দেশীয় প্রযুক্তিতে এই প্রথম তৈরি হল দূষণহীন বাস, বিষাক্ত ধোঁয়া নয়, পাইপ দিয়ে শুধু জল নির্গত হবে

ভারতে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহারে নবজাগরণ আসতে চলেছে। অপ্রচলিত শক্তি আরও বেশি পরিমাণে ব্যবহার করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে দেশের প্রশাসন। হালে বিদ্যুতের পাশাপাশি ইথানল, মিথানল, হাইড্রোজেন, বায়ো ফুয়েলের ব্যবহার বৃদ্ধিতে দেশ ক্রমশ এগিয়ে চলেছে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানের আওতায় এবারে কাউন্সিল অফ সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চ বা সিএসআইআর (CSIR) দেশীয় প্রযুক্তিতে ভারতের প্রথম হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল পরিচালিত বাস তৈরি করে সমগ্র বিশ্বের মাঝে নজির স্থাপন করল। এ কাজে সিএসআইআর-কে সহযোগিতা করেছে বেসরকারি সংস্থা কেপিআইটি লিমিটেড (KPIT Ltd.)। মহারাষ্ট্রের পুণেতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং-এর উপস্থিতিতে হাইড্রোজেন জ্বালানি চালিত বাসটি উন্মোচিত হয়েছে।

ফুয়েল সেল শক্তির উৎস হিসেবে হাইড্রোজেন এবং বাতাস থেকে অক্সিজেন ব্যবহার করে। এদের বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন বিদ্যুৎ বাসটিকে চলতে শক্তি জোগাবে। বর্জ্য হিসাবে পাইপ দিয়ে নির্গত হবে শুধু জল। ফলে এতে পরিবেশ দূষণের কোনো বালাই নেই। তুলনা স্বরূপ একটি ডিজেল চালিত দূরপাল্লার বাস প্রতি বছর প্রায় ১০০ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে। এমন লক্ষ লক্ষ বাস এদেশের রাস্তায় রোজ চলছে।

বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির রাষ্ট্রায়ত্ত মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাইড্রোজেন লক্ষ্য ভারতের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধবে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠা নিশ্চিত করতে হবে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তন রোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি নতুন শিল্প গড়ে ওঠার সাথে কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তিনি মন্তব্য করেন, “গ্রীন হাইড্রোজেন (Green Hydrogen) একটি দুর্দান্ত পরিবেশবান্ধব জ্বালানি। যা পরিশোধন, সার, ইস্পাত, সিমেন্ট শিল্প এবং ভারী বাণিজ্যিক পরিবহণে কার্বন নির্গমন ঘটায় না।”

অন্য দিকে, একটি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ট্রাক, ডিজেল ট্রাকের উৎপাদনের চেয়ে কম ব্যায়বহুল। জিতেন্দ্র সিং বলেন, “পরিবেশের ১২ থেকে ১৪ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড ভারী যানবাহন থেকে নির্গত হয়। এক্ষেত্রে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল গাড়ির থেকে কোনো দূষণ সৃষ্টি হবে না।” তিনি আরও বলেন, ভারতের লক্ষ্য জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানিকারী থেকে পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন শক্তির রপ্তানিকারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা। যে কারণে হাইড্রোজেন জ্বালানির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে।