চাঁদে ফের মহাকাশচারী পাঠাতে আজ উড়ে যাচ্ছে NASA-র আর্টেমিস ১

আমেরিকা ভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ ওরফে নাসা (NASA) দীর্ঘ ৫০ বছর পরে আবারো চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। আর এই পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দানের জন্য প্রথম ধাপ পূরণ করতে বেছে নেওয়া হয়েছে আজকের তারিখকে (১৬ই নভেম্বর)। আজ্ঞে হ্যাঁ! আজই আর্টেমিস ১ (Artemis 1) নামক একটি যাত্রীবিহীন মহাকাশযান পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবে বলে আগাম জানিয়েছিল উক্ত মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। প্রসঙ্গত, অতীতে তিনবার আর্টেমিস ১ মিশনটি সাফল্যমন্ডিত করার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু প্রথম দু’বার ইঞ্জিনে সমস্যার কারণে এবং তৃতীয় বার হ্যারিকেন ঝড়ের কারণে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ বাতিল করা হয়েছিল। চলুন আর্টেমিস মিশনের উদ্দেশ্যে এবং কীভাবে এই লঞ্চের লাইভ স্ট্রিমিং দেখা যাবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক…

কখন এবং কোথায় দেখা যাবে আর্টেমিস ১ লঞ্চ? (When and where to watch Artemis 1 Launch?)

আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো ভাবছেন কীভাবে আর্টেমিস ১ মহাকাশযানের লঞ্চ হওয়ার লাইভ স্ট্রিমিং দেখতে পারবেন। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, এই লঞ্চ আপনারা সরাসরি নাসা (NASA) -এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে থাকা মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম – NASA টেলিভিশন এবং NASA অ্যাপ থেকে দেখতে পারবেন। পাশাপাশি, উক্ত এজেন্সির টুইটার (Twitter), ফেসবুক (Facebook), লিংকডইন (LinkedIn) -এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলিতেও লাইভ-স্ট্রিম করা হবে। এছাড়া ইউটিউবেও লাইভ টেলিকাস্ট করা হবে, যার লিংক নিচে দেওয়া হল :

আর্টেমিস মিশন কি? (what is Artemis mission?)

নাসা তাদের পরিকল্পিত আর্টেমিস মিশনের মাধ্যমে ২০২৫ সালের প্রথম দিকে চাঁদে প্রথম মহিলা তথা মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য রাখছে। এক্ষেত্রে সংস্থাটি এই বার চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য এই মিশনকে মোট তিনটি ধাপে বিভক্ত করেছে। যার প্রথম ধাপ ‘আর্টেমিস ১’। এটি হল যাত্রিবিহীন মহাকাশযান পাঠানোর একটি অভিযান। যার মূল উদ্দেশ্যে হল, চাঁদের মাটিতে নামার জন্য সম্ভাব্য ‘ল্যান্ডিং সাইট’ গুলি চিহ্নিত করা। প্রায় অনুরূপ একটি পরীক্ষা দ্বিতীয় ধাপেও হবে। এই দুটি মিশন সফল হলে পরবর্তী অভিযানে চাঁদের মাটিতে পা রাখার লক্ষে পাড়ি দেবে মানুষ।

এই বিষয়ে নাসার বক্তব্য, “আমরা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, অর্থনৈতিক সুবিধা এবং অনুপ্রেরণার জন্য চাঁদের মাটিতে পুনরায় ফিরে যাচ্ছি… আর এর জন্য আমরা বাণিজ্যিক এবং আন্তর্জাতিক পার্টনারদের সাথে হাত মেলাবো এবং চাঁদে প্রথম দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা পরিকাঠামো স্থাপন করব।”

প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালে ‘অ্যাপোলো-১১’ মিশনে প্রথম চাঁদে পা রেখেছিলেন নাসার মহাকাশচারী নিল আর্মস্ট্রং ও এডুইন অলড্রিন। ১৯৭২ সালের ৭ই থেকে ১৯শে ডিসেম্বরের মধ্যে নাসার ‘অ্যাপোলো-১৭’ মহাকাশচারী জেন সারনানকে নিয়ে নেমেছিল চাঁদে। সেই ঘটনার প্রায় অর্ধশতক পূর্তিতে আবারো চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে নাসা। এই বিষয়ে রয়্যাল মিউজিয়াম গ্রিনউইচের মত, “নাসার মনুষ্যবাহী চাঁদ মিশন এতদিন বন্ধ থাকার পেছনের কারণ হল বিশাল আর্থিক ব্যয়”।