আরও উন্নত হবে ইন্টারনেট ব্যবস্থা, সমুদ্রগর্ভে পৃথিবীর দীর্ঘতম কেবল লাইন পাতছে Facebook

এবার সমুদ্রগর্ভে কেবল (Cable) স্থাপনের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক বদল আনতে তৎপর ফেসবুক (Facebook)। এই উদ্দেশ্যে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা সম্প্রতি ‘2Africa Pearls’ প্রোজেক্ট শুরু করেছে, যার মূল লক্ষ্য ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের মধ্যে যোগাযোগকে আরও উন্নত করা। ফেসবুক গৃহীত এই প্রোজেক্ট সমুদ্রের নীচে প্রায় ৪৫,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ কেবল-সিস্টেম (Cable-System) স্থাপন করবে বলে জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে এটি সমুদ্র গভীরে অবস্থিত সবথেকে দীর্ঘতম কেবল-ব্যবস্থা হতে চলেছে।

শুরুতে অবশ্য ফেসবুকের পরিকল্পনা কিছুটা অন্যরকম ছিল। প্রথমে তারা ৩৭,০০০ কিলোমিটার লম্বা কেবল নির্মাণের মাধ্যমে আফ্রিকায় ইন্টারনেট ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানোর সংকল্প নেয়। পরবর্তীকালে তাদের এই ভাবনা বিস্তৃতি পায় যা আলোচ্য প্রোজেক্ট বাস্তবায়নে প্রভাব ফেলেছে।

ফেসবুকের প্রাথমিক ভাবনার ফলে সারা বিশ্বে প্রায় ১.২ বিলিয়ন মানুষ উন্নত যোগাযোগের আস্বাদ পেতেন। কিন্তু পরে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভবিষ্যতে অতিরিক্ত ১.৮ বিলিয়ন মানুষকে তারা উৎকৃষ্ট টেলিযোগাযোগের আওতায় আনতে পারবে। অর্থাৎ মোট (১.২+১.৮) =৩ বিলিয়ন মানুষ ফেসবুকের পরিকল্পনার ফলে উপকৃত হবেন যা গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৩৬ শতাংশ!

উল্লেখ্য, আলোচ্য ভাবনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে Facebook পৃথিবীর আলাদা আলাদা প্রান্তে একাধিক নতুন ল্যান্ডিং লোকেশন স্থাপন করতে চলেছে। এক্ষেত্রে তারা ওমান, সৌদি আরব, কাতার, বাহরিন, কুয়েত, ইরাক, পাকিস্তান ও ভারতের মতো দেশকে বেছে নিয়েছে।

ফেসবুকের 2Africa প্রোজেক্ট সফল হলে আফ্রিকার টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থায় দ্রুত উন্নতির পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের জনতাও উপকৃত হবেন। এর ফলে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মধ্যে যোগাযোগ আরো নিবিড় হবে। সেদিক দিয়ে মোট ৩৩টি দেশের মানুষ এর প্রত্যক্ষ সুফল উপভোগ করতে পারবেন।

বর্তমানে সমুদ্রের তলায় অবস্থিত সব থেকে দীর্ঘ কেবল (Cable) ‘SEA-ME-WE3’ বা ‘South East Asia – Middle East – Western Europe 3’ নামে পরিচিত। এটি প্রায় ৩৯,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ‌। ২০০০ সালে এই কেবল স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে এর ৩৯টি ল্যান্ডিং পয়েন্ট ছড়িয়ে রয়েছে।

গৃহীত প্রোজেক্টের ব্যাপারে বলতে গিয়ে Facebook কর্তৃপক্ষ আজকের দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যাপক উপযোগিতা ও প্রয়োজনের দিকটি মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বজুড়ে অতিমারির ফলে এই প্রয়োজন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়িতে থেকে কাজ, শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নত ইন্টারনেটের চাহিদা এখন তুঙ্গে। ‘2Africa Pearls’ জনগণের এই চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে বলেFacebook-র দাবী। এর ফলে অর্থনীতি, শিক্ষা সহ সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে যা অত্যন্ত আশ্বাসের কথা।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন