Used Car Purchase: সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার আগে এই সাতটি কাগজ অবশ্যই চেয়ে নেবেন, পরে পস্তাবেন নাহলে

নতুন গাড়ি কিনলে তার নথিপত্র গুছিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। যাতে পুলিশি বা অন্যান্য আইনি ঝুটঝামেলায় না পড়তে হয়। আবার সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার আগেই সেই একই শর্ত। তবে মালিকের থেকে সব কাগজপত্র নাও পেতে পারেন। ফলে প্রতারিত হওয়ার ভয় থেকেই যায়। তাহলে উপায় কী? এই প্রতিবেদনে সাতটি ডকুমেন্টের ব্যাপারে তথ্য রইল, যা হাতফেরতা গাড়ি ক্রয়ের পূর্বে যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট

এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আরসি (RC) বুক হল গাড়ির একটি অতি প্রয়োজনীয় কাগজ। বলা ভালো এটি গাড়ির ও তার মালিকের পরিচয় পত্র। এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখে বোঝা যাবে এই গাড়িটি ও তার মালিক প্রকৃতপক্ষে সঠিক কিনা। অবশ্য এই ব্যাপারে আরও একটি সাবধানতা অবলম্বন করার প্রয়োজন। অসাধু গাড়ির মালিক কিন্তু এই RC বুকে কোনো কারসাজি করে রাখতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে সাবধানতার সঙ্গে সতর্কভাবে এটির সত্যতা যাচাই করতে হবে।

গাড়ি কেনার কাগজপত্র বা ইনভয়েস

শোরুম থেকে কেনার সময় সেই গাড়ির সঙ্গে সমস্ত তথ্যসমৃদ্ধ একটি চালান বা ইনভয়েস দেওয়া হয়। এর মধ্যে গাড়ি কেনার তারিখ, ইঞ্জিন ও চ্যাসিস নম্বরসহ আরো বেশ কিছু তথ্য দেওয়া থাকে। তাই এর সাহায্যে সহজেই কোন গোলমাল আপনি আন্দাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে গাড়ি কেনার চালান ছাড়া কোন সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।

ইন্সুরেন্স পেপার

মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট অনুযায়ী সমস্ত গাড়ির ক্ষেত্রেই বিমা করা বাধ্যতামূলক। এই ইন্সুরেন্স পেপার সঠিকভাবে পুনর্নবীকরন করা আছে কিনা সেটি দেখে নেবেন। এছাড়াও কোনও গাড়ি পূর্বে অ্যাক্সিডেন্টের সম্মুখীন হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য ইন্সুরেন্স পেপার এর মধ্যে দেওয়া থাকে।

সার্ভিস বুক

সার্ভিস বুকে দেওয়া তথ্য অনুসারে আপনি গাড়ি সার্ভিসিংয়ের ইতাহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন। গাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্ভিসিং কত দিন অন্তর করা হয়েছে তার সঠিক রেকর্ড থাকে এই বইয়ের ভিতরে। তাছাড়াও গাড়ির ওডোমিটারে থাকা রিডিং দেখে সেই গাড়ির ইঞ্জিনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও আন্দাজ করা যায়। তাই কোন পুরনো গাড়ি নেওয়ার আগে শেষ রিপেয়ারিং কবে হয়েছে তা সার্ভিস বুক থেকে ভালোভাবে দেখে নিন।

রোড ট্যাক্স চালান

যে কোনো গাড়ির প্রথম ক্রেতা সরকারের নিয়ম অনুসারে সেই গাড়ির রোড ট্যাক্সের টাকা দিয়ে থাকেন। ওয়ান টাইম ট্যাক্স হওয়ার দরুন সেকেন্ড হ্যান্ড ক্রেতাকে সেই গাড়ির রোড ট্যাক্স পুনরায় দেওয়ার কোনো প্রয়োজন হয় না। তাই রোড ট্যাক্সের কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই করে নিন নয়তো সেই খরচ আপনাকেই বহন করতে হতে পারে।

নো অবজেকশন সার্টিফিকেট

এটা আমরা সবাই জানি যে সিংহভাগ ক্রেতা মাসিক কিস্তিতেই তাদের সাধের চারচাকা ঘরে আনেন। ধার করা এই অংক শোধ হয়ে গেলে তবেই ঋণপ্রদানকারী ব্যাংক থেকে NOC বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। তাই আপনি সেকেন্ড হ্যান্ড যে গাড়িটা কিনতে চলেছেন তার NOC আছে কিনা তা ভালো করে দেখে নেবেন। নয়তো গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে নাম পরিবর্তনের পর আপনাকেই কিন্তু সেই গাড়ির বাকি ঋণের বোঝা বহন করতে হবে।

পলিউশন সার্টিফিকেট

PUC বা পলিউশন সার্টিফিকেট হলো গাড়ির আরও একটি প্রয়োজনীয় কাগজ। পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচার লক্ষ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত সমস্ত যানবাহনকেই একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সরকার নির্ধারিত কেন্দ্র থেকে ধোঁয়া পরীক্ষা করাতে হয়। পলিউশন সার্টিফিকেট সময়মতো পুনর্নবীকরণ না করলে ট্রাফিক আইন মোতাবেক তা দণ্ডনীয় অপরাধ এবং তার জন্য গাড়ির মালিককে জরিমানা করা হয়। তাছাড়াও যে সমস্ত গাড়ির ইঞ্জিন পরিবেশের পক্ষে ভাল নয় তাদেরকে পলিউশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না।

তাহলে আর চিন্তা কিসের? উপরিউক্ত কাগজ গুলি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার আগে ভালোভাবে যাচাই করে নিলেই আপনাকে ভবিষ্যতে কোনও ঝামেলা পোহাতে হবে না।