BSNL ও MTNL সংযুক্তিকরণ সম্ভব নয়, প্রধানমন্ত্রী কে জানালো কর্মচারী ইউনিয়ন

রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম কোম্পানি বিএসএনএলের (BSNL) সঙ্গে মহানগর টেলিকম নিগম লিমিটেড বা এমটিএনএল’কে (MTNL) জুড়ে দেওয়ার প্রশ্নে সংঘাতের মুখোমুখি কেন্দ্রীয় সরকার এবং BSNL কর্মচারী ইউনিয়ন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য তীব্র হচ্ছে। এরই মধ্যে আবার গতকাল অর্থাৎ ২৩শে মার্চ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি বিএসএনএল কর্মচারী ইউনিয়ন একটি বিশেষ চিঠি পাঠায় যেখানে তারা BSNL ও MTNL -এর সংযুক্তিকরণে জোর আপত্তি জানিয়েছে। ইউনিয়নের বক্তব্য, এর ফলে পরবর্তীকালে বিএসএনএলের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই আরো মুশকিল হবে। যদিও এই চিঠি সম্পর্কে এখনো সরকারি পদাধিকারীদের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য সামনে আসেনি।

ঘাড়ে প্রায় ২৬,০০০ কোটি টাকা ঋণের বোঝা – MTNL ‘কে উদ্ধারের আর্জি কর্মচারী ইউনিয়নের চিঠিতে

সংবাদ সংস্থা ET Telecom -এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত টেলকোর কর্মচারী ইউনিয়ন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রেরিত চিঠিতে এমটিএনএলের ঘাড়ে চেপে থাকা বিপুল পরিমাণ (প্রায় ২৬,০০০ কোটি টাকা) ঋণের বোঝা লাঘবের জন্য উপযুক্ত সরকারি সাহায্য প্রদানের আর্জি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরেই BSNL দিল্লি এবং মুম্বই শহরে MTNL -এর মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবসাকে অধিগ্রহণ করে।

BSNL-MTNL সংযুক্তিকরণের ফলে হতে পারে হিতে বিপরীত – পি অভিমন্যু

আসলে বর্তমানে বিএসএনএলের আর্থিক অবস্থা এতটাই সংকটাপন্ন যে এর সাথে এমটিএনএলের সংযুক্তিকরণের ফল মন্দ হতে পারে – রাষ্ট্রায়ত্ত টেলকোর কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক পি অভিমন্যু তার বক্তব্যে এমনটাই জানিয়েছেন। তার বক্তব্য বিএসএনএল-এমটিএনএলকে একত্রে জুড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি তৎপরতায় তারা বিরক্ত। এই পদক্ষেপে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলকোর হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে তার অভিমত।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা দরকার, ঋণজর্জর দশা থেকে এমটিএনএলকে উদ্ধার করতে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিএসএনএল ও এমটিএনএলের সংযুক্তিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। তবে তার আগে তারা মহানগর টেলিকম নিগম লিমিটেডের ঘাড়ে চেপে থাকা ২৬,০০০ কোটি টাকার দেনাকে SPV অর্থাৎ স্পেশাল পারপাস ভেহিকেলে রূপান্তরিত করার পরামর্শ দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিএসএনএল ও এমটিএনএল উভয় সংস্থার জন্য প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে। একে কাজে লাগিয়ে সামান্য লাভবান হলেও বর্তমানে আলোচ্য সংস্থাদ্বয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজছে। তবে কোনো কিছুতেই সমস্যার সুরাহা না মেলায় সরকারি তরফ থেকে BSNL-MTNL সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও সাধারণ BSNL কর্মীদের সর্বাত্মক বিরোধিতায় এ সিদ্ধান্ত আদতেও কার্যকর হয় কিনা সেটাই দেখার।