Bank scam: এই ভুয়ো মেসেজের চক্করে 3 দিনে প্রতারিত 40 জন ব্যাংক গ্রাহক, আপনি সতর্ক হোন

ভুয়ো মেসেজের ফাঁদে পড়ে তিন দিনে লক্ষ লক্ষ টাকা হারালেন ৪০ জন ব্যাংক গ্রাহক

“প্রিয় গ্রাহক, আজ আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হবে। তাই ডিঅ্যাক্টিভেশন এড়াতে এক্ষুনি আপনার কেওয়াইসি / প্যান (KYC/ PAN) আপডেট করুন। আপডেট করার জন্য নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন” – আপনি কি সম্প্রতি এই জাতীয় কোনো এসএমএস পেয়েছেন? এর উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে জেনে রাখুন, শুধু আপনি নয়, বর্তমানে এদেশের বহু মানুষের কাছে এই ধরনের মেসেজ আসছে। সেইসাথে এটাও অবশ্যই মাথায় রাখুন যে, মেসেজগুলি কিন্তু সম্পূর্ণ ভুয়ো; তাই এরকম কোনো মেসেজ আপনার কাছে আসলে সেগুলিকে মোটেই পাত্তা দেবেন না এবং এসএমএসগুলির সাথে অ্যাটাচ করা কোনো লিঙ্কে ভুলেও খবরদার ক্লিক করবেন না। আর যদি দুর্ভাগ্যবশত ক্লিক করে ফেলেন, তাহলে কিন্তু এক নিমেষেই সাফ হয়ে যেতে পারে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট! তাই বিষয়টিকে মাথায় রাখা সকল দেশবাসীর জন্য একান্ত আবশ্যক।

উল্লেখ্য যে, এই ধরনের ফিশিং কেলেঙ্কারি কিন্তু একেবারেই নতুন কিছু নয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এরকম একাধিক ভুয়ো এসএমএস এবং কল হামেশাই গ্রাহকদের কাছে এসে থাকে। আর এই চক্করে নিজের সারা জীবনের কষ্টার্জিত টাকা খুইয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও এখন নেহাত কম নয়। সেক্ষেত্রে যদিও দেশের তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞরা অনবরত ইউজারদেরকে এই ধরনের মেসেজ কিংবা কলের রিপ্লাই না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে চলেছেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও সকল দেশবাসীকে কিছুতেই সতর্ক করা যাচ্ছে না। তাই হালফিলে আবারও একবার হ্যাকারদের পাঠানো ভুয়ো এসএমএসের রিপ্লাই দিতে গিয়ে মুম্বাইয়ের প্রায় ৪০ জন সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

ভুয়ো মেসেজের ফাঁদে পড়ে তিন দিনে লক্ষ লক্ষ টাকা হারালেন ৪০ জন ব্যাংক গ্রাহক

সম্প্রতি এনডিটিভি (NDTV)-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ভুয়ো এসএমএসের সাথে সংযুক্ত থাকা একটি লিঙ্কে ক্লিক করার পর মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ৪০ জন গ্রাহক মাত্র তিন দিনে লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন। এসএমএস মারফত ওই ব্যবহারকারীদেরকে বলা হয়েছিল যে, তাদেরকে অবিলম্বে কেওয়াইসি এবং প্যান আপডেট করতে হবে, অন্যথায় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। আর আচমকা মেসেজটি আসায় অনেকেই এটিকে অফিসিয়াল নোটিফিকেশন ভেবে বসেন, যার জেরে তৎক্ষণাৎ মেসেজের সাথে সংযুক্ত থাকা লিঙ্কে ক্লিক করেন এবং অচিরেই হ্যাকারদের প্রতারণার শিকার হয়ে যান।

জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রীও হ্যাকারদের জালে জড়িয়ে পড়লেন

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই ফিশিং ব্যাংক এসএমএস জালিয়াতির শিকার হওয়া ৪০ জন গ্রাহকের মধ্যে জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী শ্বেতা মেননও (Shweta Menon) রয়েছেন, যিনি ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করার পরে প্রায় ৫০,০০০ টাকারও বেশি হারিয়েছেন। নিজের অভিযোগনামায় মেনন জানিয়েছেন যে, কেওয়াইসি এবং প্যান কার্ডের ডিটেইলস আপডেট করার জন্য তিনি একটি এসএমএস পেয়েছিলেন, যেটিকে দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছিল যে, মেসেজটি প্রকৃতপক্ষেই ব্যাংকের তরফ থেকে এসেছে। ফলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, একথা ভেবে ভয় পেয়ে গিয়ে তিনি ভুয়ো এসএমএসে থাকা লিঙ্কটিতে অবিলম্বে ক্লিক করে ফেলেন।

মেননের কথায়, লিঙ্কে ক্লিক করার পরে তাকে একটি ওয়েবসাইটে রিডাইরেক্ট করা হয়, এবং সেখানে তাকে তার কাস্টমার আইডি, পাসওয়ার্ড এবং ওটিপি (OTP) এন্টার করতে বলা হয়। আবার, ভুয়ো এসএমএসের পাশাপাশি তিনি একজন মহিলার কাছ থেকে একটি কলও পেয়েছিলেন, যিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন। ওই অজানা মহিলা মেননের কাছ থেকে তার ফোনে আসা ওটিপিটি জানতে চান; আর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে মেননও তৎক্ষণাৎ তাকে সেই ওটিপিটি সহ অন্যান্য আরও বেশ কিছু পার্সোনাল ডিটেইলস দিয়ে ফেলেন। এরপরেই শ্বেতা দেখেন যে, তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৭,৬৩৬ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।

খুব স্বাভাবিকভাবেই এরপর মেনন একদম নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারেন যে, তিনি সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। তাই নিজের অভিযোগ জানানোর জন্য তিনি সাইবার সেলের দ্বারস্থ হন। রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বেতার বয়ান অনুসারে হালফিলে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং জালিয়াতদের হাতেনাতে ধরার জন্য পুলিশ জোরকদমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই নাগরিকদের সুরক্ষার্থে মুম্বাই পুলিশ সকলকে কোনোরকম ভুয়ো কল বা এসএমএসের রিপ্লাই না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আসলে ব্যাপারটা হল, দিন-কে-দিন ভারত সহ গোটা দেশজুড়ে হ্যাকারদের যেরকম বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে নিজেরা সতর্ক না হলে সাইবার অপরাধীদের আটকানো কোনোমতেই সম্ভব নয়। তাই সতর্ক থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন।