1mg, NetMeds সহ সমস্ত ই-ফার্মেসি ব্যান করতে তৎপর সরকার, জেনে নিন কারণ

অনলাইনে অর্ডার করলে আর ঘরে বসে ওষুধ পাওয়া যাবে না, নতুন নিয়ম আনছে কেন্দ্র

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটের প্রাচুর্যতার কারণে কমবেশি সকল পরিষেবাই হয়ে গিয়েছে অনলাইন। এর ফলে ঘরে বসেই এখন যেমন ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়া যাচ্ছে, তেমনি অজস্র ই-ফার্মেসি কোম্পনির কল্যাণে বাড়িতে বসেই পাওয়া যাচ্ছে ওষুধ। আবার, ই-ফার্মেসি সাইটগুলি থেকে ওষুধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা পরিষেবাও মেলে। স্বভাবতই এর দরুন বাজারে এখন রমরমিয়ে চলছে Tata 1mg, Amazon, Flipkart-এর মতো বহু জনপ্রিয় কোম্পানি। তবে সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে পাওয়া খবর অনুযায়ী, খুব শীঘ্রই এইসব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হতে চলেছে; কারণ অদূর ভবিষ্যতে উক্ত ই-ফার্মেসিগুলি বন্ধ করে দিতে চলেছে মোদী সরকার।

অনলাইনে অর্ডার করলে আর ঘরে বসে ওষুধ পাওয়া যাবে না, নতুন নিয়ম আনছে কেন্দ্র

সংবাদ সংস্থা পিটিআই (PTI)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, টাটা ১এমজি (Tata 1mg), অ্যামাজন (Amazon), ফ্লিপকার্ট (Flipkart), নেটমেডস (NetMeds), মেডিবাডি (MediBuddy), প্রাক্টো (Practo) এবং অ্যাপোলো (Apollo) সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ই-ফার্মেসি অ্যাপকে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই শোকজ নোটিস ধরিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই (DCGI)। সেক্ষেত্রে এখন প্রশ্ন হল, ঠিক কী নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে কেন্দ্র আগামী দিনে এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে? রিপোর্ট অনুসারে, তথ্য গোপনীয়তা, অপব্যবহার এবং ওষুধের ভিত্তিহীন বিক্রয় নিয়ে উদ্বেগের কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ই-ফার্মেসিগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। জানা গেছে, অদূর ভবিষ্যতে ই-ফার্মেসি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে সরকার।

উপযুক্ত লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করা দণ্ডনীয় অপরাধ

ডিসিজিআই-এর নোটিশে বলা হয়েছে যে, দেশের আইন অনুযায়ী কোনো ওষুধ বিক্রি, মজুত করা, এবং সরবরাহ করার জন্য যথাযথ লাইসেন্স নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু উপরিউক্ত সংস্থাগুলির কাছে এরকম কোনো লাইসেন্স নেই। পাশাপাশি এও উল্লেখ করা হয়েছে যে, অনলাইনে যে সমস্ত ওষুধ বিক্রি হয়, তা চিকিৎসকের সঠিক প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অতি অনায়াসে কিনে ফেলতে পারেন ক্রেতারা। অর্থাৎ, অসংগঠিতভাবে কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ব্যবসা চালাচ্ছে এই ই-কমার্স সাইটগুলি। শুধু তাই নয়, লাইসেন্স ছাড়া মেডিক্যাল সরঞ্জামও বিক্রি করা হচ্ছে। তাই এই সকল কারণেই হালফিলে ই-ফার্মেসিগুলির ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুসারে, নিউ ড্রাগস, মেডিক্যাল ডিভাইস অ্যান্ড কসমেটিকস বিল, ২০২৩-এর সংশোধিত খসড়ায় (যা বর্তমানে আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনার মধ্যে রয়েছে) প্রস্তাবিত হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার অনলাইন পদ্ধতিতে কোনো ওষুধের বিক্রয় বা বিতরণ নিয়ন্ত্রণ, সীমাবদ্ধ বা নিষিদ্ধ করতে পারে। বলে রাখি, সংশোধিত খসড়া বিলটিতে ১৯৪০ সালের বিদ্যমান ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিকস অ্যাক্টকে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন বিল অনুযায়ী, কোনো ই-ফার্মেসি কোম্পানি চালানোর জন্য উপযুক্ত লাইসেন্স থাকা একান্ত আবশ্যক। মোদ্দা কথা হল, সরকার এখন অনলাইন ফার্মেসিগুলির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণের দিকে মনোনিবেশ করতে চায়। এছাড়া, অনলাইনে ওষুধ বিক্রিকে কেন্দ্র করে রোগীদের কাছ থেকে পাওয়া পার্সোনাল ডিটেইলসের কোনো অপব্যবহার যাতে সংস্থাগুলি না করতে পারে, সেদিকেও কড়া নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।