করোনায় জেরবার ভারতের অফলাইন স্মার্টফোন মার্কেট, কাজ হারাতে পারেন ৫০,০০০ কর্মচারী

২০২০ সালের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারী শুধু যে ভারতের স্বাভাবিক জনজীবনকে ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত করেছে তা নয়, ভারতের স্মার্টফোন বাজারেও এই মারণ ভাইরাসের কারণে চরম বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এমনিতেই অনলাইন আউটলেটের মাধ্যমে গ্রাহকরা তাদের প্রিয় ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট ঘরে বসেই পেয়ে যাওয়ায় অফলাইন স্টোরগুলির জনপ্রিয়তা অনেক আগে থেকেই কমতে শুরু করেছে, তার ওপর করোনাকালে লকডাউনের জন্য অফলাইন স্মার্টফোন স্টোরগুলি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় সংক্রমণ ভারতে হানা দেওয়ায় অধিকাংশ জায়গাতেই পুনরায় লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে উৎপাদন, শিপমেন্ট সবকিছুই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্মার্টফোন মার্কেটে এক ভয়ঙ্কর স্তব্ধতা বিরাজ করছে। যদিও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া অনলাইন ডেলিভারি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তা সত্বেও বাজার মন্দা তথা মানুষের উৎসাহ কম হওয়ায় সকল স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের ফিজিক্যাল রিটেল আউটলেটগুলি খোলা থাকার সময় ও সম্ভাবনা দুটোই কমে গেছে। তাই বিক্রির পরিমাণও যে কমে গেছে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য। ফলে ভারতের স্মার্টফোন মার্কেট যে আরো বিধ্বংসী পতনের মুখোমুখি হতে চলেছে, সেকথা খুব স্বাভাবিকভাবেই ইন্ড্রাস্ট্রি অ্যানালিস্টরা মনে করছেন।

সম্প্রতি কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের (Counterpoint Research) একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, কম বিক্রির কারণে গত দুই ত্রৈমাসিকে অফলাইন বিক্রয়ের প্রাথমিক মার্কেট শেয়ার ৫৫%-এ নেমে এসেছে। এবং ইদানিং করোনা মহামারী যেভাবে ভারতের ওপর কামড় বসিয়েছে, তাতে এই শেয়ার আরও নামার সম্ভাবনা প্রবল বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যান্য বিশেষজ্ঞরাও এই বছরের শেষে স্মার্টফোন মার্কেট শেয়ারে বড়ো পতনের আশঙ্কা করছেন।

জনপ্রিয়তার নিরিখে যতই অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মগুলি এগিয়ে থাকুক না কেন, অফলাইন স্টোরগুলি এখনও প্রতিযোগিতায় টিকে আছে। অফলাইন রিটেল আউটলেটগুলি, Xiaomi, Vivo এবং অন্যান্যদের মতো ভারতে কিছু প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডের বিপণন কৌশলের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে রয়ে গেছে, যারা খুচরো বিক্রয় কেন্দ্রগুলির (retail outlets) মাধ্যমে ভারতে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। কিন্তু গত বছরের পর এই বছর আবার যেভাবে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণ ভারতের ওপর আঘাত হেনেছে, তাতে অফলাইন স্টোরগুলি ভয়ঙ্কর শোচনীয় অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। কিছু ছোটো এবং মাঝারি দোকান বর্তমান পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই চালিয়ে গেলেও, বেশ কয়েকটি অফলাইন চ্যানেল, দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে আনুমানিক ৫০,০০০ মানুষ চাকরি হারাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন