SMS Scam: সরকারের নামে আসছে ফোন সুরক্ষিত রাখার এই মেসেজ, পেলে এড়িয়ে যান!

বর্তমান ‘ডিজিটাল’ জীবনে সাইবার জালিয়াতি কথাটার সঙ্গে কমবেশি সকলেই পরিচিত। নানা অছিলায় ইউজারদেরকে প্রতারিত করে হ্যাকাররা তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে লাখ লাখ টাকা গায়েব করে দিচ্ছে – এমন খবর চলতি সময়ে সংবাদমাধ্যম বা নেটপাড়ায় প্রায়শই ঘোরাফেরা করে। আর এই কাজে স্ক্যামারদের মূল অস্ত্র হল ভুয়ো এসএমএস (SMS) বা ফোন কল। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দুটি বিষয়কে কাজে লাগিয়ে হ্যাকারদের মস্তিষ্কপ্রসূত নানা রকমের দুর্বুদ্ধির শিকার হচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ; প্রতিনিয়তই এমন জালিয়াতির ঘটনার সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এবার সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, ইউজারদেরকে প্রতারিত করতে হ্যাকাররা এখন একটি নয়া পন্থাকে হাতিয়ার করেছে। তারা ব্যবহারকারীদের একটি এসএমএস পাঠাচ্ছে যাতে বলা থাকছে যে, সংশ্লিষ্ট ইউজারের ফোনে ভাইরাস রয়েছে এবং এই সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে গ্রাহকদের (গতানুগতিকভাবে) মেসেজে উল্লিখিত একটি লিঙ্কে ক্লিক করতে বলা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আপনার ফোনেও যদি এই ধরনের কোনো মেসেজ এসে থাকে, তাহলে জেনে রাখুন যে সেটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। তাই এই ধরনের কোনো মেসেজ এলে অবশ্যই এড়িয়ে চলুন…

ফোনে ভাইরাস থাকার নামে ইউজারদের ফিশিং লিঙ্কে ক্লিক করতে বাধ্য করছে হ্যাকাররা

সম্প্রতি রোশন কুমার নামের এক টুইটার ইউজার এই নতুন ঘটনাটির উপর থেকে পর্দা সরিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, টেলিযোগাযোগ বিভাগের নামে ইউজারদের চলতি সময়ে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠাচ্ছে হ্যাকাররা, যেখানে তাদের ফোনে ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এবং শুরুতেই বলেছি, এই সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তাদেরকে একটি লিঙ্কে ক্লিক করতে বলা হচ্ছে যেমনটা অন্যান্য স্ক্যামে করা হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, আপাতদৃষ্টিতে মেসেজটিকে দেখলে মনেই হবে না যে সেটি ভুয়ো; তাই ইউজারদের মনেও বিন্দুমাত্র সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে না।

রোশন তার টুইটে নিজেও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নামে একটি মেসেজ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রাপ্ত এসএমএসটিতে লেখা ছিল যে, তাঁর ফোন ম্যালওয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে; তাই এই সমস্যাটি দূর করতে হলে তাকে অবশ্যই cyberswachhtakendra.gov.in ওয়েবসাইটটি ভিসিট করতে হবে। কিন্তু আসলে ব্যাপারটি হল, উক্ত ওয়েবসাইটটি একটি ফিশিং লিঙ্ক যাতে ক্লিক করা মাত্রই ইউজারদের পার্সোনাল ডেটা চুরি করতে সক্ষম হবে হ্যাকাররা। আর এর ফলাফল সম্পর্কে নিশ্চয়ই আর আলাদা করে কাউকে কিছু বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে এমনিতে এই মেসেজটি প্রকৃতপক্ষেই অথেন্টিক বলে মনে হতে পারে, কেননা সরকার সত্যি সত্যিই বর্তমানে একটি সাইবার স্যানিটেশন প্রকল্প চালাচ্ছে। তাই ইউজারদের চোখকান খোলা রেখে চলা একান্ত আবশ্যক।

কীভাবে বুঝবেন ফোনে আসা মেসেজটি আদতে ভুয়ো কীনা?

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, সরকার যে সাইবার স্যানিটেশন প্রকল্প পরিচালনা করে তার কাজ হল মানুষকে বটনেট সম্পর্কে অবহিত করা। কারণ বিভিন্ন বটনেট, ইউজারদের ডিভাইসগুলির ক্ষতি করতে পারে। উক্ত প্রকল্পটি ভারত সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ, যা ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়টি হল, সরকার যে সাইবার স্যানিটেশন প্রকল্পটি চালাচ্ছে তার ওয়েবসাইট csk.gov.in। কিন্তু হ্যাকারদের পাঠানো মেসেজে cyberswachhtakendra.gov.in লিঙ্কের উল্লেখ থাকছে। তাই এখান থেকে খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, মেসেজটি সম্পূর্ণ ভুয়ো।

এক্ষেত্রে সরকারকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করতে রোশন কুমার তার টুইটে TRAI (ট্রাই), DoT (ডিওটি) এবং Jio (জিও)-কে ট্যাগ করেছেন। আর, Jio, এর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে যে এই মেসেজটি সত্যি সত্যিই ইউজারদের জন্য মারাত্মক রকমের বিপদ ডেকে আনতে পারে। অতএব আপনিও যদি এই ধরনের কোনো মেসেজ পেয়ে থাকেন, তাহলে খবরদার তাতে থাকা কোনো লিঙ্কে ক্লিক করবেন না!