করোনা ছড়াচ্ছে 5G প্রযুক্তি? কি জানালো সেলুলার অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া

5G প্রযুক্তি শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা সৃষ্টির এবং কোভিড-১৯ (COVID-19)-এর বিস্তারের অন্যতম সম্ভাব্য কারণ— আপনাকে যদি কেউ এই কথা বলে বা আপনি যদি এমন কোনো মেসেজ পান যেখানে এই কথা বলা আছে, তাহলে খবরদার সেগুলি বিশ্বাস করবেন না। এই কথাগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের খবর অহরহ পাওয়া যাচ্ছে। আর তাই দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা গুজব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে, শুক্রবার ভারতীয় টেলিযোগাযোগ শিল্পের প্রতিনিধি সংস্থা সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (COAI), সকল নাগরিককে এই জাতীয় খবরের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার আর্জি জানিয়েছে।

COẠI-এর ডিরেক্টর জেনারেল ডঃ এস পি কোছার (লেফটেন্যান্ট জেনারেল) সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি যে, এই গুজবগুলি একেবারে মিথ্যা। আমরা জনগণকে এই জাতীয় ভিত্তিহীন ভুল তথ্যের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই ৫জি নেটওয়ার্ক চালু করেছে এবং লোকেরা নিরাপদে এই পরিষেবাগুলি ব্যবহার করছে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে, ৫জি প্রযুক্তি এবং কোভিড-১৯-এর মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা টেলিযোগাযোগ বিভাগকে (DoT) আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি, এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের অবহিত করেছি। আমি সকল নাগরিকদের এই ভুয়ো বার্তাগুলি থেকে সাবধান থাকার আবেদন জানাচ্ছি। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়লে তবেই এই জাতীয় খবর ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হবে।”

সম্প্রতি DoT (ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশন) Reliance Jio, Airtel, Vodafone Idea এবং রাষ্ট্রায়ত্ত MTNL- এই টেলিকম সংস্থাগুলিকে দেশে ৫ জি ট্রায়াল শুরু করার অনুমতি দেওয়ায় এই খবর আরও ছড়িয়ে পড়ছে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে জানিয়ে রাখি, বর্তমানে ভারতে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ৫জি স্পেকট্রামের নিলাম এই বছরের পরিবর্তে ২০২২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সম্প্রতি জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, অতীতে WHO (ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগ্যানাইজেশন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) একাধিক বার বলেছে যে, ওয়্যারলেস প্রযুক্তির সংস্পর্শের সাথে স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে তা যুক্তরাজ্যের (UK) মতো বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অনলাইনে প্রাপ্ত ভুল তথ্যের কারণে ৫জি টাওয়ার পুড়িয়ে ফেলা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। কোভিড মহামারীর শুরুতেই যুক্তরাজ্যে একই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণার ফলে মানুষ ৫জি মোবাইল টাওয়ার পুড়িয়ে দেয়। এই ধরনের ভুয়ো খবর এবং অবৈজ্ঞানিক দাবি যুক্তরাজ্যের টেলিকম অপারেটরদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছিল। কারণ তাদের শুধুমাত্র এই মিথ্যা গুজবের সঙ্গে লড়াই করতেই হয়নি, সাথে সাথে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য ভাঙ্গা টাওয়ারগুলিকে পুনরায় নির্মাণ করতে হয়েছে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও অনেক অ্যান্টি-৫জি প্রযুক্তি গোষ্ঠী বিদ্যমান, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে জনগণকে ভুল পথে চালিত করে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন