ডেটা চুরি বা লোকেশন ট্র্যাকিং নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার, কোটি টাকা জরিমানার সাথে হবে জেল

তৃতীয় বিশ্ব অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও ভারত ‘ডিজিটালি’ স্বাবলম্বী হওয়ার পথে খুবই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। যার দরুন দেশবাসীর মধ্যে যত বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, ততই অনলাইন জালিয়াতির মতো ঘটনা উত্তোরোত্তর বাড়তেই থাকছে। আর এমনটা হওয়ার অন্যতম কারণ হল, ইউজার ডেটা সুরক্ষিত রাখার কোনো কার্যকর আইন সংবিধানভুক্ত না করা। তাই টেক সংস্থাগুলিও অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে কনজিউমার ডেটা ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু এখন হয়তো এই ক্ষেত্রে বড়সড় একটা রদবদল দেখা যেতে পারে। কেননা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীর ব্যক্তিগত তথ্যাদির নিরাপত্তা বিষয়ে অধিক সতর্ক হয়ে উঠেছে। তাই একটি নতুন বিল পাশের কথা বর্তমানে ভাবা হচ্ছে, যার অধীনে ডেটা চুরি এবং অনলাইন ট্র্যাকিংয়ের জন্য দোষী প্রমাণিত সংস্থাগুলিকে ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং জেল খাটার শাস্তিও বিধান করা হতে পারে।

সংস্থা দ্বারা তথ্য চুরি এবং অনলাইন ট্র্যাকিং বন্ধ করতে নতুন নিয়ম আনার ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকারের

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার খুব শীঘ্রই ‘ডেটা প্রটেকশন বিল’ (Data Protection Bill) নামক একটি নয়া নিয়ম নিয়ে আসার ঘোষণা করেছে, যেটিকে সম্ভবত সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে উত্থাপিত করা হবে। এই বিষয়ে ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর দাবি করেছেন যে – “এই নতুন বিলটি গ্রাহকদের ব্যক্তিগত ডেটার অপব্যবহার রোধে কার্যকর প্রমাণিত হবে।” কারণ নতুন নিয়মে ডেটা অপব্যবহারের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা আগের ডেটা সুরক্ষা বিলে ছিল না।

নতুন বিলে – ডেটা চুরি এবং অনলাইন ট্র্যাকিংয়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত সংস্থাগুলিকে ২০০ কোটি টাকা জরিমানা এবং বেশ কয়েক বছরের জন্য জেল খাটার সাজা দেওয়া হতে পারে। ঠিক যেমন আমেরিকায় তদন্ত চলাকালীন, “ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করে তাদের ডেটা ট্র্যাক করা হতো” – গুগলের এই স্বীয় স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সংস্থাটিকে প্রায় ৩৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা দিতে বলা হয়েছিল।

গুগল ইউজারদের ডেটা অনলাইন ট্র্যাকিং জন্য অভিযুক্ত হয়েছিল Google

টেক জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, সংস্থাটি টার্গেটেড বা লক্ষ্যযুক্ত বিজ্ঞাপনের জন্য ইউজারদের ডেটা ট্র্যাক করছে। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকায় তদন্ত শুরু করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, লোকেশন ট্র্যাকিং ডেটা হল সবচেয়ে সংবেদনশীল, যার অপব্যবহার করা হয়েছে গুগল দ্বারা। যদিও গুগলের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সীমিত পরিমাণ লোকেশন ট্র্যাকিং ডেটা শেয়ার করছে তারা। তবে যে পরিমাণই ডেটা চুরি করা হোক না কেন, তা আইন বিরোধী। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন যে – লোকেশন ট্র্যাকিং অনুশীলন সম্পর্কে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে প্রায় ২০১৪ সাল থেকে রাষ্ট্রীয় ভোক্তা সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন করছে গুগল। আর তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ার দরুন সংস্থাটিকে উল্লেখিত পরিমান জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।