অনলাইনে আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন

ভারতের প্রতিটি নাগরিকের কাছে আধার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের গুরুত্ব আলাদা করে বলে দিতে হয় না। এদেশে বেশিরভাগ টু-হুইলার বা অন্যান্য গাড়ি চালানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন। আবার রেশন কার্ডের মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে রেশন নেওয়া যায়। অন্যদিকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য এবং অন্যান্য সরকারি সুযোগ -সুবিধার লাভ ওঠানোর জন্য আমরা প্যান কার্ড ও আধার কার্ড ব্যবহার করি। সর্বোপরি, দেশের সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় ভোটার কার্ডের মাধ্যমে নিজের মতদান করা যায়। তাই আপনি যদি এখনো উল্লেখিত নথিগুলি তৈরি না করে থাকেন, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবেদন করুন। আজ আমরা এই প্রতিবেদনে জানাবো কীভাবে অনলাইনে আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে।

আধার কার্ডের জন্য এই ভাবে করুন আবেদন

১. আপনার নিকটবর্তী আধার এনরোলমেন্ট সেন্টারের অবস্থান জানতে প্রথমে ভিজিট করুন এই ওয়েবসাইটে

২. পেজে গিয়ে এবার এনরোলমেন্ট সেন্টারে আপনার অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন। আপনি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট– এর মাধ্যমেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারেন। এছাড়া, আপনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক না করেও সরাসরি এনরোলমেন্ট কেন্দ্রে চলে যেতে পারেন।

৩. সেন্টারে যাওয়ার সময়ে, ভোটার কার্ড, ঠিকানার প্রমাণ পত্র এবং বার্থ সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য ডকুমেন্টগুলি অবশ্যই আপনার সাথে রাখুন।

৪. এবার সেন্টারে গিয়ে আপনার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাদি দিয়ে এনরোলমেন্ট ফর্মটি ফিল আপ করুন এবং উল্লিখিত ডকুমেন্ট সহ ফর্মটি জমা দিন।

৫. সব ডকুমেন্ট জমা দেওয়া হয়ে গেলে, আপনার বায়োমেট্রিক ডেটা স্ক্যান করা হবে।

৬. এবার আপনাকে এনরোলমেন্ট স্লিপ দেওয়া হবে। এতে থাকা ১৪ সংখ্যার এনরোলমেন্ট নম্বর দিয়ে আপনি আধার কার্ডের স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।

৭. ভ্যারিফিকেশন হয়ে গেলে, আধার কার্ড পোস্টের মাধ্যমে আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। মনে রাখবেন, আধার কার্ড হাতে পেতে ৯০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

রেশন কার্ডের জন্য এই ভাবে করুন আবেদন

রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করার আগে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন –
১. রেশন কার্ডের জন্য দরখাস্ত করার প্রথম শর্ত হলো, আবেদনকারীর ভারতীয় নাগরিক হওয়া বাধ্যতামূলক।

২. আপনার হয়ে, পরিচিত কেউ বা পরিবারের কোনো সদস্য আগে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছে কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন।

রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করতে এই পদ্ধতির অনুসরণ করুন –

ভারতের প্রতিটি রাজ্যে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া ভিন্ন। কোনো রাজ্যে শুধুমাত্র অফলাইনে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়, তো কিছু রাজ্য অনলাইনে আবেদন করার সুবিধাও দেয়। সেক্ষেত্রে, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন :

১. প্রথমেই, রাজ্য সরকারের ‘ফুড অ্যান্ড সাপ্লাইস’ ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে চলে যান এবং সেখান থেকে আবেদনের ফর্ম ডাউনলোড করে নিন।

২. এরপর, ফর্মেটিকে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। আর আপনার এলাকার রেশন ডিলারের কাছে বা খাদ্য বিভাগ (ফুড ডিপার্টমেন্ট) -এর অফিসে ফর্মটি জমা দিয়ে দিন।

এছাড়াও, রেশন কর্ডের আবেদনের জন্য, তহসিলে এই কাজের সাথে সম্পর্কিত কর্মকর্তার সাথেও যোগাযোগ করা যেতে পারে। আপনি চাইলে কমন সার্ভিস সেন্টারেও রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে, রেশন কার্ডের ফর্ম হস্তান্তরের পর স্লিপটি নিতে ভুলবেন না।

ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য এই ভাবে করুন আবেদন :

ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে চাইলে, তা ঘরে বসেই করতে পারবেন। এর জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

১. ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে প্রথমেই আপনাকে, এই ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে এবং সেখান থেকে ফর্ম ডাউনলোড করে সেটিকে প্রিন্ট করতে হবে।

২. পেজে, ‘অ্যাপ্লাই অনলাইন’ DL অপশনে ক্লিক করুন। এবার একটি ফর্ম দেখা যাবে স্ক্রিনে, এটিকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে ফিল আপ করুন।

৩. সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিন।

৪. এবার ড্রাইভিং টেস্ট দেওয়ার জন্য একটি স্লট বুক করুন।

৫. একবার ড্রাইভিং টেস্ট পাশ করে গেলেই আপনার লাইসেন্স ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

ভোটার কার্ড তৈরির জন্য এই ভাবে করুন আবেদন :

ভোটার আইডি কার্ড বানানোর আগে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন –

১. আপনাকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।

২. আপনার বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।

এই শর্তগুলো পূরণ করলে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।

১. রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রথমেই, ওয়েবসাইটে চলে যান।

২. জেনারেল ভোটারদের ফর্ম নম্বর ‘6’ পূরণ করতে হবে। এই ফর্মটি, যারা প্রথমবার ভোট দেবেন এবং যারা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত হচ্ছেন তাদের জন্য।

৩. এনআরআই (Non-resident Indian) ভোটারদের ফর্ম নম্বর ‘6A’ পূরণ করতে হবে।

৪. নাম, ছবি, বয়স, এপিক সংখ্যা, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, আত্মীয়ের নাম, আত্মীয়ের সঙ্গে সম্পর্কের ধরন, লিঙ্গ -এই তথ্যগুলিকে পরিবর্তনের জন্য আপনাদের ফর্ম নম্বর ‘8’ পূরণ করতে হবে।

৫. আর, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ঠিকানা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে, ফর্ম নম্বর ‘8A’ পূরণ করতে হবে।