5G: আগামী বছরের দ্বিতীয় অর্ধে ভারতে চালু হতে পারে ৫জি, জানালেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব

বর্তমান সময়ে উন্নত টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে দৈনিক একঘেঁয়ে জীবনে দ্রুততা এবং নতুনত্ব আনতে চাইছে সবাই। আর এর জন্য যে জিনিসটি ব্যবহারের কথা সকলের মাথায় প্রথম আসছে, তা হল দ্রুতগতির ইন্টারনেট। কারণ ইদানীংকালে, বিশেষত করোনা মহামারির পর থেকেই মানুষের জীবন হয়ে গেছে অনলাইন নির্ভর। তাই দ্রুত ইন্টারনেট ব্যবহারের লোভ সামলাতে পারছে না অনেকেই। এই কারণেই অধীর আগ্রহে ভারতীয় জনগণ পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রবর্তনের প্রত্যাশা করে চলেছেন। এই মুহূর্তে ভারতের অধিকাংশ মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন – কবে চালু হবে ৫জি (5G)?

এই প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী (Communications and IT Minister) অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw) জানিয়েছেন যে, আগামী বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে পরবর্তী প্রজন্ম বা ৫জি এয়ারওয়েভ এবং নেটওয়ার্ক রোলআউটের নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি জানিয়েছেন, সেক্টর রেগুলেটরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাবতীয় প্যারামিটার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে তবেই এই নিলাম প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মাসগুলিতে এর জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় পরীক্ষামূলক কার্যাবলি শুরু করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই উদ্দেশ্যকে সফল করতে TRAI ইতিমধ্যেই একটি কনসালটেশন প্রসেস ইস্যু করেছে। যত তাড়াতাড়ি এই প্রসেসের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হবে, তত তাড়াতাড়ি এই বিষয়টি সংক্রান্ত সমস্ত প্যারামিটারগুলির সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভবপর হবে। আর এই সকল কাজগুলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়ে গেলে ২০২২ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৫ জি সার্ভিসের নিলাম এবং রোলআউটের কাজ তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে।

উল্লেখ্য যে, এর আগে বুধবার টেলিকম রেগুলেটর অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) একটি কনসালটেশন প্রসেস শুরু করেছে, যা ১০টি ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড জুড়ে বেস প্রাইস চূড়ান্ত করার দিকে মনোনিবেশ করবে, যা ভারতে ৫জি পরিষেবার বাণিজ্যিক উদ্বোধনে সহায়তা করবে। ট্রাই ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে স্টেকহোল্ডারদের মতামত এবং ১১ জানুয়ারির মধ্যে পাল্টা মতামতের (counter views) প্রতীক্ষায় রয়েছে। টেলিকম রেগুলেটর আসন্ন এয়ারওয়েভ বিক্রি সম্পর্কিত বিষয়গুলি, যেমন – রিজার্ভ প্রাইস, ব্যান্ড প্ল্যান, ব্লক সাইজ, স্পেকট্রামের কোয়ান্টাম সম্বন্ধীয় বিষয়গুলি সম্পর্কে স্টেকহোল্ডারদের মতামত চেয়েছে।

অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও জানিয়েছেন যে, দেশে ৫জি পরিষেবা চালু হওয়ার সাথে সাথে নেটওয়ার্কের গতি, ডেটার গুণমানের পাশাপাশি দেশে ডাউনলোড এবং আপলোডের স্পিড উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। তাঁর মতে, ভারতে ৫জি পরিষেবা চালু করার মূল লক্ষ্য হল বৈদেশিক নির্ভরতা দূর করা, এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর কেন্দ্রিক মতাদর্শকে সামনে রেখেই এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে ৫জি চালু হলেও তা গ্লোবাল স্কেলে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কতটা প্রতিযোগিতা করতে পারবে সে সম্পর্কেও একাধিক প্রশ্ন সামনে আসছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, ৫জি পরিষেবা যথাযথভাবে প্রদান করার মত সিস্টেম আমাদের দেশে উপলব্ধ নয়। উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি টেলিকম কোম্পানি দেশে ৫জি ট্রায়াল শুরু করেছে এবং বেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। তবে সম্পূর্ণভাবে ভারতে ৫জি রোলআউট হলে অন্যান্য দেশের তুলনায় তা কতটা সাফল্য পাবে, তার জন্য এখনও আমাদের কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।