অবিশ্বাস্য! ক্রিপ্টোকারেন্সি কেলেঙ্কারির অপরাধে হতে পারে ৪০,০০০ বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজা

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইন্টারনেট তথা প্রযুক্তি নির্ভর জীবনে বিশেষ ধরণের সম্পদ হয়ে উঠেছে ক্রিপ্টোকারেন্সি (Crypto Currency)। যত সময় এগোচ্ছে ততই গোটা বিশ্ব জুড়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে…

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইন্টারনেট তথা প্রযুক্তি নির্ভর জীবনে বিশেষ ধরণের সম্পদ হয়ে উঠেছে ক্রিপ্টোকারেন্সি (Crypto Currency)। যত সময় এগোচ্ছে ততই গোটা বিশ্ব জুড়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে Bitcoin, Ethereum-এর মত ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিয়োগের হার। কিন্তু একইসাথে এই জনপ্রিয় বিষয়টিকে হাতিয়ার করে জালিয়াতির চেষ্টা চালাচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ, যার জেরে মাঝেমধ্যেই ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি বা কেলেঙ্কারির কথা সংবাদের শিরোনামে উঠে আসছে। প্রচুর বিনিয়োগকারী এভাবে হ্যাকারদের শিকারও হয়েছেন বলে শোনা গিয়েছে। তবে এই ধরনের প্রতারণা ধরা পড়লে কী শাস্তি হতে পারে, তার নজির জানলে আপনার চোখ হয়ত কপালে উঠে যেতে পারে! আসলে এমনিতে আইন বিরোধী কাজ করলে জরিমানা, হাজতবাস, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, মৃত্যুদণ্ডের মত শাস্তির বিধি প্রচলিত আছে বিভিন্ন দেশেই। কিন্তু অবাক করার বিষয় হল যে, অতি সম্প্রতি তুরস্কে গ্রেপ্তার হওয়া এক ক্রিপ্টো স্ক্যামারের সেদেশের আদালত কর্তৃক ৪০,০০০ বছরের বেশি কারাদণ্ডের সাজা হওয়ার সম্ভাবনার কথা সামনে এসেছে। হ্যাঁ, ঠিকই বলছি!

আয়ু বড়জোর ১০০ বছর, কিন্তু সাজা কয়েক হাজার শতাব্দীর

ডিজিটাল ট্রেন্ডস (Digital Trends)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ফারুক ফতেহ ওজার (Faruk Fatih Ozer) নামের এক ব্যক্তি ২০১৭ সালে ‘থোডেক্স’ (Thodex) নামে একটি তুর্কি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি শুরু করেছিল। কিন্তু গত বছর মানে ২০২১ সালে সে দুই বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ১৫৯.৪ বিলিয়ন টাকা) কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে পলাতক হয়। তবে এখন এই ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতাকে আলবানিয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে তার ৪০,৫৬৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে! নিঃসন্দেহে এ এক চাঞ্চল্যকর খবর।

লক্ষ লক্ষ মানুষ ফারুকের ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেছে

জানা গিয়েছে যে, থোডেক্স ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি চালু থাকা অবধি সময়ে সাত লাখের কাছাকাছি সংখ্যক মানুষ তাতে বিনিয়োগ করেছেন। মূলত তুর্কি মুদ্রার দরপতনের কারণেই এইসব মানুষ ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করেছেন এবং থোডেক্স উপকৃত হয়েছে বলে রিপোর্টের দাবি। সেক্ষেত্রে লঞ্চের কয়েক বছর পর এই সংস্থাটি গতবছর সমস্ত ক্রিপ্টো-সম্পর্কিত কাজ বন্ধ করে দেয় এবং বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে কার্যত অদৃশ্য হয়ে যায়। এর পরেই থোডেক্সের বিরুদ্ধে আইনি সংস্থাগুলি ক্র্যাকডাউন শুরু করে।

ফারুকের শুনানি হবে তুরস্কে

উল্লেখ্য, এই কেলেঙ্কারি ঘটনার সময় সংস্থাটি প্রথমে বাইরে বিনিয়োগের নামে প্রায় পাঁচ দিনের জন্য কাজ বন্ধ রাখে। পরে ফারুক দাবি করেন যে, কোম্পানিটিকে সাইবার হামলা সংক্রান্ত হুমকির কারণে সম্পূর্ণভাবে লেনদেন বন্ধ করতে হবে। তবে বিনিয়োগকারীদের তহবিল নিরাপদ থাকার অঙ্গীকার করলেও, সংস্থা, তাদের অ্যাকাউন্ট এবং টাকা লোপাট করে দেয়। মানে বেশ কায়দা করেই এই কেলেঙ্কারি ঘটায় ফারুক তথা থোডেক্স। এই ঘটনা সামনে এলে তুর্কি পুলিশ তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয় এবং কোম্পানির বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে আটক করে। কিন্তু ওইসময় ফারুক পালিয়ে আলবেনিয়ায় আত্মগোপন করতে সক্ষম হয়। কিন্তু সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ফলত এখন অন্যান্য থোডেক্স কর্মচারীদের সাথে তার বিরুদ্ধে মামলার শুনানি হবে তুরস্কে।