পুরনো গাড়ি কিনতে গেলে কোন বিষয়গুলি সবার আগে খুঁটিয়ে দেখবেন, জেনে নিন

এককালীন কম অর্থ খরচ করতে হয় এবং আরও সুযোগ-সুবিধার জন্য শোরুম ফেরত গাড়ি বাজারে থেকেও সেকেন্ড-হ্যান্ড অর্থাৎ হাত ফেরতা গাড়ির চাহিদা এখন বেশি। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০২০ অর্থবর্ষে সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির বাজার নতুন গাড়ির বাজারের তুলনায় ৫০ শতাংশ বড়। আর ২০২৫ অর্থ বর্ষের মধ্যে এই ফারাকটা গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৯০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিবছর ১১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এই বাজার।  বিপুল পরিমাণ টাকা খরচা করে নতুন গাড়ি কেনার থেকে কম টাকায় পুরনো গাড়ি নেওয়াটা শুধু সাশ্রয়ীই নয়, বাস্তবসঙ্গতও বটে। তবে পুরনো গাড়ি কেনার আগে সবার প্রথমে কী কী বিষয় খুঁটিয়ে দেখে নেওয়া উচিত, নীচে রইল তার একটি তালিকা।

রং:

পুরনো গাড়িটির বাইরে সারা শরীরের প্রত্যেকটি অংশ ভালো করে খুঁটিয়ে দেখুন। বাইরের রঙে কোন স্ক্র্যাচ কিংবা অন্য জাতীয় কোন বিষম রঙের প্রলেপ থাকলে বুঝবেন এই গাড়িটি কোথাও অ্যাক্সিডেন্ট করেছিল।

ওডোমিটারের পরীক্ষা:

প্রথমেই গাড়িটির ভিতরে প্রবেশ করে ওডোমিটারটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করুন। যদি ৪ থেকে ৫ বছরের পুরনো একটি গাড়ির ওডোমিটারে ৬০ হাজার কিলোমিটারের বেশি চালানো হয় তবে সেই গাড়িটি এড়িয়ে চলাই ভালো।

ইঞ্জিন:

ইঞ্জিনটি চালু করে খানিকক্ষণ তার শব্দ মন দিয়ে শুনুন। যদি কোনরকম কর্কশ শব্দ কিংবা ধাতব কোন আওয়াজ পান তবে অবশ্যই যাচাই করুন কেন তা হচ্ছে।

ইলেকট্রিক ওয়ারিং:

গাড়ির ভেতরে ইলেকট্রিক্যাল পার্টস অর্থাৎ কেবিনের আলো, হর্ন, হেডল্যাম্প, টেলল্যাম্প, ওয়াইপার, ফগল্যাম্প কিংবা মিউজিক সিস্টেম – এগুলি যথাযথভাবে চলছে কিনা পরখ করে নিন।

ব্যাটারি:

গাড়িতে থাকা ব্যাটারিটি কতটা পুরনো তা বুঝে নিন। ব্যাটারির অ্যাসিড লেভেল পরীক্ষা করলে বুঝতে পারবেন এই গাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করা আদৌও হয় কিনা।

লিকেজ:

গাড়িতে থাকা তেল, জল কিংবা লুব্রিকেন্ট অনেক সময় লিক করতে দেখা যায়। তাই প্রথমে এগুলি ভালো করে পরীক্ষা করে নিন ও এই জাতীয় সমস্যা থাকলে সেই গাড়িকে এড়িয়ে চলুন।

ব্রেকিং সিস্টেম:

কোন গাড়ির ব্রেক ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা তা দুইভাবে পরীক্ষা করা যায়। প্রথমে গাড়িটি হাইওয়েতে ৫০ কিমি/ঘন্টা গতিতে চালিয়ে ব্রেক করে দেখুন। এক্ষেত্রে গাড়িটি সরলরেখায় থেমে যাওয়া উচিত। আর দ্বিতীয়ত গাড়িটি কোন ঢালু জায়গা বরাবর নিয়ে গিয়ে ব্রেক চেপে দেখুন তা যথাযথ কাজ করছে কিনা।

স্টিয়ারিং:

গাড়িতে বসে প্রথমেই স্টিয়ারিং টিকে সম্পূর্ণ ভাবে এক পাক ঘুরান। এক্ষেত্রে স্টিয়ারিংটি যদি কোনরকম শব্দ ছাড়াই ঘুরতে পারে তবে ঠিক আছে, নচেৎ অন্য গাড়ি দেখুন।

ডকুমেন্ট:

মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট অনুযায়ী যে কোনো দুই-চাকা কিংবা চার-চাকার গাড়িতে প্রয়োজনীয় আইনি কাগজপত্র থাকাটা বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রেশন পেপার, ইনসিওরেন্স পেপার এবং নো অবজেকশন সার্টিফিকেট, এই তিনটি অতি প্রয়োজনীয় কাগজ গাড়ির ক্ষেত্রে। রেজিস্ট্রেশন পেপারে গাড়ির চেসিস নম্বরের উল্লেখ থাকে। আপনি যখনই এই পুরনো গাড়ির মালিকের নাম বদলানোর জন্য RTO যাবেন তখন ইন্সুরেন্স পেপারটি অবশ্যই লাগবে। অন্যদিকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট থাকা মানে সেই গাড়িটি যে ঋণ প্রদানকারী সংস্থার থেকে নেওয়া হয়েছিল তাদের ঋণ মেটানো সমাপ্ত হয়েছে।