২০২১-এর সবচেয়ে খারাপ কোম্পানি Facebook বা Meta, দ্বিতীয় কে জেনে নিন

এই বছরের সবচেয়ে খারাপ কোম্পানির শিরোপা পেল Facebook (এখন Meta)! কি, নিশ্চয়ই ভাবছেন কোনো রসিকতা করছি? না না, একদমই না; সম্প্রতি Yahoo! Finance দ্বারা পরিচালিত…

এই বছরের সবচেয়ে খারাপ কোম্পানির শিরোপা পেল Facebook (এখন Meta)! কি, নিশ্চয়ই ভাবছেন কোনো রসিকতা করছি? না না, একদমই না; সম্প্রতি Yahoo! Finance দ্বারা পরিচালিত একটি সার্ভে থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, Yahoo! Finance প্রতি বছর বিশ্বের সেরা এবং সবচেয়ে খারাপ কোম্পানিগুলির একটি তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে এই বছর খারাপ কোম্পানিগুলির তালিকার শীর্ষস্থানটি দখল করে নিয়েছে Facebook। সংস্থাটি দ্বিতীয় স্থানাধিকারী চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট Alibaba-র চেয়ে ৫০% বেশি ভোট পেয়ে এই খেতাব অর্জন করেছে। অন্যদিকে, এই বছরের সেরা কোম্পানির মুকুটটি উঠেছে Microsoft-এর মাথায়। Yahoo! Finance-এর এই সার্ভেটি একটি ওপেন-এন্ডেড সার্ভে, যা ডিসেম্বর থেকে Yahoo! Finance হোমপেজের মাধ্যমে Survey Monkey-তে করা হয়েছিল। ৪ থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১,৫৪১ জন প্রতিক্রিয়াকারীর মতামতের ভিত্তিতে এই তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হল, বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় সংস্থা হিসেবে পরিচিত ফেসবুক বা মেটার এই করুন পরিণতির পিছনে কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছনে এক নয়, বরং একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি হল সেন্সরশিপের ধারণা। ইউজারদের মতে, এই প্ল্যাটফর্ম এখন অত্যাধিক রক্ষণশীল হয়ে গেছে। ফলে এখন এই প্ল্যাটফর্মে মানুষের ব্যক্তিগত মতামত খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করার স্বাধীনতা আর নেই। পাশাপাশি যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে নিজের ইচ্ছামতো যোগাযোগ করতে চাইলে সে সুযোগও এখন এই প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায় না।
আবার কিছু ইউজারের মতে, এখন বিশ্বে অত্যন্ত চরমপন্থী (দক্ষিণপন্থী) দৃষ্টিভঙ্গির উত্থানের জন্য ফেসবুক বা মেটাই দায়ী। এমনকি মেটার বিরুদ্ধে একজন ভোটদাতা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে খর্ব করার অভিযোগও করেছেন। অপরদিকে, মানসিক স্বাস্থ্য এবং শিশুদের ওপর মেটা মালিকানাধীন অ্যাপ, Instagram-এর কুপ্রভাবগুলিও তাদের এই ফলের জন্য বিশেষভাবে দায়ী। তবে একজন প্রতিক্রিয়াকারী জানিয়েছেন যে, এর জন্য ফেসবুক ক্ষমা চেয়ে নিতে পারে, এবং শিশুদের ওপর যে কুপ্রভাব পড়েছে সেই ক্ষতি কিছুটা পরিমাণে কমাতে সংস্থাটি কোনো ফাউন্ডেশনে তার মুনাফার একটি বিশাল অংশ দান করে দিতে পারে।

আবার নতুন সোশ্যাল মিডিয়া মডেল তৈরির ক্ষেত্রে Facebook-এর নাম বদলে এই Meta নামের রিব্র্যান্ডিংকেও অনেকে কুনজরে দেখছেন, যদিও এর পিছনে প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মার্ক জুকারবার্গের হাত রয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, সার্ভেতে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশেরই মতামত যে এই প্ল্যাটফর্মটি সঠিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য নয়। এই ধরনের প্রতিক্রিয়া যে কোনো প্ল্যাটফর্মের জন্যই অত্যন্ত খারাপ। সেইসাথে ১০ জনের মধ্যে কেবলমাত্র ৩ জন মনে করেন যে Facebook তার সমস্ত ভুলগুলি শুধরে নিয়ে নিজেকে আবার যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।

তবে সাম্প্রতিক এই র‌্যাঙ্কিং সম্পর্কে জুকারবার্গের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদিও তা শীঘ্রই কোনো ইভেন্টে পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। যদিও এই সমীক্ষা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে যে, জনগণের কাছে কি Facebook-এর গুরুত্ব দিন-কে-দিন কমে যাচ্ছে? Facebook-এর ভবিষ্যৎ কি তাহলে অতল অন্ধকারে মিলিয়ে যেতে চলেছে? হয়ত সময়ই এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে পারবে।