পুরনো ফোন দেহ রাখছে? নতুন স্মার্টফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন

স্মার্টফোন কিনবেন কিন্তু কোন ফোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত হবে, তা বুঝতে পারছেন না? এই নিবন্ধে আপনার জন্য রইল তারই হদিস।

Smartphone Buying Tips Things To Do Before Buying A New Mobile Phone

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার, এবং এটি এখনও বার্ষিক প্রায় ৩০% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ৫,০০০ টাকা থেকে লক্ষ টাকার প্রাইস পয়েন্টেও স্মার্টফোন বাজারে উপলব্ধ। তাই হাজারো বিকল্পের মধ্যে কোন ফোনটা বেছে নেবেন, তাই নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অনেকসময়ই ধন্ধ থাকে। তাই উপযুক্ত স্মার্টফোনের সন্ধানে রয়েছেন, এমন ক্রেতাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্যে করার জন্য এই নিবন্ধে বিবেচ্য বিষয়গুলির ওপর কয়েকটি সহজ টিপস রয়েছে। চলুন এগুলি দেখে নেওয়া যাক।

ব্যাটারি:

আপনি কি সেরকম ইউজার যার একাধিক অ্যাপ একসাথে খোলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে? আপনি কি ফোনে বেশিরভাগ সময় ভিডিও-স্ট্রিমিং অ্যাপস বা গেম খেলে থাকেন? বেশিক্ষণ অনলাইন ব্যবহার ব্যাটারি দ্রুত নিষ্কাশন করতে থাকে। আপনি যদি এরকম ইউজার হন তবে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি যুক্ত ফোন বেছে নেওয়াই ভালো।

মেমরি:

ফোনে দুই ধরনের মেমরি থাকে – র‍্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরি বা র‍্যাম এবং রিড অনলি মেমরি বা রম। র‍্যাম ফোনের প্রসেসরের সাথে, ফোনের গতি এবং এর পরিচালনার সহজতা নির্ধারণ করে। রম-কে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্টোরেজ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি সেই মেমরি যা ওএস, অ্যাপস এবং সমস্ত ভিডিও, ফটো এবং গান, যা আপনি ফোনে সেভ করতে চান তা সেভ করতে ব্যবহৃত হয়।

অতএব, এটি যুক্তিযুক্ত যে উচ্চ র‌্যামযুক্ত ফোনগুলি দ্রুততর হবে এবং উচ্চতর রমযুক্ত ফোনগুলির স্টোরেজ বেশি হবে। কোনও সাধারণ ব্যবহারকারীর ২ জিবি র‌্যাম এবং ১৬ জিবি রম নিয়ে খুশি হওয়া উচিত। কিন্তু আপনি যদি একজন হেভি ইউজার হন, তাহলে অন্তত ৩ থেকে ৪ জিবি র‌্যাম এবং ৬৪ জিবি রম সহ একটি ফোন বেছে নেওয়া উচিত৷ ফোনে রম প্রসারিত করার জন্য আপনি একটি মাইক্রো এসডি মেমরি কার্ডও ব্যবহার করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, মেমরি কার্ড থেকে সেভ করা এবং রানিং অ্যাপগুলি ধীর হয়ে থাকে।

ক্যামেরা:

ব্র্যান্ডগুলি তাদের স্মার্টফোনে বেশি মেগাপিক্সেল অফার করে একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফোনে ইন-বিল্ট ক্যামেরাগুলিকে ঘিরে প্রচুর হাইপ রয়েছে। তবে রেজোলিউশনই সব নয়। বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার ফলে ভালো ছবি পাওয়া যায় না। মেগাপিক্সেল ছাড়াও, ভাল মানের ফটোগুলি আইএসও লেভেল, অ্যাপারচার এবং অটোফোকাসের স্পিডের মতো বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যদি আপনার অনেক ছবি তোলার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে কম আলোতেও ভালো ফলাফলের জন্য ১২ বা ১৬ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার সাথে এফ/২.০ বা তার চেয়ে কম অ্যাপারচারযুক্ত ফোন বেছে নেওয়া ভালো৷ যদি আপনার ক্যামেরার ব্যবহার বেশি না হয়, তাহলে ৮ থেকে ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা এবং এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ একটি ফোন আপনার জন্য ভালো হবে।

প্রসেসর:

অনেকটা স্মার্টফোন ক্যামেরার মতো, কোয়াডকোর, অক্টা কোর, স্ন্যাপড্রাগন, মিডিয়াটেক এবং আরও অনেক কিছুর সাথে প্রসেসর নিয়েও যথেষ্ট হাইপ রয়েছে। প্রসেসরের ক্ষমতা বিচার করার জন্য প্রসেসিংয়ের গতি দেখা প্রয়োজন, যা গিগাহার্টজের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ করা হয়। গতি যত বেশি হবে প্রসেসর তত দ্রুত। কোনও ইউজারের যদি প্রচুর ফটো/ভিডিও এডিটিং করার প্রয়োজন হয়, বা তিনি অনলাইন গেম খেলা এবং ভিডিও স্ট্রিম করেন, তাহলে তার একটি দ্রুততর প্রসেসর যুক্ত ফোন বেছে নেওয়া উচিত।

ডিসপ্লে:

একটি ৫.৫- ৬ ইঞ্চির এইচডি বা কিউএইচডি ডিসপ্লে সহ একটি ফোন সাধারণত একটি আদর্শ বিকল্প। এটিকে আপনার পকেটে বা পার্সে বহন করা সহজ হওয়ার সাথে সাথে একটি সমৃদ্ধ মিডিয়া এক্সপেরিয়েন্স উপভোগ করার অনুমতি দেবে।

অপারেটিং সিস্টেম:

বেছে নেওয়ার জন্য শুধুমাত্র দুটি অপারেটিং সিস্টেম আছে – অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস। কেউ যদি আইওএস বেছে নেন, তাহলে তিনি নির্দিষ্টভাবে একটি অ্যাপল আইফোন বেছে নিচ্ছেন। অন্যান্য সমস্ত স্মার্টফোন নির্মাতা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করে। তবে এগুলির নাম এবং সংস্করণগুলি ক্রেতাদের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। প্রায়শই অ্যান্ড্রয়েড ওএসকে নির্মাতারা পরিবর্তন করে এমন ফিচার যোগ করে, যার ফলে ব্লোটওয়্যারও হতে পারে। এর কারণে ফোনের গতি কমে যায়। সুতরাং, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ফোনটি ব্যবহার করে দেখা প্রয়োজন।