আমরা সবাই বিল গেটসকে Microsoft Corporation-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও, এবং তার সাথে সাথে বিশ্বের প্রথম ১০ জন ধনশালী ব্যক্তিদের একজন হিসেবে জানি। কিন্তু হঠাৎ করে যদি আপনাকে বলা হয় যে বিল গেটস আমেরিকার সবচেয়ে বড়ো কৃষক, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই ভাববেন আপনার সাথে মজা করা হচ্ছে। ভাবাটা স্বাভাবিক, কিন্তু অবিশ্বাস্য মনে হলেও একথা সত্যি। সম্প্রতি জানা গেছে যে, বিল গেটস এবং তার বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস ১৮টি আমেরিকান রাজ্যের ২,৬৯,০০০ একরেরও বেশি কৃষিজমির মালিক!
ল্যান্ড রিপোর্ট এবং NBC রিপোর্ট অনুযায়ী, গেটসের লুইজিয়ানা, নেব্রাস্কা, জর্জিয়া এবং অন্যান্য এলাকায় কৃষিজমি রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, গেটসের উত্তর লুইজিয়ানায় ৭০,০০০ একর জমি আছে, যেখানে সয়াবিন, ভুট্টা, তুলা এবং ধান চাষ করা হয়। এর পাশাপাশি নেব্রাস্কায় ২০,০০০ একর জমিতে কৃষকরা সয়াবিন চাষ করে। এছাড়াও, গেটসে জর্জিয়ার ৬,০০০ একর, ওয়াশিংটনের ১৪,০০০ একর কৃষিজমির মালিক, যেখানে কৃষকরা প্রধানত আলু চাষ করে।
একবার গেটসকে Reddit-এ তার এই বিশাল পরিমাণ কৃষিজমি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। সেসবের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আমার বিনিয়োগ গোষ্ঠী এটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি জলবায়ুর সাথে সংযুক্ত নয়। কৃষিক্ষেত্র সামাজিক উন্নতির স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলনশীল বীজ উৎপাদনের সাহায্যে আমরা বনধ্বংস এড়াতে পারি এবং আফ্রিকা যে জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তার মোকাবিলা করতে তাদের সহায়তা করতে পারি। জৈব জ্বালানি কতটা সস্তা হতে পারে সে বিষয়টি এখনও খুব সুস্পষ্ট নয়, তবে যদি তা সস্তা হয় তাহলে বিমান এবং ট্রাক পরিবহন সংক্রান্ত পরিষেবাগুলি ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।”
বিল এবং মেলিন্ডা কৃষিজমিতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন, তবে এর পিছনের কারণটি পরিষ্কার নয়। কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে এর কোনো যোগাযোগ থাকতে পারে। কারণ ইতিমধ্যেই এই দম্পতি ভারতের মতো দেশের ক্ষুদ্র ও নিম্নশ্রেণীর কৃষকদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তিমূলক ব্যবস্থা সরবরাহ করে সহায়তা করার জন্য একটি নতুন অলাভজনক গোষ্ঠী চালু করেছিলেন।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, খুব সম্প্রতি এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। বিল গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা তাদের ২৭ বছরের বিবাহিত জীবনের বহুল প্রচারিত বিচ্ছেদের পরে সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। তাঁদের তিনটি সন্তান রয়েছে। তবে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় পারিবারিক জীবনে তারা আর একসাথে না থাকলেও কর্মক্ষেত্রে যে একযোগে কাজ করে যাবেন সেকথা তারা নিশ্চিত করেছেন। এর সাথে সাথে এই বিবাহবিচ্ছেদকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু না করে তাদের যাতে একটু প্রাইভেসি দেওয়া হয়, সে ব্যাপারেও তারা পাবলিক এবং মিডিয়ার কাছে অনুরোধ করেছেন।