করল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র

অনলাইন গেমের প্রতি তরুণ প্রজন্মের আসক্তির কথা আমাদের কারোরই অজানা নয় এবং এই আসক্তিকে কেন্দ্র করে হাজারো দুর্ঘটনার খবর প্রায়শই আমরা খবরে দেখতে পাই। সম্প্রতি এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ছত্রপুর জেলায়। অনলাইন গেমে ৪০,০০০ টাকা হারানোর পর চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছে ১৩ বছরের এক কিশোর। কৃষ্ণ নামের এই ছেলেটি স্কার্ফ ব্যবহার করে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। ছেলেটি একটি সুইসাইড নোট রেখে গেছে, যেখানে সে জানিয়েছে যে একটি অনলাইন গেমে টাকা হারানোর পরে সে এই চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে।

কৃষ্ণ, ছত্রপুরের একটি বেসরকারী স্কুল নীভ একাডেমিতে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা একটি প্যাথলজি ল্যাব চালান এবং মা রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত একজন নার্স। যখন তাঁরা কেউই বাড়িতে ছিলেন না, তখন ছেলেটি এই চরম পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ডেপুটি পুলিশ সুপার (DSP) শশাঙ্ক জৈন জানিয়েছেন, ওই কিশোর সুইসাইড নোটে লিখেছে যে, সে তার মায়ের UPI অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০,০০০ টাকা তুলেছে এবং Free Fire গেমে পুরো টাকাটা অপচয় করেছে। এর জন্য সে তার মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যা করছে বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, কৃষ্ণের মায়ের ফোনে এই আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে অ্যালার্ট আসার পরে তিনি তাকে ফোনে বকাঝকা করেন। এরপর কৃষ্ণ নিজেকে একটি ঘরের ভিতরে বন্দি করে ফেলে। কিছু সময় পরে, তার বড়ো বোন দেখতে পায় যে সে দরজা খুলছে না এবং তার বাবা-মাকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করে। তারপর পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ছেলেটিকে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।

অনলাইন গেমের প্রতি চরম আসক্তির বলি হওয়ার এরকম মর্মান্তিক ঘটনা যে এই প্রথম ঘটল তা নয়। এই বছরের জানুয়ারিতে মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার ধানা শহরে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে Free Fire গেমের প্রতি প্রবল আসক্তির কারণে বাবা মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় ১২ বছরের এক বালক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। এই বয়সে গেমের প্রতি বাচ্চাদের দুর্বলতা যে থাকবে সেটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু এই প্রবল ও অনিয়ন্ত্রিত আসক্তির বিষয়টিকে যথাযথভাবে দৃষ্টিগোচর করে যে-কোনো অনলাইন গেম খেলার নিয়মাবলী সম্পর্কে যদি প্রশাসন তথা অভিভাবকরা যথাযথ কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন, তাহলে এভাবেই হয়তো আরও অনেক নিরীহ বাচ্চাকে অকালে প্রাণ হারাতে হবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন