শুধু প্লে স্টোর থাকবে, ভারতে Android ফোন সারা বিশ্বের থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে

ভারতীয় স্মার্টফোনগুলি অন্যান্য দেশের থেকে ভিন্ন Android অভিজ্ঞতা অফার করবে

গুগল (Google) দ্বারা ডেভেলপ করা অ্যান্ড্রয়েড হল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। বিশ্বের শত শত ইলেকট্রনিক্স নির্মাতার তৈরি কোটি কোটি ডিভাইস অ্যান্ড্রয়েডের ওপর ভিত্তি করে চালিত হয়। সেই কারণে এই অপারেটিং সিস্টেমের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর জন্য একই রকম, কিন্তু বর্তমানে অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (OEM)-দের সাথে একটি চুক্তির কারণে গুগলকে ভারতে তাদের অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে একাধিক পরিবর্তন করতে হয়েছে। আসুন এসম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

ভারতীয় স্মার্টফোনগুলি অন্যান্য দেশের থেকে ভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড অভিজ্ঞতা অফার করবে

একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে আসা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে এবার থেকে গুগল মোবাইল সার্ভিসেস (GMS)-এর একটি নয়া সংস্করণ থাকবে, যেখানে গুগল অ্যাপগুলি ঐচ্ছিক হিসেবে পাওয়া যাবে। অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (OEM) এবং গুগলের মধ্যে নতুন ইন্ডিয়ান মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডিস্ট্রিবিউশন এগ্রিমেন্ট (IMADA)-এর কারণে এদেশে শুধুমাত্র গুগল প্লে স্টোর ইনস্টল করার প্রয়োজন হবে, অন্যান্য দেশের বাজারে স্ট্যান্ডার্ড এগ্রিমেন্ট দ্বারা বাধ্যতামূলক ১১টি মূল গুগল অ্যাপের পরিবর্তে৷ তবে, গুগল স্মার্টফোন নির্মাতাদের জন্য “পার-অ্যাপ বাউন্টি” অফার করবে, যারা এই ১১টি অ্যাপের যেকোনো একটি প্রি-ইনস্টল হিসেবে ডিভাইসে রাখবে।

এছাড়াও, আরও কয়েকটি কারণে আইএমএডিএ অন্যান্য বাজারের থেকে আলাদা। এই চুক্তি অনুসারে, ভারতে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন নির্মাতাদের আর ফোনের প্রধান স্ক্রিনে গুগল সার্চ বার, গুগল অ্যাপ ফোল্ডার বা প্লে স্টোর আইকন অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন নেই। এমনকি, চুক্তিটি ভারতীয় ব্যবহারকারীদের সেটআপ প্রক্রিয়া চলাকালীন তাদের ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন বেছে নেওয়ার অনুমতি দেবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনের মতো, ভারতে এই বিকল্পটি ২০২৩ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে উপলব্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানিয়ে রাখি, এই বদলগুলি শুধুমাত্র ভারতে বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনগুলিতে প্রযোজ্য হবে। এই পরিবর্তনগুলির প্রবর্তন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, কেননা এটি দেখায় যে গুগল বিভিন্ন বাজারের নির্দিষ্ট চাহিদা মেটাতে তাদের প্রোডাক্ট এবং পরিষেবাগুলিতে সমন্বয় করতে ইচ্ছুক। এটিকে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য একটি ইতিবাচক ডেভেলপমেন্ট বলা যায়, কারণ গুগল দেশীয় নিয়ন্ত্রকদের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক এবং সেই অনুযায়ী তাদের পণ্য ও পরিষেবাগুলি প্রস্তুত করতে আগ্রহী হয়েছে৷

যদিও, আইএমএডিএ সংক্রান্ত পরিবর্তনগুলি এখনও গুগল দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। তবে, এই রিপোর্টটি ভারতের প্রযুক্তি শিল্পের সাম্প্রতিক উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটা সকলেরই জানা যে, চীনের পর ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার এবং গুগলের মতো কোম্পানিগুলিকে অবশ্যই বাজারে থাকার জন্য ভারতীয় নিয়ন্ত্রকদের সাথে কাজ করতে হবে। তবে, ভবিষ্যতে এই উন্নয়নের কারণে ভারত এবং মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাটির মধ্যেকার ব্যবধান ঘুচবে কিনা, তাই এখন দেখার।