Bajaj Pulsar N250 ও F250 বাজার তোলপাড় করতে লঞ্চ হল, দাম সাধ্যের মধ্যে

সময়ের ব্যবধানটা দীর্ঘ কুড়ি বছরের৷ ২০০১ সালে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল Bajaj Pulsar-এর। সে বার আদ্যোপান্ত কমিউটার বাইক হিসেবে ১৫০ সিসি ও ১৮০ সিসি অবতারে লঞ্চ হয়েছিল Pulsar Twins। ব্যস, তারপরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাজাজকে। Pulsar ব্র্যান্ড বাজাজকে এনে দিয়েছে সুখ্যাতি। প্রতিষ্ঠিত করেছে একটি শীর্ষস্থানীয় টু-হুইলার প্রস্তুতকারী সংস্থা হিসেবে। এখন পালসার উদ্দীপনার আরেক নাম। পালসার মানেই অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ। কমিউটার অবতার থেকে পালসার এখন পরিণত হয়েছে স্পোর্টি অবতারে। যে লাইনআপে রয়েছে Pulsar 125, 220F, NS200, এবং RS200-সহ নানা মডেল।

বাজাজ তাদের পালসার ব্র্যান্ডের ‘কুড়িতম’ বর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে এখনও পর্যন্ত তৈরি করা সবথেকে বড় পালসার বাইক আজ লঞ্চ করল। সামনে এল Bajaj Pulsar N250 (নেকেড ভার্সম) ও Bajaj Pulsar F250 (সেমি-ফেয়ার্ড ভার্সন)। মোটরসাইকেলগুলি আপাদমস্তকে একদম ব্র্যান্ড নিউ। নির্মাণ করা হয়েছে নতুন চ্যাসিসের উপর। দেওয়া হয়েছে নতুন ইঞ্জিন। একইসঙ্গে রয়েছে একগুচ্ছ নয়া প্রযুক্তি ও ফিচার। খাতায়-কলমে স্টাইল ও অন্যান্য বিষয়গুলিতে কতটা উত্তীর্ণ হল ২৫০ সিসি ইঞ্জিন ক্যাপাসিটির নতুন পালসার। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেগুলি।

Bajaj Pulsar N250 ও Pulsar F250 দাম ও কালার

বাজাজ পালসার এন২৫০-এর দাম রাখা হয়েছে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। অন্য দিকে, বাজাজ পালসার এফ২৫০-এর দাম ধার্য করা হয়েছে ১.৪০ লক্ষ টাকা (এক্স-শোরুম)। অর্থাৎ নেকেড ভার্সনের থেকে সেমি-ফেয়ার্ড মডেলের দাম মাত্র ২ হাজার টাকা বেশি। মোটরসাইকেলগুলি টেকনো ব্ল্যাক ও রেসিং রেড কালারের মধ্যে বেছে নেওয়া যাবে।

Bajaj Pulsar N250 ও Pulsar F250 স্টাইল ও ফিচার

মাসকুলার প্রোফাইল এবং ডমিনেটিং স্ট্রিট প্রেজেন্স নতুন বাজাজ পালসার বাইক দু’টির অন্যতম হাইলাইট। পুরনো পালসার বাইকগুলির তুলনায় এন২৫০ ও এফ২৫০-এর ডিজাইন বা স্টাইলিং আরও রিফ্রেশিং। নতুন বাইকদ্বয়ের মধ্যে পার্থক্য খুব কম। এফ২৫০-এর দু’পাশে রয়েছে বিকিনি ফেয়ারিং, সহজবোধ্য ভাষায় যাকে বলা হয় সেমি-ফেয়ারিং। অপরদিকে, এন২৫০-র ডিজাইন পুরোদস্তুর নেকেড। হেডল্যাম্প এবং উইন্ডস্ক্রিনের দিক থেকেও বাইক দু’টির মধ্যে পার্থক্য চোখে পড়বে।

পালসার এফ২৫০-এর ফেয়ারিং ট্যাঙ্ক শ্রাউড পর্যন্ত বিস্তৃত। সে জন্য এর সামনের অংশটি প্রথমেই দর্শনকারীদের নজর টানবে। এন২৫০-এর সামনের অংশ ভারী নয়। যেহেতু এটি নেকেড শ্রেনীর বাইক৷ এতে পাইলট ল্যাম্প দেওয়া হয়েছে। আর এর সেমি-ফেয়ার্ড ভার্সন পেয়েছে বুমেরাং আকৃতির ডিআরএল।

Pulsar F250-র ফ্রন্ট অ্যাপরনে রিয়র-ভিউ মিরর বসানো৷ Pulsar N250-এ সেগুলির অবস্থান অবশ্য হ্যান্ডেলবারের উপর৷ এছাড়া বাইকগুলির কমন ফিচারের মধ্যে রয়েছে এলইডি প্রজেক্টর হেডল্যাম্প ও এলইডি টেলল্যাম্প, চওড়া হ্যান্ডেলবার, ফেন্ডার, ক্রাশগার্ড, ইঞ্জিন কাউল, স্প্লিট সিট, সাইড মাউন্টেড টুইন-ব্যারেল এগজস্ট, স্প্লিট গ্রাব রেল, এবং রিয়ার টায়ার হাগার৷

এছাড়াও Pulsar N250 ও Pulsar F250 এসেছে স্মার্টফোন চার্জিং পোর্ট (ইউএসবি), এবং নতুন সেমি-ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টারের সাথে৷ যার মধ্যে রিয়েল টাইম ফুয়েল এফিশিয়েন্সি, গিয়ার পজিশন, ক্লক-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য ফুটে উঠবে৷

Bajaj Pulsar N250 ও Pulsar F250 ইঞ্জিন

বাজাজ পালসার এন২৫০ ও এফ২৫০-এ সম্পূর্ন নতুন ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে, এটি ২৪৯.০৭ সিসি-র। আউটপুট ৮,৭০০ আরপিএমে সর্বোচ্চ ২৪.৫ পিএস ও ৬,৫০০ আরপিএমে সর্বাধিক ২১.৫ এনএম। সঙ্গে রয়েছে ফাইভ-স্পিড গিয়ারবক্স। যদিও এটি সিক্স-স্পিড ট্রান্সমিশনের সাথে আসলে উপযুক্ত হত বলেই মনে  করছে বাইকপ্রেমীরা।

তবে ইয়ামাহা এবং সুজুকি-র সমান ক্ষমতাসম্পন্ন বাইকের মতো পালসার এন২৫০ ও এফ২৫০-এ অ্যাসিস্ট ও স্লিপার ক্লাচ দেওয়া হয়েছে। যা রাইড ডাইনামিক্স ও সেফটি আরও উন্নত করবে বলেই জানিয়েছে বাজাজ।

Bajaj Pulsar N250 ও Pulsar F250 হার্ডওয়্যার

নতুন ফ্রেমের উপর ভিত্তি করে পালসার লাইনআপে নতুন দুই মডেল তৈরি করা হয়েছে। এন২৫০ ও এফ২৫০-এর ওজন (কার্ব) যথাক্রমে ১৬২ কেজি ও ১৬৪ কেজি। সাসপেনশনের জন্য সামনে ৩৭ মিমি টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পিছনে নাইট্রোক্স মনোশক দেওয়া হয়েছে। ৩০০ মিমি (ফ্রন্ট) ও ২৩০ মিমি (রিয়র) ডিস্ক ব্রেক এবং সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএসের সাথে এসেছে বাইক দু’টি।