বহু বিতর্কের পর Twitter বাদে Facebook, WhatsApp, Google মেনে নিল কেন্দ্রের নয়া IT Rules

বহু তর্কবিতর্ক, সমালোচনা, মতবিরোধ, এমনকি মামলা কোর্ট পর্যন্ত গড়ানোর পর অবশেষে কেন্দ্রের নয়া ডিজিটাল নীতি (New IT Rules 2021) মেনে নিল Facebook, WhatsApp, Google, Telegram সহ বেশিরভাগ প্রথম সারির সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি। সরকারি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, কেবলমাত্র Twitter-ই এখনও পর্যন্ত এই নয়া নীতিতে সম্মতি জানায়নি, আর তাই ইতিমধ্যেই ভারত সরকার এই মাইক্রোব্লগিং সাইটটিকে নতুন সামাজিক আইন মেনে চলার জন্য সতর্ক করে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

যারা জানেন না তাদের সংক্ষেপে বলে রাখি, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশ টানতে ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির পাশাপাশি OTT এবং ডিজিটাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য ডিজিটা‌ল কনটেন্ট সংক্রান্ত ইনফরমেশন টেকনোলজি (ইন্টারমিডিয়ারি গাইডলাইন্স অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) রুলস জারি করেছিল এবং সেগুলি মেনে নেওয়ার জন্য সংস্থাগুলিকে ৩ মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সেই সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও দুর্ভাগ্যবশত Facebook, Twitter, Google, WhatsApp সহ অধিকাংশ সংস্থার তরফ থেকেই কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাই ২৬ মে নতুন IT Rules কার্যকর হওয়ার পর থেকে একে একে প্রত্যেকটি প্ল্যাটফর্মকেই এই নয়া নিয়মাবলী মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

নতুন আইটি নিয়মে কী বলা হয়েছে?

-সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে ভারতের একজন চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে যিনি দরকারমতো সরকারি দাবি ও প্রয়োজনে দ্রুত সাড়া দেবেন।

-সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে অবশ্যই একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে, যিনি সরকারের প্রয়োজনের সময় চব্বিশ ঘন্টা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির (law enforcement agencies) সাথে সমন্বয় সাধন করবেন।

-সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলিকে অবশ্যই অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তা (grievance redressal officer) নিয়োগ করতে হবে। এই কর্মকর্তা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের অভিযোগগুলি পর্যালোচনা করবেন এবং প্রয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

ANI-এর একটি লেটেস্ট প্রতিবেদন অনুযায়ী, Twitter ছাড়া সমস্ত প্রধান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ইতিমধ্যেই নতুন নিয়ম মেনে একজন করে চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার (Chief Compliance Officer), নোডাল কন্ট্যাক্ট পার্সন (Nodal Contact Person) ও গ্রিভেন্স অফিসার (Grievance Officer) নিযুক্ত করেছে, এবং সেই তালিকা কেন্দ্রের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি Koo, Sharechat, Telegram, LinkedIn, Google, Facebook, WhatsApp সহ অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্ল্যাটফর্মগুলি নতুন নিয়মের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের কাছে তাদের যাবতীয় ডিটেলসও শেয়ার করেছে।

তবে টুইটারের এই নিয়ম না মানার বিষয়টির প্রসঙ্গে সরকারি সূত্রের তরফে জানানো হয়েছে যে, “Twitter এখনও এই নয়া নিয়মে সম্মতি দেয়নি। গতকাল গভীর রাতে সরকারের কাছ থেকে দৃঢ় নির্দেশিকা পাওয়ার পর Twitter সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছে, এবং তাদের নোডাল কন্ট্যাক্ট পার্সন ও গ্রিভেন্স অফিসার হিসেবে ভারতের একটি আইন সংস্থায় কর্মরত একজন আইনজীবীর বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছে। ভারত সরকারের নতুন ডিজিটাল নীতি বা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে খুব পরিষ্কারভাবেই বলে দেওয়া হয়েছে যে, প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকেই এই ধরনের ডেজ়িগনেটেড অফিসার নিয়োগ করতে হবে। তবে টুইটার এখনও চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসারের বিশদ বিবরণ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়নি।”

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন