PhoneSpy: গোপনে ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করতে পারে, বিপজ্জনক ২৩টি স্পাইওয়্যার অ্যাপের খোঁজ মিলল

সম্প্রতি গবেষকরা একটি নতুন স্পাইওয়্যারের সন্ধান পেয়েছেন যা আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে টার্গেট করে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার চেষ্টা করতে পারে। ফোনস্পাই (PhoneSpy) নামক এই নতুন স্পাইওয়্যারটি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে হানা দিয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন যে, এই স্পাইওয়্যারটি কোনো ডিভাইসের বিদ্যমান ভালনারেনিলিটিগুলিকে কাজে লাগায় না, বরং একটি বৈধ অ্যাপ্লিকেশনের ছদ্মবেশ ধারণ করে ফোনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।

মোবাইল সিকিউরিটি ফার্ম Zimperium-এর গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে,ফোনস্পাইকে প্রায় ২৩টি অ্যাপের ভিতরে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা হুবহু অন্যান্য বৈধ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মতোই দেখতে। তাই ইউজারদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হওয়ার কোনো অবকাশই নেই। ক্ষতিকারক এই স্পাইওয়্যার মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই হানা দিয়ে থাকে, এবং খুব সহজেই আক্রান্তের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে তা হ্যাকারদের সরবরাহ করে।

তবে এখানেই কিন্তু শেষ নয়! গবেষকদের মতে, আক্রান্তের ব্যক্তিগত ডিটেলস চুরি করার চাইতেও আরও অনেক বড়ো ক্ষতি করতে পারে এই স্পাইওয়্যার। ফোনস্পাই যে ফোনটিকে টার্গেট করে, তার ক্যামেরা অ্যাক্সেস করতে পারে এবং ব্যবহারকারীর অজান্তেই ছবি তুলতে এবং রিয়েল টাইমে ভিডিও রেকর্ড করতে এটি ব্যবহার করতে পারে। এই ছবি এবং ভিডিওগুলি ব্ল্যাকমেল করার একটি উপায় হতে পারে, তবে এগুলি সাইবার গুপ্তচরবৃত্তি করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যা নিঃসন্দেহে যথেষ্ট চিন্তা এবং ভয়ের কারণ।

যদিও অযথা ভয় না পেয়ে একটু সতর্ক থাকলেই কিন্তু ইউজাররা তাদের হ্যান্ডসেটে ফোনস্পাই-এর অস্তিত্ব আছে কি না তা জানতে সক্ষম হবেন। ফোনস্পাই দ্বারা আক্রান্ত অ্যাপগুলি অতিরিক্ত অন-ডিভাইস পারমিশন চায়। তাই যদি ইউজাররা ভুলবশত এই জাতীয় সংক্রামিত অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলেন, তাহলে এই অতিরিক্ত পারমিশন দেখেই তাদের আঁচ করে ফেলা উচিত যে তাদের ফোনে স্পাইওয়্যারের আগমন ঘটেছে। কিন্তু কোনোভাবে তারা যদি বুঝতে না পারেন এবং এই পারমিশনগুলি দিয়ে ফেলেন, তাহলে ফোনস্পাই চুপিসারে ব্যবহারকারীদের যাবতীয় ব্যক্তিগত ডিটেলস সংগ্রহ করে হ্যাকারদের কাছে পাঠাতে থাকবে। Zimperium-এর এক গবেষক রিচার্ড মেলিক (Richard Melick) জানিয়েছেন, যেহেতু ফোনস্পাই দ্বারা আক্রান্ত অ্যাপগুলিকে অ্যাপ মেনুতে দেখা যায় না, তাই এই স্পাইওয়্যারের কাজে বাধা দেওয়ার কোনো উপায়ই ব্যবহারকারীদের কাছে নেই।

তবে PhoneSpy এখনও Google Play Store-এ প্রবেশ করতে পারেনি। এটি Android-এর অন্যান্য অ্যাপ মার্কেটপ্লেসের ভিতরেও পাওয়া যায়নি। কিন্তু গবেষকদের মতে, ওয়েব ট্র্যাফিক রিডাইরেকশন বা সামাজিক প্রকৌশলের (social engineering) উপর ভিত্তি করে ডিসট্রিবিউশন মেথডের মাধ্যমে স্পাইওয়্যারটি ফোনে ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাই এই স্পাইওয়্যারের হাত থেকে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকতে আমরা সকল পাঠকদের যথাযথ অগ্রিম সতর্কতা অবলম্বন করতে বলবো।