শিশুদের জন্য স্মার্টফোন ব্যান! দু’ঘন্টার বেশিক্ষণ ব্যবহার করা যাবে না, নয়া নিয়ম এই দেশের সরকারের

স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি থেকে শিশুদের দূরে রাখার জন্য চীন (China) সম্প্রতি এক কঠোর প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে

বর্তমানে স্মার্টফোনের (Smartphone) আসক্তি সারা বিশ্বে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শিশু এবং কিশোরদের মধ্যে এই সমস্যা প্রবল ভাবে দেখা যাচ্ছে। আর এই সমস্যার ফলে ঘুমের অভাব, লেখাপড়ায় অমনোযোগ এবং সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার মতন একাধিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চীন (China) সম্প্রতি এক কঠোর প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে। তারা আশা করছে যে, এই নিয়মের ফলে তারা কম বয়সী ছেলেমেয়েদের এই আসক্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে।

স্মার্টফোনের আসক্তি প্রতিরোধে চীনের পরিকল্পনা

চীনে বিভিন্ন বয়সের জন্য বিভিন্ন সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ৮ বছরের কম বয়সী শিশুরা সারাদিনে ৪০ মিনিট স্মার্টফোন দেখার অনুমতি পাবে। যেখানে ৮ থেকে ১৬ বছরের শিশুরা মাত্র এক ঘন্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে।

এছাড়াও, ১৬ থেকে ১৭ বছরের বাচ্চাদের জন্য প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে স্ক্রিন টাইম বরাদ্দ থাকবে। আর রাত দশটা থেকে সকাল ছয়টার মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো শিশু স্মার্টফোন বা এই ধরনের কোনো পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবে না।

অত্যধিক স্ক্রীন টাইম স্থূলতা, ঘুমের সমস্যা, মনোযোগের ঘাটতি, উচ্চ রক্তচাপ সহ বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই চীনের তৈরি করা এই ড্রাফ্ট রুলে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, স্মার্টফোনগুলি যেন এবার থেকে “মাইনর মোড” ফিচার সহ আসে।

মাইনর মোডটি ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য ব্যবহার করা হবে এবং হোমস্ক্রিন বা সিস্টেম সেটিংস থেকে সহজে খুঁজে পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

মাইনর মোড কি করবে?

রিপোর্ট অনুসারে, মাইনর মোড অভিভাবকদের তাদের বাচ্চারা কি করতে পারবে, বা কতক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে, কি দেখতে পারবে সেসব পরিচালনা করার অ্যাক্সেস দেবে। এমনকি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের বয়স উপযুক্ত কনটেন্ট দেখানোর নির্দেশও দেওয়া হবে।

বিভিন্ন বয়সের জন্য বিভিন্ন নিয়ম

চীনা নিয়ন্ত্রকরা ভিন্ন বয়সের জন্য বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট দেখানোর প্রস্তাব তৈরি করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, তিন বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের শুধুমাত্র গান এবং অডিও সামগ্রী শোনানো যেতে পারে। যাদের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে তারা শুধুমাত্র শিক্ষামূলক এবং সংবাদভিত্তিক কনটেন্ট দেখতে পারবে। এছাড়াও, চীন তাদের প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছে, যাতে তারা এমন পরিষেবা বা বিষয়বস্তু সরবরাহ না করে যেগুলি মানুষকে নেশাগ্রস্ত করে তোলে।

এই নিয়মগুলি চীনা তরুণদের মধ্যে স্মার্টফোনের আসক্তি প্রতিরোধে একটি সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে বাস্তবে তারা এই প্রস্তাবগুলি কতটা কার্যকর করতে পারবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।